তুমিই নিজেই হতে পারো, তোমার টুইন!!

টুইন বা জমজ সন্তান মানব প্রজননের ক্ষেত্রে সবসময়ই কৌতূহলের বিষয়। আর সাম্প্রতিক সময়ে টুইনের সংখ্যাও বেড়েছে।

১৯৮০ সাল থেকে হিসাব করলে টুইন সন্তান জন্মগ্রহণের হার বেড়েছে ৭৬ শতাংশ। যেখানে প্রতি ৫৬ শিশুর মধ্যে এক জোড়া টুইন পাওয়া যেতো, এখন সেটি প্রতি ৩০ জনে পাওয়া যায়।

 

অনেক সময় শোনা যায়,”ate their twin in the womb”। এর অর্থ টুইনের এক সদস্য অপর সদস্যকে গর্ভে খেয়ে ফেলেছে। অনেক সময় টুইনের এক সদস্যকে মার্তৃগর্ভে হারিয়ে যেতে দেখা যায়। তখনই এ ধরণের কথা বলা হয়। কিন্তু বাস্তবিক বিষয়টি মোটেও এরকম নয়। বিষয়টি আরো উদ্ভট। হারিয়ে যাওয়া সদস্যটি অপর সদস্যটির অংশ হয়ে যায়।

ইউট্রাসে হঠাত করে একটি সদস্যের এভাবে হারিয়ে যাওয়া বা মারা যাওয়ার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে।

১. মা যদি মিসক্যারি করে থাকেন। এটি অসাবধানতাকেই ইঙ্গিত দেয়।

২. মায়ের শরীর যদি ভ্রূণের ফেটাল টিস্যু শোষণ করে থাকে।

এসব অনাকাঙ্খিত ঘটনা প্রসবের ৪-৯ সপ্তাহের মধ্যেই হয়ে থাকে। যদি এধরণের কোন ঘটনা টুইনসের সাথে ঘটে। তবে যে সদস্য প্রতিকূলতার কাটিয়ে পৃথিবীর আলো দেখবে তার মাঝে হারিয়ে যাওয়া সদস্যের জেনেটিক সিগনেচার থাকবে। এটা Tetragametic Chimera নামে পরিচিত।

জেনেটিক ডিফিকাল্টিস

এর কারণে অনেক ধরণের অসুবিধাও হতে পারে। আর এই সমস্যাটিও বেশ আজগুবে। আর এর কারণ হল ডিএনএ টেস্টিংয়ের রেসাল্টের উপর শতভাগ নির্ভরশীলতা। অবশ্য নির্ভর না হয়েও উপায় নেই, আমাদের কাছে বিকল্প প্রযুক্তি তো নেই। পৃথিবী জুড়ে একটি জেনেটিক কোর্ট কেস অনেক বিখ্যাত। Lydia Fairchild কেস। ২০০২ সালের ঘটনা। লিডিয়া তার পারিবারিক অসঙ্গতির কারণে পাবলিক এসিসট্যান্সের জন্য এপ্লিকেশন করেছিল। পাবলিক এসিসট্যান্স হল অনেকটা লোন বা সচ্ছলতা আনয়নের জন্য সরকারের নিকট টাকা ধার করা।

এর ফলশ্রুতিতে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে দেখা যায় যে, সে তার কন্যা সন্তানের আসল মা নন। ক্রিমিনোলজির আ্যক্টে লিডিয়ার বিরুদ্ধে কেস ফাইল হয়। দীর্ঘকালীন কোর্ট যুদ্ধের পর আসল ঘটনা সামনে আসে। লিডিয়ার সন্তানের মা ছিল জন্মগ্রহণ না করা অপর যমজ সদস্যা। হারিয়ে যাওয়া যমজ সদস্যের ডিএনএ জন্মগ্রহণ করা সদস্যের ডিএনএর সাথে মিশে গিয়েছিল।

তাই মা হিসেবে লিডিয়ার ডিএনএর যতটুকু অংশ তার সন্তানের ডিএনএর সাথে ম্যাচ করা প্রয়োজন ছিল, ততোটুকু অংশ ম্যাচ করেনি।

আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্যা ধন্যবাদ।

মো:আবিদুল ইসলাম।

Comments are closed.