সম্প্রতি ১৬ই ফেব্রুয়ারি,২০১৮ তারিখে ‘ফেসবুক’ বেলজিয়ামের জাতীয় আইন অমান্য করায় এবং ব্যবহারকারীদের গোপন তথ্য সংগ্রহে রাখায় ১২৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার জরিমানার সম্মুখীন হয়। এটাই প্রথমবার নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতির চাপে এর আগেও বেশ কয়েকবার সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম বড় এই মাধ্যম কে জরিমানা প্রদান করতে হয়।
বেলজিয়াম আদালতের রায়ে মূলত সামাজিক যোগাযোগের সকল মাধ্যম কে তাদের ব্যবহারকারীর গোপনীয় তথ্য সংগ্রহে না রাখতে নির্দেশ প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে ফেসবুক সহ সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কর্তৃক পূর্ববর্তী সকল সংগ্রহীত তথ্য ডিলেট করতে আদেশ প্রদান করা হয়।
গত শুক্রবার ঘোষিত রায়ে, বেলজিয়াম নাগরিকদের সংগ্রহীত সকল গোপন তথ্য ডিলেট করতে আদেশ করা হয়। এবং একইসঙ্গে, না জানিয়ে অন্য কোনো ওয়েবসাইট হতে তথ্য চুরির বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। রায়ে বলা হয়, “ফেসবুক অবৈধ ভাবে ফেসবুক ব্যবহারকারী ব্যতীত ও বহু বেলজিয়াম নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করছে।”
আসা যাক মূল আলোচনায়। খুব সম্ভবত আপনি জেনে থাকবেন যে, মাত্র কিছুদিন হল, ফেসবুক ভিডিও এর মধ্যে আপনি এডভার্টাইস্মেন্ট দেখতে পারবেন। আগে কোনো ফেসবুক পেজ হতে এই এড দেওয়া হলেও, এখন দীর্ঘ সমইয়ের ভিডিও গুলোর মাঝেও ফেসবুক এড দেখানো হয়। বিষয়টি অনেকটা ইউটিউবের মত। এ সকল ক্ষেত্রে, ফেসবুক তার ব্যবহারকারীদের বেশ কিছু গোপনীয় তথ্য সংরক্ষণ করে এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ এড দেখায়। হয়তো বা এটি আপনাদের সাহায্য করতে পারে, যেহেতু আপনি আপনার জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ খবরগুলো ফেসবুক এডের মাধ্যমে পাচ্ছেন। তবে, এটি কি আদ্য নিরাপদ, আপনার তথ্য গুলো নিরাপদে না থাকলে তা অবশ্যই আত্মঘাতী।
আদালতের রায়ে বলা হয়, “ফেসবুক কেমন ধরণের তথ্য সংগ্রহ করতে চায়, তথ্য দিয়ে ফেসবুক কি করতে চায় এবং তথ্য সমূহ আদ্য সকলের জন্য পৃথকভাবে সংরক্ষিত থাকবে কি না- এ সকল বিষয়ে ফেসবুক যথার্থ উত্তর প্রদানে ব্যর্থ হয়।”
রায়ে আরো বলা হয়,”ফেসবুক যে ধরণের তথ্য সংগ্রহ করছে, সে সম্পর্কে কখনো তারা সরকার অথবা যথাযথ কর্তৃপক্ষ কে অবগত করে নি।”
যদিও ফেসবুকের পক্ষ হতে বলা হয়, এ বিষয়ে তারা উচ্চতর আলাদতে আপিল করবে। এবং আরো জানানো হয়, “ব্যবহারকারীদের তথ্য সংরক্ষরণে আলাদা বিশেষত দল রয়েছে ফেসবুকের।”
এটিই প্রথমবার নয়। ২০১৬ সালে, ফ্রান্সের একটি আদালত কর্তৃক রায়ে ১১০ মিলিয়ন ইউএস ডলার জরিমানা দিতে হয় ফেসবুক কে। মামলাটিতে মূল অভিযোগ ছিল বর্ণবাদ নিয়ে। এছাড়াও ২০১৭ সালের যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ফেসবুকের মাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচারের জন্য ও ফেসবুক বিতর্কের শিকার হয়। যা ই হোক না কেন, গত শুক্রবারের এই রায় সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকের জন্য বড় একটি ধাক্কা হয়ে দাঁড়াবে।
Leave a Reply