বাংলাদেশের কিছু শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী ও তাদের আবিস্কারঃ পর্ব-১

বর্তমানে আমারা যে পৃথিবীতে বসবাস করছি, আজ থেকে ১০০ বছর বা তারও আগে আমাদের পৃথিবী এমন বাসযোগ্য ছিল না। অনেক পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা আজকের এই পৃথিবী পেয়েছি। এই পরিবর্তনের পিছনে অবদান আছে অনেক ব্যক্তিবর্গের, অনেক গোষ্ঠীর , অনেক জাতির কিংবা অনেক সমাজ ব্যবস্থার । ২য় বিশ্বযুদ্ধে বিধ্বস্ত জাপান আজ নিজেদেরকে পৃথিবীর সামনে নিজেদেরকে একটি অন্যতম পরাশক্তিতে পরিণত করেছে তাদের শিল্পায়ন ব্যবস্থার মাধ্যমে।

তবে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন এসেছে যে খাতটির মাধ্যমে সেটি হলো বিজ্ঞান । বিজ্ঞানের সাথে আমাদের সম্পর্ক যেন একই সূত্রে গাঁথা। বিজ্ঞানের কল্যাণে আমাদের জীবন হয়েছে সুন্দর, সহজ আর গতিময়। বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কার এই পরিবর্তনশীল পৃথিবীকে দিয়েছে নতুন মাত্রা।

এই পরিবর্তনশীল পৃথিবীকে সুন্দর করে সাঁজাতে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের অবদানকেও ছোট করে দেখা যাবে না। আমরা কতজন বাংলাদেশী সেইসব কৃতি বিজ্ঞানীদের জানি বা চিনি, যাদের কারণে আমরা আজ এই সুন্দর বাসস্থান পেয়াছি?তাহলে চলুন আজকে যেনে নেয়া যাক বাংলার সেসব কৃতি সন্তান ও তাদের আবিষ্কার সম্পর্কে।

ড. জামাল নজরুল ইসলামঃ

বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের মধ্যে মৌলিক বিজ্ঞানে তাঁর মতো অবদান আর কারও নেই । তেমনি বিশ্ব বিজ্ঞানের উপজীব্য উপস্থাপনে সমাজে তাঁর মতো সমাদর ও খ্যাতিও কারও ছিল না। মহাবিশ্বের উদ্ভব ও পরিণতি নিয়ে মৌলিক গবেষণার জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন । আইনস্টাইন এর আপেক্ষিকতার তত্ত্ব , কোয়ান্টাম মেকানিক্স ,কসমোলজি ও মহাবিশ্বের সৃষ্টির তত্ত্ব নিয়ে মৌলিক গবেষণা করেন।

জন্মঃ ফেব্রুয়ারি ২৪, ১৯৩৯।

শিক্ষাজীবন ঃ

জামাল নজরুল ইসলামের স্কুলজীবন শুরু হয় কলকাতায়, সেখান থেকে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে কিছুদিন, শেষে পাকিস্তানের লরেন্স কলেজ থেকে সিনিয়র কেমব্রিজ পাস করেন। বিএসসি সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে। এরপর বৃত্তি নিয়ে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতে ট্রাইপজে তিন বছরের কোর্স দুই বছরে শেষ করেন। ১৯৬০ সালে কেমব্রিজ থেকেই মাস্টার্স। ১৯৬৪ সালে এখান থেকেই প্রায়োগিক গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ড. ইসলাম অত্যন্ত দুর্লভ ও সম্মানজনক ডক্টর অব সায়েন্স বা ডিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। ছাত্রজীবনে তাঁর সমসাময়িক ও আজীবনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন বিস্ময়কর বিজ্ঞান-প্রতিভা স্টিফেন হকিং।
কর্মজীবন ও গবেষণাঃ  জামাল নজরুল ইসলাম ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরাল ফেলো ছিলেন। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত কেমব্রিজ ইন্সটিটিউট অব থিওরেটিক্যাল অ্যাস্ট্রোনমিতে গবেষণা করেছেন। ১৯৭১-৭২ দুই বছর ক্যালটেক বা ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজিতে ভিজিটিং অধ্যাপক ছিলেন। তিনি ১৯৭৩-৭৪ সালে লন্ডনের কিংস কলেজে ফলিত গণিতের শিক্ষক, ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে সায়েন্স রিসার্চ ফেলো এবং ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত মনে সিটি ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করেছেন।

