ইলেকট্রিক কারের আদ্যোপান্ত

রাস্তায় নামলেই নানা ধরণের নানা রকমের গাড়ী দেখতে পাই, বর্তমানে গাড়ীর সংখ্যা এতই বেড়ে গেছে যে বাসা থেকে বের হলেই জ্যামের মুখে পড়তে হবেই।

ঢাকা শহরে গাড়ীর সংখ্যা এত বেশী যে জ্যামের কারণেই বছরে বিশাল একটা অংকের টাকা নষ্ট হয়ে যায় ,আর মানুষের সময় তো আছেই।

তবে প্রযুক্তি সে ভাবে অগ্রসর হচ্ছে এই দশকে, তাতে এর হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ নয় মোটেও।

সে যাক গে, আজকে আমরা যেটি নিয়ে জানবো সেটি নিয়েই বরং শুরু করা যাক,

সর্বপ্রথম ১৮৩৭ সালে প্রথম ইলেকট্রিক কার উৎপাদিত হয়।

কিছুদিন যাবত সেটি আবার প্রযুক্তির সহায়তায় আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে /

শুরুতেই,

ইলেকট্রিক কার বলতে যা বুঝায় তা হল গাড়ীটিতে ইলেকট্রিক সাপ্লাই দেওয়া হবে, সেটি ব্যাটারির মাধ্যমে সঞ্চয় করে মটর চালাবে,যার সাথে চাকা কানেক্ট করা থাকবে ফলে মটরের ঘূর্ণনের ফলে চাকা ঘুরবে ফলে,  গাড়িটি চলবে সো বলা যায়, মটরের কারণেই গাড়িটি চলতে শুরু করবে, ফলে এতে ক্লাচ,গিয়ারবক্স অথবা এগজস্ট পাইপের কোন দরকার ই  পড়ছে নাহ। মানে হল মোটরটি ব্যাটারির সঞ্চিত চার্জ কাজে লাগিয়ে কাজ করবে। এর জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ব্যাটারি চার্জ করতে হবে স্পেশাল চার্জিং পয়েন্ট এ যুক্ত করে।

ব্যাটারিটি অবশ্যই রিচার্জেবল হতে হবে।

ছবিতে দেখা যাচ্ছে কিভাবে চার্জিং প্রসেস টি সম্পন্ন হয়ে থাকে, চার্জিং এর জন্য আলাদা চার্জিং আউটলেট লাগে ,সেজন্য যেখানে সেখানে চার্জ দেওয়ার সুযোগ নেই।

ইলেকট্রিক কারের কয়েকটি ভাগ রয়েছে ,চলুন দেখা যাক

১.ব্যাটারি চালিতঃ

এটি একমাত্র সত্যিকার অর্থে ইলেকট্রিক ভেহিকল, কেননা ব্যাটারি চার্জ এর মাধ্যমেই এর যাত্রা সম্পন্ন হয়, সেকেন্ডারি কোন ফুয়েল অপশন নেই এতে।ব্যাটারি ধারণক্ষমতা সাধারণত বেশী হয় এতে ,এবং এত ব্যাটারিটি মোটরটি চালিয়ে থাকে।

২.হাইব্রিড ইলেকট্রিক কারঃ

এতে দুইধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যেমন এটি গ্যাসোলিনেও চলতে পারবে আবার ব্যাটারির চার্জেও চলতে পারবে।

এতে গতানুগতিক ধারার একটি ফুয়েল ইঞ্জিন সহ অন্যান্য অংশ  থাকে সাথে ব্যাটারিসহ ইলেকট্রিক মোটর ।

এখানে যেকোনো একটি প্রাইমারি হিসেবে কাজ করে, হয় ব্যাটারি ক্যাপাসিটি বেশী হবে এবং ইঞ্জিন সাইজ ছোট হবে নতুবা এর বিপরীত, এর উপর ভিত্তি করেই গাড়ির ম্পডেল বানানো হয়ে থাকে।

সাধারণত এসব ক্ষেত্রে জ্বালানি থাকেই, সাথে অল্টারনেটরের কিংবা রিজেনারেটিভ ব্রেকিং এর মাধ্যমেই ইলেক্ট্রিক এনার্জির ব্যবস্থা করা থাকে।

রিজেনারেটিভ ব্রেকিং এর মানে হল গাড়ীটি চলতে চলতে ব্রেক করবে তখন এর মোটরটি ঘর্ষনজনিত বলের প্রভাবে অল্টারনেটর হিসেবে কাজ করবে।

৩. প্লাগ ইন হাইব্রিড ইলেক্ট্রিক ভেহিকলঃ

এখানে অধিক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন মোটর এবং ব্যাটারি ব্যবহার করা হয় এবং কম শক্তিশালী ফুয়েল ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়, ইঞ্জিন তখন ই ব্যবহার করা হয় যখন ব্যাটারির চার্জ শেষের দিকে কিংবা অনেক পাওয়ার জেনারেট করার প্রয়োজন হয়।

চার্জিং এর সুবিধা আছে এর ক্ষেত্রে।

ছবিতে এর গঠন দেখানো হলঃ

এখন কিভাবে চার্জ করা হয়ে থাকে জানা যাকঃ

লেভেল ১ চার্জিংঃ

এখানে ১২০ ভোল্ট ডিসি সাপ্লাই দরকার , প্রায় ৮ ঘণ্টার মত সময় লাগে ফুল চার্জড হতে, সাধারণত বাসাবাড়িতে ব্যবহারের জন্যেই মানানসই,

