ভিনগ্রহের ডুয়েল ও ডি-টুয়েন্টি (দ্বিতীয় ও শেষ অংশ)

প্রথম অংশের পড়ে- (সুয়ানের আগমনে একটু খারাপ লাগে)

“আজ একা তুমি এখানে, অন্যরা কোথায়?”

“সুখোসি বললেন তোমাকে দেখে আসতে, একা ! ”

“একা পাঠালেন কেন?”

“কষ্ট নামক জিনিস যেন আঁকড়ে না ধরে তাই, তুমি কি প্রস্তুত? ”

“হ্যাঁ আমি প্রস্তুত, সুখোসিকে জানাতে পার।”

“তাকে আর জানাতে হবে না, বলেছেন; তুমি প্রস্তুত হলেই আমরা কাজ শুরু করব।”

অতঃপর সুয়ান তাকে নিয়ে একটি বড় কক্ষে প্রবেশ করে, সজল দেখতে পেল ঘরটিতে অসংখ্য আর্কীমানব বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত; হয়ত কোন ল্যাব। সুখোসি সজলকে অভিনন্দন জানিয়ে তার পরিকল্পনা জানতে চাইল। সজল আপাতত জানালঃ “এখনো উদ্দিষ্ট পরিকল্পনা খুঁজে পায়নি তবে তার পরিকল্পনা চলছে, আরো জানায় এত বড় ল্যাবটা সে পর্যবেক্ষণ করবে যদি তা হতে দৃঢ় কোন কিছু পাওয়া যায় সাহায্য করার মতো।”

সুখোসি স্বাগতম জানায়।

সজল যতই ল্যাবটির পর্যবেক্ষণ করছে ততই সে আশ্চর্য হচ্ছে, এমন যন্ত্র পৃথিবীর কোন মানব চিন্তাও করতে পারে না। সে ভাবে, এত উন্নত যন্ত্র দিয়ে যদি পৃথিবীতে আঘাত হানে তবে পৃথিবীর কোন মানব শক্তির ক্ষমতা নেই এই টার্সবাসীর বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে! আবার এত উন্নত যন্ত্রাংশ থাকা সর্তেও যদি ঐ দুই গ্রহের কাছে পরাজিত হয়ে থাকে তাহলে এর মানে রিক-থিনারা আরো উন্নত। হঠাৎ সজলের চোখ থেমে যায় একটি রিভলবার সিস্টেম যন্ত্রের কাছে, চারতলা ঘর সমান বা তার অর্ধাংশ ও হতে পারে তবে ঠিক দেখতে প্রায়ই রিভলবার এর মতো। কিন্তু মনুষ্য তৈরির মতো যন্ত্রটির সামনে কোন নলাকার দণ্ড নেই। মনুষ্য তৈরি রিভলবার এর সামনে ছোট যে গোলাকার দণ্ডের সামিল কিছু থাকে তা রক্ষণাত্মক কিংবা হত্যার জন্য ফায়ার করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে ভেদ করার জন্য ব্যবহার হয় কিন্তু এই রিভলবার সিস্টেম তেমন নয়। যন্ত্রটির সামনে কিছু নেই কিন্তু গঠন অনুযায়ী রয়েছে কিছু গহ্বরের মতো জায়গা যা মনুষ্য রিভলভারের মতো।

সে সুয়ানের কাছে জানতে চায়।” এটা কি?”

“এটা ঠিক কি তা বলতে পারব না।”

“কেন?”

“কারণ আমরা এটি ব্যবহার করিনা।”

“ল্যাব তোমাদের তাহলে ব্যবহার করনা কেন?”

“ল্যাব আমাদের কিন্তু ল্যাবের সব যন্ত্র আমরা ব্যবহার করলেও কেবলমাত্র এটিই আমরা ব্যবহার করতে পারিনা, প্রধান ব্যবহার করতেন। তিনি ভাল জানেন কিভাবে ব্যবহার করতে হয়।”

“আমি কি এর ভিতরে প্রবেশ করতে পারি?”

সুয়ান কিছুটা চিন্তা করেই চুপ হয়ে থাকলো। সে সুখোসি কে ডেকে কিছু বলল যা সজলের বোঝার ক্ষমতার বাহিরে।

“আমরা কেউ জানিনা এটা কি ভাবে ব্যবহার করতে হয়, অনেকেই এর ভিতর প্রবেশ করে জানার চেষ্টা করেছি, যখন প্রধান কে তারা নিয়ে যায় তার পর। প্রধান প্রায়ই বলতেন; যদি কোনদিন তিনি হারিয়ে যান এবং আমাদের টার্স আক্রমণ হয় তাহলে একমাত্র এর মাধ্যমেই টার্স কে মুক্ত করা সম্ভব।” সুখসি উত্তর দিল।

সজল ভাবতে থাকে, তাহলে এরই মাঝে লুকিয়ে আছে রহস্য। সব বিলম্বতা ভঙ্গ করে তাকে জানতেই হবে কি রয়েছে এর মাঝে!