প্রকাশিত বই ও জার্নালঃ

“দি আল্টিমেট ফেইট অফ দি ইউনিভার্স (১৯৮৩);
ক্লাসিক্যাল জেনারেল রিলেটিভিটি (১৯৮৪) – ডব্লিউ বি বনোর এর সাথে যৌথভাবে;
রোটেটিং ফিল্ডস ইন জেনারেল রিলেটিভিটি(১৯৮৫);
অ্যান ইন্ট্রোডাকশন টু ম্যাথম্যাটিক্যাল কসমোলজি (১৯৯২);
শিল্প সাহিত্য ও সমাজ – রাহাত-সিরাজ প্রকাশনা;
কৃষ্ণ বিবর – বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত”
স্কাই অ্যান্ড টেলিস্কোপ – কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। (স্প্যানিশ ভাষায় অনূদিত)
দ্য ফার ফিউচার অফ দি ইউনিভার্স – এনডেভারে প্রকাশিত- এগুলো তার বিখ্যাত গবেষণাগ্রন্থ।
এর মধ্যে জামাল নজরুল ইসলামের অনেক গবেষণা নিবন্ধ বিখ্যাত সব বিজ্ঞান জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এবং ১৯৮৩ সালে তাঁর গবেষণাগ্রন্থ দ্য আল্টিমেট ফেইট অব দ্য ইউনিভার্স কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত হলে সারা বিশ্বের কসমোলজিস্টদের মধ্যে হইচই পড়ে যায়। দ্রুত বইটি পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়। পরের বছর কেমব্রিজ থেকেই প্রকাশিত হয় ক্লাসিক্যাল জেনারেল রিলেটিভিটি। তাঁর গবেষণা আইনস্টাইন-পরবর্তী মহাবিশ্ব গবেষণায় বিরাট অবদান রেখেছে। তিনি এই ধারায় গবেষণা অব্যাহত রেখে পরবর্তীকালে লেখেন ফার ফিউচার অব দ্য ইউনিভার্স বা মহাবিশ্বের দূরবর্তী ভবিষ্যৎ।
সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহ কখনো এক সরলরেখায় এলে পৃথিবীর ওপর তার প্রভাব পড়বে কি না, তা নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। তবে গবেষণায় প্রফেসর ইসলাম আশার কথাই শুনিয়েছিলেন—সে রকম ঘটার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

বন্ধুমহলঃ

কেমব্রিজ এবং পশ্চিমে শিক্ষার গবেষণা ও অধ্যাপনায় থাকাকালে তাঁর বন্ধু ও সুহৃদমহল গড়ে ওঠে বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানীদের নিয়ে। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন তাঁর শিক্ষক ফ্রিম্যান ডাইসন, পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যান, ভারতের সুব্রহ্মনিয়াম চন্দ্রশেখর, পাকিস্তানের আবদুস সালাম, ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন ও অমিয় বাগচী, তাঁর সহপাঠী জয়ন্ত নারলিকার, ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ জিম মার্লিস প্রমুখ। হকিংয়ের কথা তো আগেই এসেছে।

দেশের প্রতি অসামান্য ভালোবাসাঃ ১৯৮৪ সালে প্রফেসর ইসলাম তাঁর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন। পশ্চিমের উন্নত দেশে ৩০ বছরের অভ্যস্ত জীবন,সম্মানজনক পদ, গবেষণার অনুকূল পরিবেশ, বিশ্বমানের গুণীজন সাহচর্য এবং আর্থিকভাবে লোভনীয় চাকরি ছেড়ে দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে দেশে ফিরে এলেন। এলেন একেবারে নিজ জেলা চট্টগ্রামে। অতি দামি চাকরি ছেড়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে যোগ দিলেন মাসিক তিন হাজার টাকা বেতনে।

দেশে ফিরে এসে একদিকে জামাল নজরুল ইসলাম গড়ে তুলেছেন উচ্চতর বিজ্ঞান গবেষণাগার আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান গাণিতিক ও ভৌতবিজ্ঞান গবেষণাকেন্দ্র  বা রিসার্স সেন্টার ফর ম্যাথম্যাটিক্যাল অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্স (আরসিএমপিএস)।

রবীন্দ্রনাথের মতোই তাঁর বিশ্বাস ছিল, ‘পরিত্রাণকর্তা আসবেন দারিদ্র্য লাঞ্ছিত কুটির থেকে পূর্বাচলের সূর্যোদয়ের দিগন্ত থেকে।
মৃত্যুঃ এই আশাবাদ নিয়েই ২০১৩ সালের ১৬ মার্চ মধ্যরাতে এ মহান বিজ্ঞানী আমাদের ছেড়ে গেছেন ।

