“হিন্দু” বা “বৌদ্ধরা” না খেয়ে থাকলে তাকে বলা হয় “উপবাস”।মুসলিমরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় “সিয়াম”।খ্রিস্টানরা না খেয়ে থাকলে তাকে বলা হয় “ফাস্টিং”।বিপ্লবীরা না খেয়ে থাকলে তাকে বলা হয় “অনশন”।আর ,মেডিক্যাল সাইন্সে উপবাস করলে তাকে বলা হয়,”অটোফেজি“।
রোজা কি? রোজা শব্দের অর্থ বিরত থাকা! সুবেহ সাদিক থেকে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত কে পানাহার থেকে বিরত থাকাকে আমরা সাধারনভাবে রোজা বলে থাকি।
বেলজিয়ান কোষ বিশেষজ্ঞ ক্রিসচিয়ান‘ডে দুভে আবিষ্কার করেন লাইসোজোমের। তার আবিষ্কার থেকেই ১৯৫৫ সালে লাইসোজোম শব্দের উৎপত্তি।‘ডে দুভের আবিষ্কারের হাত ধরে ১৯৬৩ সালে “অটোফেজি” শব্দের উৎপত্তি হয়। অটোফেজি হল সে কৌশল যার মাধ্যমে জীব কোষ আভ্যন্তরীণ পরিবেশের আবর্জনা পরিষ্কার করে।
জাপানী বিজ্ঞানী Yoshinori Ohsumi ২০১৬ সালে নোবেল পান অটোফেজির উপরে কাজ করে।
এবার নিশ্চই প্রশ্ন আসে অটোফেজি জিনিষটা কি?
আমাদের শরীরের সুস্থ কোষগুলো যখন অসুস্থ কোষগুলোকে খেয়ে দেহকে সুস্থ রাখে একেই অটোফেজি বলে।
এবার নিশ্চই প্রশ্ন আসবে কিভাবে মানুষের অটোফেজি হয়?
অটোফেজি এর কারণ হচ্ছে মানুষের দেহকে অতিরিক্ত চাপে রাখা! আর মানুষের দেহকে অতিরিক্ত চাপে রাখতে সবচেয়ে উত্তম পন্থা হল “অটোফেজি” বা “রোজা” বা “উপবাস”।
এছাড়া এক্সারসাইজের মাধ্যমেও কিছুটা অটোফেজি হয়।
এখন দেখা যাক অটোফেজি কেনো দরকার?
আমাদের শরীরের নষ্ট হয়ে যাওয়া বা অসুস্থ কোষগুলোকে পরিষ্কার করাটা জরুরি। অটোফেজি ছাড়া শরীরের নষ্ট হয়ে যাওয়া কোষ পরিষ্কারের আর কোন পদ্ধতি নেই। অটোফেজি ক্যানসার হওয়া থেকে বিরত রাখে, হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে কাজ করে, পারকিনসন ডিজিজ প্রতিরোধ করে এছাড়াও নানা উপকারে আসতে পারে!
ওসুমির গবেষণার ফলশ্রুতিতে অটোফেজি নিয়ে গবেষণার দ্বার উন্মোচিত হয়। পরবর্তী গবেষকগণ অটোফেজি প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাতের সাথে পারকিন্স, আ্যলজাইমারস, ক্যান্সারের মত রোগের সূত্রপাত জড়িত তা প্রমাণ করেন। ওসুমির মূল্যবান গবেষণা ছাড়া এই দুরারোগ্য ব্যাধিগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক আমাদের এখনও হয়ত অজানা থেকে যেত। তিনি অটোফেজি গবেষণা ক্ষেত্রের জনক হিসেবেই বর্তমানে বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছেন।
Leave a Reply