“যেহেতু প্রধানের বক্তব্য অনুসারে এই জিনিসটাই তোমাদের গ্রহকে মুক্ত করতে পারে তাহলে এতেই অনেক কিছু লুকিয়ে আছে। আমি এর ভিতরে যেতে চাই, যদি কিছু পেতে পারি।”

“ঠিক আছে তুমি যখন যেতে চাইছ আমরা বাঁধা দিব না।”

একটি উষ্ম হিমশীতল পরিবেশ। চারপাশ ধোঁয়ায় পরিপূর্ণ । সজলের জানা নেই এই ধোয়ার রং কেমন? কি তার নাম। একটি বিষাক্তময় জায়গা, কোন মানুষ এটাতে প্রবেশ করতে পারবে না এমনি এমনি তাই তারা নিরাপত্তার জন্য সজলের মাথায় একটি যন্ত্র লাগিয়ে দিয়েছে যা তার মস্তিষ্কের কোন ক্ষতি করবে না। সজল হতবাক, সে প্রথমে ভেবেছিল এখানে কিছু গহ্বর রয়েছে কিন্তু ভিতরে এসে বোঝে পুরোটাই ভিন্ন। মূলত তার কল্পিত সবগুলো গহ্বর একটি কেন্দ্রে কেন্দ্রীভূত অর্থাৎ একটি গোলক ধাঁধা বলা যেতে পারে। আস্তে আস্তে সামনে এগিয়ে যেতে থাকে আর প্রতিটা পদে বিস্মিত হতে থাকে, গহ্বরগুলো যেখানে কেন্দ্রীভূত বলে মনে হচ্ছে; এমন ঘরটাই সে খুঁজে পাচ্ছেনা বরং তার মনে হচ্ছে সে একটি জায়গায় দাড়িয়ে আছে কেবল মাত্র তার পায়ের নিচের জায়গাটি চলছে। কিন্তু সজলের মনে একটি সন্দেহ রয়েই গেল যদি সে চলতেই না পারে তাহলে এটা নিছক কোন খেলনা নাকি গভীরে কিছু আছে? হঠাৎ চোখ পড়ে, সব জায়গা গুলোতে এত বলয় নেই কিন্তু এখানে এত! অবশেষে পাওয়া যায় সেই ইনভিসিবল গহ্বর। ভাবতে থাকে, এই সেই রহস্য।

“সুয়ান ডি-টুয়েন্টি তো এখনো আসছে না, খারাপ কিছু হয়নিতো?”

“চলুন আমরা গিয়ে দেখি।”

“ডি-টুয়েন্টি, তুমি আছ?” এভাবে কিছুক্ষণ ডাকার পর তারাও থমকে যায়।

“সুয়ান। আমরা এটা কি দেখছি এই ঘরে কখনো প্রবেশ করিনি হঠাৎ এলো কোথা থেকে?”

“আমি নিজেও বুঝতে পারছি না এই ঘরটিতে কখনই এসেছি বলে মনে হয় না, চলুন ভিতরে।”

“ঐ তো ডি-টুয়েন্টি, সুখোসি।”

সজল একটি জায়গায় স্থির দাড়িয়ে কি জানি দেখছে! তবে তার কোন প্রকার খেয়াল নেই, নড়া-চড়ার হেরফের ও নেই; মনে হচ্ছে মূর্তি বেশিত বস্তু।

“ডি-টুয়েন্টি, তুমি কি করছ?”

এদের কোন কথা পরখ করার মতো খেয়াল নেই, এক মনে স্থির দাড়িয়ে আছে। কিন্তু সজলের এমন ব্যবহারে দুজনে কিছুটা হতচকিয়ে তার কাছে যায়। অবিশ্বাস্যভাবে যা কখনই এই দুজন আগে দেখেনি বা জানত বলে মনে হয়না, এমন ঘটনা আজ দেখল; সজল কে যখন তারা স্পর্শ করল কিন্তু তাদের প্রতিবারে স্পর্শে সজল ভাগ হতে থাকল ঠিক রূপকথার হাইড্রার মতো। একটি ব্যাপার লক্ষণীয় যে যতবার ভাগ হচ্ছে প্রতিবার-ই আগের মতো মূর্তি হয়ে রয়েছে এবং এক মনে তাকিয়ে রয়েছে।

“সুয়ান, ডি-টুয়েন্টি?”

