ঘুমের সময় মোবাইল পাশে? – এড়িয়ে চলুন!

অনিদ্রা – বেশির ভাগ মানুষেরই এটি এক বিরাট সমস্যা। এক দিকে এর যেমন দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব রয়েছে, তেমনি মানসিক সমস্যার মূল কারণও এই অনিদ্রা। তবে অনিদ্রার এই সমস্যাকে জয় করা সহজ বললে ভুল হবে বর্তমানের এই প্রযুক্তির দুনিয়ায়। আশেপাশে সবখানেই দিনে দিনে আমরা দেখছি নতুন প্রযুক্তি, বিজ্ঞানের নতুন কোনো আবিষ্কার। গড়ে উঠছে নতুন নতুন ক্ষুদে বিজ্ঞানী, দেখা মেলছে তাদের অসাধারণ প্রতিভার। এতকিছু মাঝেও আমাদের সাথে সব সময় একটি জিনিস থাকে। সব সময় বলতে, দিনের এবং সেই সাথে রাতের প্রায় সময়ই আমরা সে জিনিসটির সাথে সময় কাটাতে চাই বা কাটাতে হয়। জানেন সেটি কি?

বুঝেই ফেলেছেন! আমি বলছি মোবাইল ফোনের কথা। আমার বিশ্বাস ২০১৮ সালের বর্তমান দুনিয়ার উন্নতির পেছনে মোবাইল ফোনের অবদান অপরিসীম। তবে এর আবিষ্কার যে কারণে হয়েছে সেটি বাদ দিয়ে অতিরিক্ত ব্যবহার হতে পারে ভয়ানক।

আপনি যদি অনিদ্রা কাটাতে চান এবং সেই সাথে বিছানায় বালিশের পাশে যদি ফোন থাকে, তবে সেটি অবশ্যই একটি বিরাট বাঁধা। সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তবে বর্তমানে অনিদ্রার অন্যতম ভয়ানক কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এরকম ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস, যেমনঃ মোবাইল।

তাছাড়া মোবাইলের রেডিয়েশনও শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। একটি নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি রেডিয়েশন সহ মোবাইল যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। রেডিয়েশন শরীরের বিভিন্ন ধরণের জটিল রোগের কারণ হতে পারে, যেমনঃ ব্রেন টিউমার।

হাতের পাশে মোবাইল

আপনার হাতের পাশেই যদি একটি মোবাইল ফোন থাকে, তবে আপনি আর একা নন। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, আমেরিকার প্রায় ৬৩ শতাংশ মানুষ এমনভাবে ঘুমান। তবে আমাদের বিষয়টি একটু যাচাই করা উচিৎ। ২০১৮ সালে প্রকাশিত  Computers in Human Behavior  অনুসারে, যারা তাদের নিজস্ব মোবাইল ফোন কাছাকাছি না রেখে দূরে অথবা অন্য কোনো কক্ষে রেখে ঘুমান, তুলনামূলক তাদের নিদ্রা বেশি উপভোগ্য হয়। বলা যায় – “Sound sleep for a sound health!”

একবার একটা পরীক্ষা করা হলো। ৯৫ জনকে দুইটি ভিন্ন গ্রুপে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে ৪৯ জনকে ঘুমানোর সময় তাদের স্মার্টফোন কক্ষের বাইরে রেখে ঘুমাতে হবে এবং বাকি ৪৬ জন তাদের ফোন ব্যবহার করতে পারবে যেমনটা সাধারণত করে। এর সময়কাল ঠিক করা হলো এক সপ্তাহ।

যাদেরকে মোবাইল দূরে রেখে ঘুমাতে বলা হয়েছিল, তাদের কাছ থেকে নিদ্রা বেশ ভাল হয়েছিল। এমনকি এক সপ্তাহ পরে তাদের স্বভাবেও বেশ কিছু ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ করা যায়। তারা জানিয়েছিল এর মাঝে তাদের নিদ্রা, দৈনন্দিন জীবন, মানসিক অবস্থা সহ সকল বিষয়েই উন্নতি লাভ করেছে। পরিশেষে এদের মধ্যে ৯৩.৬ শতাংশ মানুষ এই অভ্যাসটি ধরে রাখতে সহমত হয়েছে।

স্মার্টফোন মানুষের উপর কি ধরণের মানসিক প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে আরো প্রচুর লেখালেখি, পরীক্ষা, গবেষণা করা হয়েছে। স্মার্টফোন ব্যবহারে সবচেয়ে বেশি আসক্ত হচ্ছে কিশোর বা কিশোরীরা। এতে তাদের জীবন বিভিন্ন ধরণের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

সুন্দর ঘুম

তাহলে বিষয়টি কি এরকম যে ঘুমের সময় আর কিছুই সাথে রাখা যাবে না, যখন হাতে কাছে মোবাইল নেই? অবশ্যই!

বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার দারুণ একটি সুযোগ রয়েছে। কথায় আছে – “বই মানুষের পরম বন্ধু”। বই পড়ে আপনি যেমন একাকীত্ব কাটাতে পারেন, তেমনি মোবাইলের স্ক্রিনের উপর থেকে চোখ সরিয়ে রাখাও হবে। তাছাড়া প্রতিটি বই আপনাকে দিতে পারে ভিন্ন ভিন্ন জ্ঞান।

কিছু পড়ে ঘুমানোর অভ্যাসটি ভাল এ কারণেই যে, সুন্দর নিদ্রা শেষে আপনি যে বিষয়টি বই পড়ে জানতে পারবেন, সেটি আপনার মস্তিষ্ক ভাল ভাবে মানিয়ে নিতে পারে।

“Sound sleep and sound mind, both of these come out with a fresh brain!”

One Comment

  1. Asif Ayan

    ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>