জগদীশচন্দ্র বসুঃ

একজন বাঙালি পদার্থবিদ, উদ্ভিদবিদ ও জীববিজ্ঞানী এবং প্রথম দিকের একজন কল্পবিজ্ঞান রচয়িতা। তাঁর গবেষণা ফলে উদ্ভিদবিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে তোলে এবং ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যবহারিক ও গবেষণাধর্মী বিজ্ঞানের সূচনা করে।

জন্মঃ ৩০ নভেম্বর, ১৮৫৮, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান ময়মনসিংহ)

শিক্ষাজীবন ঃ

ইংরেজ সরকারের অধীনে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থাকা সত্ত্বেও ভগবান চন্দ্র নিজের ছেলেকে ইংরেজি স্কুলে ভর্তি করাননি। জগদীশ চন্দ্রের প্রথম স্কুল ছিল ময়মনসিংহ জিলা স্কুল । এর প্রমাণ বাংলা ভাষায় রচিত জগদীশের বিজ্ঞান প্রবন্ধগুলো।
জগদীশ কলকাতার হেয়ার স্কুল থেকে পড়াশোনা করে ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে সেন্ট জেভিয়ারস কলেজ  থেকে থেকে বিএ পাশ করেন।
এরপর তিনি আইসিএস পরীক্ষায় বসার জন্য ইংল্যান্ডে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও ভগবান চন্দ্র এতে রাজী হননি ।
বাবার ইচ্ছা ও তার আগ্রহে তিনি ১৮৮০ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞান পাঠের উদ্দেশ্যেই লন্ডনের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান, কিন্তু অসুস্থতার কারণে বেশিদিন এই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। তাঁর ভগ্নীপতি আনন্দমোহন আনুকূল্যে জগদীশ চন্দ্র প্রকৃতি বিজ্ঞান সম্বন্ধে শিক্ষালাভের উদ্দেশ্যে  কেমব্রিজের ক্রাইস্ট কলেজে ভর্তি হন। এখান থেকে ট্রাইপস পাশ করেন। ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি পাঠ সম্পন্ন করেন।

কর্মজীবন ও গবেষণাঃ

১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে জগদীশ চন্দ্র ভারতে ফিরে আসেন। কর্মজীবনের শুরুতে বসু প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্ত হন। কলেজে শুধু যে তাঁকে গবেষণার জন্য কোন রকম সুবিধা দেওয়া হত না তাই নয়, তিনি ইউরোপীয় অধ্যাপকদের অর্ধেক বেতনেরও কম অর্থ লাভ করতেন। এর প্রতিবাদে বসু বেতন নেওয়া বন্ধ করে দেন এবং তিন বছর অবৈতনিক ভাবেই অধ্যাপনা চালিয়ে যান। দীর্ঘকাল ধরে এই প্রতিবাদের ফলে তাঁর বেতন ইউরোপীয়দের সমতুল্য করা হয়।প্রেসিডেন্সি কলেজে  গবেষণার কোন রকম উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা না থাকায় ২৪-বর্গফুট (২.২ মি২) একটি ছোট ঘরে তাঁকে গবেষণার কাজ চালিয়ে যেতে হত। কলেজে যোগ দেওয়ার এক দশকের মধ্যে তিনি বেতার গবেষণার একজন দিকপাল হিসেবে উঠে আসেন।

তার গবেষণা গুলোর মধ্যে অন্যতম হলোঃ

অতিক্ষুদ্র তরঙ্গ সৃষ্টি ও প্রেরণ
উদ্ভিদ ও প্রাণী জীবনের সাদৃশ্য
বিদ্যুৎ প্রবাহে উদ্ভিদের উত্তেজনা অনুভব এবং সাড়া দেবার মতো ক্ষমতা
অজৈব বস্তুর বৈদ্যুতিক সাড়া (Electric Response of Inorganic Substances)
প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনার প্রথম আঠারো মাসে জগদীশ যে সকল গবেষণা কাজ সম্পন্ন করেছিলেন তা লন্ডনের রয়েল সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত হয়। এই গবেষণা পত্রগুলোর সূত্র ধরেই লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়  ১৮৯৬ সালের মে মাসে তাকে ডিএসসি ডিগ্রী প্রদান করে।  তার এই গবেষণা কর্মগুলোর গুরুত্ব বিবেচনা করেই ইংল্যান্ডের লিভারপুলে বক্তৃতা দেয়ার জন্য ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। এই বক্তৃতার সাফল্যের পর তিনি বহু স্থান থেকে বক্তৃতার নিমন্ত্রণ পান। এর মধ্যে ছিল রয়েল ইন্সটিটিউশন, ফ্রান্স এবং জার্মানি। সফল বক্তৃতা শেষে ১৮৯৮ সালের এপ্রিল মাসে তিনি সস্ত্রীক দেশে ফিরে এসেছিলেন।