“আমিও অবাক হয়েছি সুখোসি এটা কিভাবে সম্ভব?”

“এটা অসম্ভবের মাঝেও সম্ভব, তোমাদের টার্স প্রধানের এই যন্ত্র সমগ্র টার্স কে মুক্ত করতে পারে।”

হঠাৎ কোথা থেকে সজল এলো কেউ কিছু বুঝল না। তাদের পিছন থেকেই সে এসেছে এবং তৎক্ষণাৎ সেই হাইড্রার মতো সজলের অনুরূপগুলো হারিয়ে গেল; এক প্রকার ক্লোন বলা গেলেও এই যন্ত্র ক্লোন হিসেবে দাবি করেনা। সম্ভবত ক্লোনের চেয়েও আরও উন্নত ধরনের। কারণ সজল একজন বিজ্ঞানী এবং ক্লোন সম্পর্কে সে জানে, এটি ক্লোন নয় বরং এটি যে কোন সত্ত্বাকে ইনভিসিবল করে তার অনুরূপ সৃষ্টি করে এবং সত্ত্বা দৃশ্যমান হলে সেগুলো হারিয়ে যায়। মজার ব্যাপার, সেই অনুরূপগুলোকে কোন কিছু দ্বারা স্পর্শ করলে তা ভাগ হতে থাকে এবং হাজার হাজার হলেও তাদের ততক্ষণ পর্যন্ত ক্ষতি হয় না যতক্ষণ সত্ত্বা দৃশ্যমান না হয়। আরও বিস্ময়কর এই যে যন্ত্রটির মাধ্যমে পরস্পর যোগাযোগ সম্ভব হাইপ্রোমুড ছাড়াই কেবল যখন ইনভিসিবল হবে। সুখোসি এবং সুয়ান কিছু বুঝে উঠার আগেই সজল তার এমন ঘটনার অন্তরালে যে যন্ত্র আছে তা তাদের দেখিয়ে এমন বিস্ময়কর কাজ উপহার দিল।

“আমরা তোমার কথা বুঝতে পেরেছি কিন্তু এই যন্ত্রটির মাধ্যমে আমাদের গ্রহকে কিভাবে মুক্ত করব?”

সজল তার পরিকল্পনা জানায়, তার দুজনেই অভিবাদন জানাল। সজলের এই পরিকল্পনাই কেবল তাদের মুক্ত করতে সক্ষম এবং সেই মোতাবেক ল্যাবে অবস্থিত প্রতিটি আর্কীকেই কাজ করতে বলা হল যেন এমন যন্ত্র মাত্র এক ইথেন্সে যুদ্ধ করার মত তৈরি কিছু নতুন আরও যন্ত্র উৎপাদন করা যায়।

পরিকল্পনা এই যে-তাদের প্রধানের তৈরি ইনভিসিবল ক্যাপাবল অপ্টিমিস্টিক, ক্লোনের চেয়েও উন্নত যন্ত্রটি দিয়ে রিক-থিনাদের সাথে যুদ্ধ করবে। যেহেতু এই যন্ত্রটি সব ধরনের বস্তুই ইনভিসিবল করার ক্ষমতা রাখে সেহেতু তারা (টার্সগ্রহবাসিরা) এবং তাদের যুদ্ধাস্ত্র যন্ত্র দিয়ে রিক-থিনাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করবে ফলে রিক-থিনারা বুঝতেও পারবেনা কিভাবে এবং কোথা থেকে তাদের উপর আক্রমণ চলছে! তবে এমন সাংঘাতিক যুদ্ধকে আহবানের জন্য প্রথমে তাদের (রিক-থিনা) বুঝিয়ে দিতে হবে ফলস্বরূপ তারা তিন থেকে চার ইথেন্স পর এলে হামলা করা হবে।

তিন ইথেন্স পর রিক-থিনারা মোট পাঁচটি তিনতলা অর্ধচন্দ্র পিরামিড তল বিশিষ্ট প্ল্যানেট শিপে করে টার্সগ্রহে এসে নামল এবং নেমেই তাদের দৃষ্টি যতদূর যায় এর মাঝে কোন আর্কী থাকলে তাকে শেষ করে এগিয়ে যেতে থাকে। হঠাৎ এক প্রকার বাজের শব্দে রিক-থিনাদের পুরো দুটো প্ল্যানেট শিপ শূন্যে হারিয়ে যায়। সম্ভবত এমন কিছু আশা করে নি তারা, কারণ গত একশ প্র-এথেন্স এ তারা টার্সদের শাসন করেছে কিন্তু এমন কোন প্রতিক্রিয়া পায়নি যা আজ ঐ দুটো শিপ হারিয়ে বুঝেছে। এই নিয়ে দুই গ্রহের মাঝে দ্বন্দ্ব হলে রিক-থিনারা বুঝতে পারে তারা এদের সাথে পারবে না কারণ কোথা থেকে আক্রমণ চলছে তা জানেনা, তাই টার্সদের জানিয়ে যায় পাঁচ ইথেন্স পর সমগ্র গ্রহে আঘাত হানবে।

