নাম টা বেশি দিন হল শুনি নি, তবে শোনার পর যে বিষয়টা মাথায় এসেছিল, সেটি হল – “আচ্ছা, ৮ বিটকয়েনে কি ১ বাইটকয়েন?”
ভুল ছিলাম। এটা ক্রিপটোকারেন্সি। সেটা আবার কি? আমি নিজেও জানতাম না, এখন যদি ও কিছুটা জানি, সহজ ভাষায়- এটি একধরণের ডিজিটাল মুদ্রা যা এনক্রিপশন কৌশল প্রয়োগ করে মুদ্রাটির ইউনিট বা এককের মান নিয়ন্ত্রণ করে, তহবিল স্থানান্তর যাচাই করে এবং সবচেয়ে বড় বিষয় কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে না থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করে ।
$১,০০০ এর মূল্যমানের এক বিটকয়েন!
বিটকয়েনের জন্ম ২০০৯ সালে, এটি একটি ডিজিটাল মুদ্রা যা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের অধীনে না থেকেই সকল কাজ করে – যার মূল্য হঠাৎ করেই বৃদ্ধি পায়,এবং হঠাৎ করেই কমে যায়। অনেকের মনেই আশঙ্কা জাগে, বিটকয়েনে একটি দৃঢ় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতির ফসল এনে দিতে পারবে তো! বহু বছর আগে যারা বিটকয়েন, লাইটকয়েন, ড্যাশকিন বা অডিওকয়েনে বিনিয়োগ করেছেন তাদের অনেকেই এখন হয়ে উঠেছেন মিলিয়োনার।
বিটকয়েন কি?
বিটকয়েন ২০০৯ সালে মুক্ত উৎস প্রযুক্তি (Open Source Technology) হিসেবে আবিষ্কৃত হয়। রহস্যময় হলেও সত্য আবিষ্কারক তার নাম প্রকাশ না করে, “সাটোশি নাকামোটা” ছদ্মনামে বিটকয়েন তুলে ধরেন সকলের কাছে।
এটি একটি ডিজিটাল মুদ্রা, কোনও অতিরিক্ত ব্যাঙ্ক চার্জ অথবা সরকারী নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই অনলাইনে এক্ষেত্রে অর্থ প্রদান করা সম্ভব। কোনো কোম্পানি অথবা সরাসরি কোনো মানুষ পেমেন্ট হিসাবে বিটকয়েন ব্যবহার করে কোনোকিছু কিনতে বা বিক্রি করতে পারে। ২০১৭ সালে মাইক্রোসফ্ট, ভার্জিন এয়ারলাইন্স, ওয়ার্ডপ্রেস এবং সাবওয়ে কোম্পানিসমূহ বিটকয়েনকে তাদের লেনদেনের একটি প্রক্রিয়া হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে।
রিয়েল লাইফ মুদ্রা যেমন পাউন্ড, স্টার্লিং বা মার্কিন ডলার ইত্যাদি কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্বারা পরিচালিত হলেও, বিটকয়েনের ক্ষেত্রে বিষয়টি এমন নয়। স্ট্যাডিজের হার, সরবরাহ এবং চাহিদা- এ তিনটি দিক বিবেচনায় বিটকয়েনের মান বাড়বে বা কমবে। বিটকয়েনের মানের পরিবর্তন “miners” কার্যকলাপের উপর নির্ভর করে। “Minus” একটি জটিল এলগরিদম প্রক্রিয়া যা একটি জটিল গাণিতিক সমীকরণে পরিণত হয়ে একটি চেইন তৈরী করে, যাকে “ব্লকচাইন” বলা হয়।
সর্বাধিক ২১ মিলিয়ন বিটকয়েন তৈরি করা যাবে বলে আশা করা যায়। পহেলা জুন ২০১৭ তারিখ অবধি ১৬,৩৬৬,২৭৫ টি বিটকয়েন বাজারে ছিল। এসব দিক বিশ্লেষণে, ২১ মিলিয়নের লক্ষ্যমাত্রায় পৌছাতে ২১৪০ সাল লাগবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কেন বিটকয়েন বিতর্কিত?
অনেকেই বিটকয়েনের সাথে সোনার বা কাগজের অর্থ এর তুলনা করছেন। ব্যাংক এবং এসকল প্রতিষ্ঠানগুলিতে বিটকয়েন নিষিদ্ধ এবং অনেক দেশেই এর ব্যবহার করা হয় না, কেননা এটি কার অধীনে নিয়ন্ত্রিত, তা কারো জানা নেই।
গতবছরের ২১ শে নভেম্বর, একটি ৩১ মিলিয়ন ডলারের চুরির ঘটনা প্রকাশিত হয়, যার ফলে বিটকয়েনের দাম অস্থায়ীভাবে কমে যায়। সুতরাং, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ থাকা উচিত নয় যে, এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ।
বিটকয়েনের লেনদেন কালো বাজার এবং অন্ধকার ওয়েব(Dark Web) এর সাথে ও সংশ্লিষ্ট। সাম্প্রতিক সময়ে মানি লন্ডারিং এর সাথে ও বিটকয়েনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। এসকল দিক বিবেচনায় এখন ও বিটকয়েন লেনদেন বারবার বিতর্কিতই থেকে যাচ্ছে।
সহজ ভাবে বলতে গেলে, ইস্যুটি “একটি ঐতিহ্যগত মুদ্রার” পরিবর্তে বিটকয়েন ব্যবহার ও লেনদেন কঠিন করে তোলে। তবে এখন ও অনেকের মতে, “BItcoin will be the future world coin”.