ইন্সটিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার্স (IEEE) তাঁকে রেডিও বিজ্ঞানের জনক বলে অভিহিত করে।

প্রকাশিত বইঃ

বাংলা ভাষায়ঃ

অব্যক্ত
ইংরেজি ভাষায়ঃ

Responses in the Living and Non-living (১৯০২)
Plant Responses as a Means of Physiological Investigations (১৯০৬)
Comparative Electrophysiology (১৯০৭)
Physiology of the Asent of Sap (১৯২৩)
Physiology of Photosynthesis (১৯২৪)
Nervous Mechanism of Plants (১৯২৫)
Collected Physical Papers (১৯২৭)
Motor Mechanism of Plants (১৯২৮)
Growth and Tropic Movement in Plants (১৯২৯)

আইনস্টাইন তার সম্পর্কে নিজেই বলেছেন:  “জগদীশচন্দ্র যেসব অমূল্য তথ্য পৃথিবীকে উপহার দিয়েছেন তার যে কোনটির জন্য বিজয়স্তম্ভ স্থাপন করা উচিত ” ।

মৃত্যুঃ ২৩ নভেম্বর, ১৯৩৭

ড. মাকসুদুল আলমঃ

জন্ম ঃ ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৫৪

শিক্ষাজীবন ঃ

মাধ্যমিক পাস করেন গভঃ ল্যাবরেটরি হাই স্কুল থেকে । এইচ এস সি পাস করেন ঢাকা কলেজ থেকে । স্বাধীনতার পর মাকসুদুল আলম চলে যান রাশিয়ায় ।সেখানে মস্কো রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়  থেকে অণুপ্রাণবিজ্ঞানে স্নাতক, স্নাতকোত্তর (১৯৭৯) ও পিএইচডি (১৯৮২) সম্পন্ন করেন। পরে জার্মানিতে বিখ্যাত ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইন্সটিটিউট থেকে ১৯৮৭ সালে প্রাণরসায়নে পুনরায় পিএইচডি করেন।

গবেষণাঃ

ড. মাকসুদুল আলম এর নেতৃত্বে ২০০৮ সালে দেশের ৪২ জন বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদকে নিয়ে তৈরি ‘স্বপ্নযাত্রা’ নামক একটি উদ্যোগের মাধ্যমে পাটের জিনোম সিকোয়েন্স নিয়ে গবেষণার সূত্রপাত। পরে ২০১০ সালে নতুন উদ্যোমে আবারও গবেষণাটি শুরু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুজীব বিভাগের ১১ জন গবেষক ও ডাটা সফটের ২০ জন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তথ্য বিশ্লেষণের কাজগুলো করেছেন।  তার নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউট ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ডাটাসফটের একদল উদ্যমী গবেষকের যৌথ প্রচেষ্টায় ২০১০ সালের মাঝামাঝি সময়ে সফলভাবে উন্মোচিত হয় পাটের জিন নকশা।

২০১০ সালের ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে পাটের জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কারের ঘোষণা দেন। গবেষণার তথ্য বিশ্লেষণ ও কারিগরি সহায়তা পাওয়া গেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াই ও ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স মালয়েশিয়ার কাছ থেকে। গবেষণার বিভিন্ন স্তরে প্রায় দুই কোটি তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এই তথ্য ব্যাখ্যা করতে প্রয়োজন পড়েছে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন একটি মিনি সুপার কম্পিউটারের। ৪২টি কম্পিউটার একসঙ্গে যুক্ত করে মিনি সুপার কম্পিউটার তৈরি করা হয়। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ডাটা সফটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব জামান তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক কাজগুলো তত্ত্বাবধান করেন।

মৃত্যুঃ ২০ ডিসেম্বর ২০১৪

চলমান………

One Comment

Comments are closed.