“ধন্যবাদ ডি-টুয়েন্টি, তোমার পরিকল্পনা কাজে দিয়েছে এখন শুধু অপেক্ষা যুদ্ধে সংলিপ্ত হওয়ার।” সুখোসি কৃতজ্ঞতা জানায়।

সজলের মাঝেও আনন্দ বয়ে গেল। সে আবার পৃথিবীর মুখ দেখবে এবং এই সাংঘাতিক গ্রহবাসীর কথা কনফারেন্সে আলোচনা করবে। উত্তেজনার মধ্যে সে সুখোসিকে জানাল, “আমাকে ফেরত পাঠান হবে? এখানে থেকে কি হবে এবং আমার বিশ্বাস তোমাদের গ্রহ এবং প্রধানকে ফিরে পাবে।”

“হ্যাঁ, দুই এথেন্স পরেই তোমার যাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে, তোমার সাথে এখানে হওয়া সব স্মৃতি আমরা মুছে ফেলব এবং যে অবস্থায় তোমাকে নিয়ে আশা হয়েছে ঠিক সেভাবে রেখে আশা হবে।”

“সব স্মৃতি মুছে ফেলা হবে?”

“হ্যাঁ, আমাদের সাথে হওয়া সব স্মৃতি তোমার মুছে ফেলা হবে এবং তোমার মাথায় থাকা ঐ হাইপ্রোমুড মাইন্ড সিস্টেমে সব ডেটা সেইভ আছে সেগুলোকে ডিলিট করা হবে ও যন্ত্রটিকে আমরা উপহার স্বরূপ তোমার সাথে পাঠিয়ে দিব।”

সজল মনে মনে ভাবছে, এই স্মৃতিগুলো মনে করতে বেশিক্ষণ লাগবে না যখন সে হাইপ্রোমুড সিস্টেমের কথা মনে করবে। কিন্তু উত্তেজনার মাঝে সজল ভুলেই গিয়েছিল সে যা ভাবছে তা সুখোসি অবগত হয়েছে কারণ তার মাথায় থাকা হাইপ্রোমুড যন্ত্রটি কোন প্রকার কথা বলা ছাড়াই পরস্পর যোগাযোগ রাখে।

অবশেষে সঠিক দিনে সজল সবার কাছে বিদায় নিয়ে আর্কশিপে একটি হিমশীতল ঘরে ঢুকে ও গভীর ঘুমে হারিয়ে যায়।

ঘড়িতে এখন বাজে রাত ৩টা ৪৫মিনিট। সজল ভাবছে, আবার ঘুমিয়ে পরেছে অথচ সামনেই বিজ্ঞান একাডেমীতে আবিষ্কার জমা দেবার কথা। এভাবে ঘুমিয়ে গেলে আবিষ্কার তো দুরেই থাক বরং কিছুই হবেনা। টেবিল থেকে উঠে কিচেন রুম থেকে কিছুক্ষণ পর এক কাপ চা এনে এক চুমুক গিলছে আর ভাবছে আবিষ্কার জমা নেওয়ার সময়? ক্যালেন্ডারের দিকে চোখ ফেলতেই তার চোখ কপালে উঠে, আজকেই শেষ তারিখ, আকাদেমির নির্দেশ ১৬ইজুন ২০৫৬-রোজ ১০ঘটিকায় সব আবিষ্কার জমা নেওয়া হবে; তার আবিষ্কারের নুমানাটাই কেবল শেষ করেছে এখনো কাজ বাকি পড়ে আছে। এই কাজের জন্য গত তিন মাস পরিবারের সাথে যাবতীয় যোগাযোগ বন্ধ রেখছে যাতে কোন রূপ সমস্যা না হয় অথচ সেই কাজটি সম্ভব হয়ে উঠেনি। এখনো কত কাজ বাকি পড়ে আছে, তার আবিষ্কারের নমুনাটি হলো- একটি হাইপ্রোমুড মাইন্ড সিস্টেম যা কোন প্রকার কথা না বলেই পরস্পর যোগাযোগ করা যায় এবং প্রত্যেকের মনের কথা জানতে পারবে যখন নিম্নপক্ষে দুইজন ব্যক্তি তা পরিহিত অবস্থায় শুধু কোন কিছু চিন্তা করবে তখন। কিন্তু কিছুই হয়নি এখনো, এসব ভাবতেই শরীরে উদ্রেকের ঠাণ্ডা শিহরন বয়ে যায়।

