ড্রাগনফ্লাই-৪৪

 

অনুমান করা হয় এই যাদুর ব্রক্ষ্ণান্ডে প্রায় ২ ট্রিলিয়ন গ্যালাক্সির অবস্থান। আরো বেশীও হতে পারে। এর মধ্যে অনেকগুলো আবিষ্কার করা হয়েছে আর এর মধ্যে অনেকগুলোর চরিত্র সম্পর্কেও জানা গেছে। আজ কথা বলব সেরকমই এক গ্যালাক্সি নিয়ে।

Dragonfly-44

গ্যালাক্সির নাম ড্রাগনফ্লাই-৪৪। ২০১৫ সালে প্রথম একে চিহ্নিত করা হয়। অনুজ্জ্বল এই গ্যালাক্সির অবস্থান পৃথিবী থেকে ৩০০০ আলোকবর্ষ দূরে। একে আমাদের এই “মিল্কি ওয়ে” গ্যালাক্সির “Dark Twin” বলা হয়। এর আকার আমাদের মিল্কি ওয়ের সমান, তাই টুইন। এবার ডার্ক কেন? তার কারণ এই গ্যালাক্সির ৯৯.৯৯ শতাংশ অংশ ডার্ক ম্যাটার দিয়ে গঠিত।

Dark Matter

এবার আসা যাক ডার্ক ম্যাটার কি জিনিস? এটা সম্পর্কে কেউই স্পষ্টভাবে কিছু জানে না। বিজ্ঞানীদের ধারণা মতে ডার্ক ম্যাটার হল অদৃশ্য এমন কিছু বস্তু বা বস্তুকণা যা দিয়ে এই ব্রক্ষ্ণান্ডের ৮০ শতাংশ ভর গঠিত। তবে দেখা না গেলেও এর অস্তিত্ব রয়েছে। গ্র‍্যাভিটি বা মাধ্যাকর্ষণ বলের উপর প্রভাব ও ব্রক্ষ্ণান্ডের ভরের উপর প্রভাব এই ডার্ক ম্যাটারের অস্তিত্বের জানান দেয়।

ড্রাগনফ্লাই-৪৪ এর সম্পূর্ণ অংশের ১% এর ১০০ ভাগের ১ ভাগ মাত্র দৃশ্যমান। ৪৭ টি চিহ্নিত অতিমাত্রায় বিস্তীর্ণ গ্যালাক্সির মধ্যে একটি হল এই ড্রাগনফ্লাই-৪৪। Pieter Van Dokkum and team of Yale University এটাকে প্রথম ২০১৫ সালে Coma Cluster নামক গ্যালাক্সি পুঞ্জের মাঝে শনাক্ত করেন। প্রায় ১০০০ গ্যালাক্সির সমন্বয়ে গঠিত এই Coma Cluster। যার অবস্থান আমাদের গ্রহ হতে ৩০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে।

সত্যিকার অর্থে এই দুরত্বে কোন কিছু পর্যবেক্ষণ করা কঠিন কোন কাজ না। Hubble Space Telescope এর সহায়তায় প্রায় এক বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের বস্তু পর্যবেক্ষণ করা যায়। কিন্তু অন্ধকারাচ্ছন্নতা আর অনুজ্জ্বলতা এই গ্যালাক্সিকে প্রকাশ হতে দেয় নি।

তাই নিউ ম্যাক্সিকো হতে বিজ্ঞানীরা Dragonfly Telephoto Array Telescope এর সহায়তায় ড্রাগনফ্লাই-৪৪ কে পর্যবেক্ষণ করেন। ৮টি টেলিফটো লেন্স ও ক্যামেরা দ্বারা সুসজ্জ্বিত এই টেলিস্কোপ দিয়ে সেই সকল বিষয় পর্যবেক্ষণ করা হয় যেগুলো অন্ধকার, অনুজ্জ্বল বা অন্য কোন টেলিস্কোপ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

পর্যবেক্ষণের আগে বিজ্ঞানীরা এটিকে খুবই ছোট একটি গ্যালাক্সি মনে করেছিল। কারণ অল্প কিছু নক্ষত্র ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। অনেকের মতে, “গ্যালাক্সিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ মাধ্যাকর্ষণ বল নেই। তাই কিছু নক্ষত্র আকর্ষণ বলের ক্ষেত্র ছেড়ে বাইরে চলে গিয়েছে।”

পরবর্তীতে প্রমাণিত হয় যে,৯৯.৯৯ শতাংশ ডার্ক ম্যাটারের কারণে গ্যালাক্সির চরিত্র নির্ণয়ে ভুল-ভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল।

ডার্ক ম্যাটার বা অন্ধকার বস্তুকণা এই ব্রক্ষ্ণান্ডে সত্যিই জন্ম দিয়েছে এক অন্ধকার রহস্যের।

আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্যা ধন্যবাদ।

মো:আবিদুল ইসলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>