কম্পিউটার জগতে নতুন মাত্রা

“এক ট্রিলিয়ন কম্পিউটেশনাল অপারেশন এক সেকেন্ডে করতে পারে ” – লাইনটি শুনার পরপরই আপনি যে ভেবে নিবেন এটা সুপার কম্পিউটার ছাড়া আর কিছু না তা নিশ্চিত ভাবে বলা যায়।
মে মাসের শেষ সপ্তাহে Intel প্রেস কনফারেন্স এ জানায় যে, ১৮ টি কোর ও ১ টেরা-ফ্লপ বিশিষ্ট Intel core i9 extreme ও X-series বের করা হবে। কোনও সন্দেহ নেই যে , নতুন এ প্রসেসরটি কম্পিউটার জগতে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে। সাধারণ প্রসেসর এর মতোই হবে এর আকার। তবে ২০০০ ডলার দামে এটি মার্কেটে ছাড়া হবে। বড় কোনও সিমুলেশন অথবা 4k Gaming ও Streaming একই সাথে করার ক্ষমতা রাখে নতুন এই প্রসেসর।


এখন আসা যাক টেরা-ফ্লপ ব্যাপারটাতে।

টেরা-ফ্লপ বুঝার আগে বুঝতে হবে FLOPS দ্বারা কি বুঝায়। FLOPS এর পুরো মিনিং হলও Floating-point operation per second. অর্থাৎ এক ফ্লপ বলতে বুঝায়, কম্পিউটার দুইটি ডেসিমাল মান নিবে এবং তা যোগ বা গুন করবে । প্রতি সেকেন্ডে এরকম একটি ম্যাথ করা হলও ১ ফ্লপ। তাহলে টেরা-ফ্লপ বিশিষ্ট প্রসেসর এক সেকেন্ডে ১০০০০০০০০০০০০ টি ম্যাথ মেটিক্যাল অপারেশন করতে পারবে।

সুপার কম্পিউটার জগতে কম্পিউটার এর ক্ষমতা পরিমাপের একক হলও ফ্লপ।

 

১৯৭৬ সালে Cray-1 এ ছিলও মাত্র ১৬০ মেগা-ফ্লপ। বর্তমানে এই পরিমাপের একক হলও পেটা ফ্লপ(১ হাজার টেরা-ফ্লপ)। ১০ পেটা-ফ্লপ বিশিষ্ট একটি সুপার কম্পিউটার হলও “Mira”. অর্থাৎ এই প্রসেসর এ আপনি পাবেন একটি সুপার কম্পিউটার এর ১ হাজার ভাগের এক ভাগ কাজ করার ক্ষমতা। শুনতে কম মনে হলেও 4K ভিডিও এডিটিং, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, বড় বড় প্রজেক্ট সিমুলেটিং খুব সহজে করা সম্ভব হবে।

                

যদি কোর এর কথায় আসি তবে ইন্টেল এর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে AMD এর ১৬ কোর বিশিষ্ট “Threadripper” আছে। তবে প্রসেসর এর ক্ষমতার দিক দিয়ে ইন্টেল অনেক ধাপ এগিয়ে আছে। কোরের ব্যাপারটা হলও, আপনার প্রসেসর যত বেশি কোর থাকবে ততগুলো ভিন্ন রকমের কাজ একই সাথে করতে পারবেন। অর্থাৎ ১৮ রকমের কাজ একই সাথে আপনি করতে পারবেন নতুন এই প্রসেসর এর সাহায্যে। কিন্তু কোর এর দিক দিয়েও Intel এনেছে নতুন প্রযুক্তি “hyper-threading”. এই প্রযুক্তির মাধ্যমে একটি কোর দুইটি ভিন্ন কাজ করতে পারবে। অর্থাৎ নতুন এই চিপ সব মিলিয়ে ৩২ রকমের সম্পূর্ণ ভিন্ন ভিন্ন কাজ একই সাথে করতে পারবে।
আমাদের কেনো এই ধরনের প্রসেসর প্রয়োজন? উত্তরে Intel জানিয়েছে, “অনেক বড় বড় ম্যাথ মেটিক্যাল টার্ম আছে যেমন জটিল সংখ্যা আবার অনেক সিমুলেশন রয়েছে যেমন ধরুন দুটি প্রোটিন এর একটির সাথে আরেকটির সংযুক্ত হয়ে নতুন প্রোটিন তৈরি এসব কাজ কেবল সুপার কম্পিউটারই করতে পারে। আমরা চাচ্ছি এই ধরনের কাজ সকল আগ্রহীদের জন্য সহজ করা, যেন সুপার কম্পিউটার না থাকলেও তারা পিছিয়ে না পরে। “

Comments are closed.