যখন গাড়ীটি অনেকক্ষণ এর জন্য পার্কিং করা থাকে।

লেভেল ২ চার্জিংঃ

এখানে ২২০-২৪০ ভোল্টেজ এবং ৩০ অ্যাম্পিয়ার কারেন্ট দরকার হয়।

চার্জিং কর্ড এবং পাইলন ইন্সটল করার দরকার পড়ে, একটি ব্যাটারি ০-১০০% হতে প্রায় ৪ ঘন্টা সময় লাগে।

লেভেল ৩, ডিসি ফাস্ট চার্জিংঃ

এতে ৪৮০ ভোল্টেজ দরকার পড়ে।

 

কর্মক্ষেত্রে অথবা পাব্লিক চার্জিং স্টেশন এ এই লেভেল ৩ ইন্সটল করা থাকে।

প্রায় ৩০ মিনিটে ৮০% চার্জ করতে সক্ষম

১০-৩০ মিনিটে একটি ব্যাটারি চার্জড করে দিতে পারে চার্জার ভেদে,

কমার্শিয়াল এলাকায় ব্যবহার করা হয়।

গড়ে ব্যাটারি চআর্জ করতে নিম্নে উল্লিখিত সময় লাগে

লেভেল ১- ২৯০ মিনিট

লেভেল২- ১১৫ মিনিট

লেভেল৩- ২৩ মিনিট

চার্জার ও রয়েছে দুই ধরনের,

স্মার্ট আন্ড

ডাম্ব( নো ইন্টারনেট কানেক্টেড)

আচ্ছা এত কথা তো বললাম কিন্তু কিভাবে অল্প চার্জে অনেক দূর অতিক্রম করতে সে ব্যাপারে কিছু জানা যাকঃ

  • রেগুলার ড্রাইভিং স্পিড
  • ধীরে সুস্থে ব্রেকিং এবং গ্তি বৃদ্ধিকরণ
  • রিজেনারেটিভ ব্রেকিং এর বহুল ব্যবহার নিশ্চিতকরণ
  • ভেহিকলের ইকো সিস্টেম এর ব্যবহার
  • এয়ার কন্ডিশন এর ব্যবহার কমিয়ে আনা
  • উষ্ণ জায়গায় পার্ক করে রাখা যাতে ব্যাটারির তাপমাত্রা কমে না যায় ইত্যাদি বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিৎ।

ব্যাটারির আয়ুস্কালঃ ৩০০-৫০০ সাইকেল , কিছু সতর্কতা মেনে চললে এর ৩-৪ গুন লাইফ বেড়ে যাবে।

  • স্লো চার্জিং না করাই ভালো
  • ব্যাটারি পুরোপুরি ০% কখনোই করা উচিৎ হবে না
  • খুব গরম কিংবা খুব ঠাণ্ডা আবহাওয়া এড়িয়ে চলা উচিৎ

এসব মেনে চললেই এক ব্যাটারিতে বহু দিন পার করে দেওয়া সম্ভব

ব্যাটারির দামঃ

২৩০ ডলার পার কিলোওয়াট-ঘন্টা

২০২৬ সাল নাগাদ সেটি ১০০ ডলারে নেমে আসবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

গাড়ীর দামঃ $30,000-2M

Some specs about electric car:

Motor type: Induction motor , brushless motor, syschronous motor etc

Runs on: Both AC & DC

Torque: 600-1250 Nm

Battery: 50/60/75/100 kwh

Power: 350-700 KW

 

আচ্ছা সবই বুঝলাম কিন্তু কেন আমি এটা চালাবঃ

১ কম রক্ষণাবেক্ষণ

২ পরিবেশ বান্ধব

৩ সাশ্রয়ী

৪ নিরাপদ

৫ লো কার্বন এমিশন

৬ নো নয়েজ

৭ দ্রুতগতিরঃ টেসলার Model S P100D

মডেল টি  মাত্র ২,২৮ সেকেন্ডে ০ থেকে ৬০কিমি/ঘন্টা গতি অর্জন করেছে যা হালের দ্রুতগতির গাড়ীর থেকে অনেক দ্রুত।

টেসলার মডেলটি এক চার্জে প্রায় ৬২৫মাইল পথ অতিক্রম করেছিল।

 

ছবিতে গ্যাসোলিন এবং ইলেক্ট্রিক কারের তুলনা করা হয়েছে।

বর্তমানে প্রায় সব গাড়ী নির্মাতা কোম্পানি ইলেকট্রিক কারের প্রতি ঝুকে পড়েছে এবং ফুয়েল চালিত গাড়ী নির্মাণ ধীরে ধীরে বন্ধ করে দিচ্ছে।

২০২৬ সাল নাগাদ ইউরোপে প্রায় সকল গাড়ী ইলেকট্রিক হয়ে যেবে।

বাংলাদেশেও একদিন হবে, সেইদিনের অপেক্ষায় থেকে আজকে মত এখানেই শেষ।

 

২০১৮ এর সেরা কিছু ইলেকট্রিক গাড়ী ঃ

  • Kia Soul EV.
  • BMW i3.
  • Nissan Leaf.
  • Volkswagen e-Golf.
  • Tesla Model.
  • Hyundai Ioniq EV.
  • Tesla Model S.
  • Chevrolet Bolt EV

রেফারেন্সঃ fleetcarma

ইঞ্জিনের সিসি নিয়ে জানতেঃ

ইঞ্জিনের সিসি (CC) কি জিনিষ?

Comments are closed.