মিশরে পাওয়া গেল সম্পূর্ণ সংরক্ষিত অবস্থায় থাকা মমি যেগুলো প্রায় ২৫০০ বছরের পুরোনো!

মিশর নিয়ে আমাদের কৌতূহলের কোনো শেষ নেই। যদি বিশেষভাবে বলা হয় তবে পিরামিড এবং মমি হাজার হাজার বছর ধরে মানব মন কে চরমভাবে বিস্মিত করে রেখেছে। প্রতিনিয়তই হচ্ছে নতুন নতুন আবিষ্কার এবং আরো অনেক কিছুই এখনও হয়ত লুকিয়ে রয়েছে যা সময়ের পর্দা ফুড়ে আমাদেরকে অবাক করতে বেরিয়ে আসবে। বিগত সপ্তাহেই মিশরের প্রত্নতাত্ত্বিকরা সেই হিসাব কষেই আবিষ্কার করে ফেললেন ৫৯ টি সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় থাকা মমি যা প্রায় ২৫০০ বছর পুরোনো!

মজার ব্যাপার হচ্ছে সবগুলো মমিই দর্শকদের সামনে সরাসরি টেলিকাস্টের মাধ্যমে উন্মোচন করা হয়। এর আগে পরীক্ষামূলক ভাবে একটি মমির বন্ধ থাকা দরজা খোলা হয় এবং বিজ্ঞানীরা দেখতে পান মমির দেহে থাকা কাপড় এখনও উজ্জ্বল অবস্থায় আছে এবং সেগুলোতে হায়রোগ্লিফিক বর্ণে বিভিন্ন জিনিস খচিত। এই অবিস্মরণীয় আবিষ্কারের জায়গাটি হচ্ছে মিশরের দক্ষিণ কায়রোর সাকারা অঞ্চলে। প্রাচীন মিশরের রাজধানী মেমফিস এর অন্যতম শহর ছিল এটি। আবার ইউনেস্কোর গুরুত্বপূর্ণ হেরিটেজ সাইটও বটে। মিশরের প্রত্নতত্ত্ব ও পুরাকীর্তি কাউন্সিল আনন্দ প্রকাশ করেছে এমন আবিষ্কারের সংবাদে। তিন সপ্তাহ আগেই প্রথম ১৩ টি কফিন পাওয়া গিয়েছিল। যে প্রকোষ্ঠে পাওয়া গিয়েছে , আরো ১২ মিটার গভীরে খনন করে যেতেই বর্তমানের মমি গুলোর সন্ধান পান প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। এখনও ধারণা করা হচ্ছে অসংখ্য কফিন এখানে সমাহিত করা আছে। কাছেই রয়েছে ৪৭০০ বছরের পুরোনো পিরামিড “জোসার”। পুরাকীর্তি বিষয়ক মন্ত্রী জানান এই আবিষ্কারের মাত্র সবে শুরু!

বর্তমানে পাওয়া কফিন গুলো পরীক্ষা করে দেখা তা ২৫০০ বছরের পুরোনো এবং কাঠের তৈরি। প্রাচীন মিশরের শেষ শতাব্দীতে এগুলো সমাহিত করা হয় সাকারায়। মজার ব্যাপার হলো এখানে আরো বহুবিধ প্রাণি তথা সাপ, ব্যাঙ ইত্যাদির মমি করা দেহও পাওয়া গিয়েছে খননের সাথে। তাছাড়াও এই খনন সাইট থেকে পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের মূর্তি যাদেরকে প্রাচীন মিশরীয়রা দেবতা হিসেবে পূজো করত। প্রাথমিক পরীক্ষা ও ধারণ থেকে বুঝা যায় প্রাপ্ত মমি গুলো প্রাচীন মিশরের পুরোহিত, শহরের সম্মানীয় প্রতিনিধগণের যারা ছাব্বিশতম ডাইনেস্টির অন্তর্ভূক্ত। সবগুলো কফিন শীঘ্রই গিজার গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়ামে নেয়া হবে। সেখানে থাকবে আরো ৩২ টি মমি যা গতবছর মিশরের দক্ষিণের একটি শহর থেকে উত্তোলন করা হয়। সেগুলো ছিল বাইশতম ডাইনেস্টির।

গ্রান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম ২০২১ সালের দিকে খুলে দেয়ার কথা ভাবছে সরকার। এখানে থাকবে প্রাচীন মিশরের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিল্পকর্ম, স্থাপনা, মমি এবং অনেক কিছু। মিশরের প্রত্নতত্ত্ববিদরা আশা করছেন ভবিষ্যতে আরো বহুবিধ প্রাচীন নিদর্শন আবিষ্কার করতে তারা সক্ষম হবেন এবং মানবজাতি হয়ত ধীরে ধীরে জানতে পারবে বিভিন্ন রহস্য সম্পর্কে। আজকের বর্তমান ভবিষ্যতের রহস্যময় ইতিহাস। সবসময়ই মানুষ ইতিহাসের বেড়াজালে আবদ্ধ থাকবে। কখনো বিস্ময় রূপে কখনো বা কূল কিনারা ছাড়া।

তথ্যসূত্রঃ sciencealert.com

Comments are closed.