এমন সময় টেবিলে চোখ পড়তেই আকাশ থেকে পড়ল বলে মনে হল, এটা ভুল দেখছে নাকি হ্যালুসিলেশন, কিছুক্ষণ চোখদুটো দুহাত দিয়ে ঘষা দিয়ে বুঝল না ভুল দেখছে না। আবিষ্কার চোখের সামনে টেবিলে, কিন্তু এটা কি ভাবে সম্ভব অনেকক্ষণ ধরেই মনে করার চেষ্টা করছে যে এটা কখন তৈরি করল? অবশ্য ভুল হতেও পারে কারণ ইদানীং সজল লক্ষ্য করছে তার ছোট ছোট জিনিস মনে থাকেনা, হয়তো এটাও হতে পারে ঘুমানোর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত যথেষ্ট চেষ্টা করে সে তার সিস্টেম তৈরি করে ঘুমিয়ে পরেছে।

বিজ্ঞান একাডেমী জাক-জমক একটা পরিবেশে ভরপুর। আশেপাশে রবোমানব দিয়ে পুরো হল পরিপূর্ণ। সেই ২০১০ সালের মানুষদের মতো রবোমানবগুলোও প্রেসের এবং যত সম্ভব আজকে যেই আবিষ্কার প্রথম হবে তার ছবি সহ খবরের ইলেকট্রিক পাতায় খবর ছাপার জন্য হয়তো রবো মানবগুলোর এমন জোরালো ভিড় জমেছে। কিছুক্ষণ পর ফলাফল প্রকাশ হলোঃ চারদিক ছড়িয়ে গেল কোলাহলে, আকাদেমির প্রধানদের নির্বাচিত এবং প্রশংসিত সেই হাইপ্রোমুড মাইন্ড সিস্টেম যার আবিষ্কারক হিসেবে স্বীকৃতি পেল ড.ইশতেহার মাসুদ সজল। অন্যান্য বিজ্ঞানীদের মুখের দিকে তাকালেই এক প্রকার হিংসাত্মক রূপ ফুটে উঠল যা সজলের চোখকে ফাঁকি দিতে পারল না।

বিভিন্ন ব্যস্ততার মাঝে বাড়ি ফিরতে অনেকটা রাত হলো। ফ্রেশ হয়ে যখন হাফ-চেয়ারে গা এলিয়ে দিবে তখন তার রাগ উঠল প্রচণ্ড ভাবে। তাকে সাহায্য করার জন্য যে রোবট আছে সে কথা ভুলেই গিয়েছিল অথচ গতবার তার প্রজেক্ট হিসেবে ছিল অনুভূতি সম্পন্ন রোবট। চেয়ারে থাকা হলুদ একটা বাটনে চাপ দিলে রোবটটি তার হাতে করে একটা কফির কাপ নিয়ে হাজির হয় সজলের সামনে। এই রোবটের মাঝে সব ধরনের গুন আছে। চেয়ারে হেলান দিয়ে যখন ভাবছিল এবং খানিকটা অন্যমনস্ক হয়ে টেলিভিশন দেখছিল আকাদেমির বিভিন্ন প্রজেক্ট: তার হাইপ্রোমুড মাইন্ড সিস্টেম আবিষ্কারের জন্য যখন পুরস্কার করছিল ঠিক আকস্মিকতার সহিত এমন সময় কোথা থেকে একটি ডাক যেন ভেসে আসল- “তোমাকে ধন্যবাদ ডি-টুয়েন্টি আমরা পেরেছি” । সজলের মনে হল সে কোথাও যেন এই কথাটা শুনেছে।

[সমাপ্ত]

যোগসূত্রঃ

এক প্র-এথেন্স(বছর)= ১৫ ইউ-এথেন্স
এক ইউ-এথেন্স(মাস)= ৫ এথেন্স( উহ্য)
এক এথেন্স(সপ্তাহ)= ৬ ইথেন্স
এক ইথেন্স(দিন)= পৃথিবীর সময় অনুযায়ী ৫ দিন
ডি-টুয়েন্টি= কল্পিত নাম
ইলেকট্রিক পাতা= অত্যাধুনিক আবিষ্কার যা কোন পাতায় লিখিত কালি নয় বরং সেন্সরে দৃশ্যমান কল্পিত AI(আরটিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>