আপনার কাছে এটিকে একটি কৌতুক বলে মনে হতে পারে। কিন্তু এই প্রশ্নটি অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। অনেক আগে থেকেই মানুষের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে এই প্রশ্ন। প্রায় ২০০০ বছর আগে এই প্রশ্নের জন্ম। ডিম এবং মুরগি নিয়ে এই প্রশ্ন ছিলো রোমান দার্শনিকদের কাছে এক ভীতির কারণ। এবং উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের অক্ষমতা তৈরি করেছে অনেক ভুল বোঝাবুঝির। কিন্তু বর্তমানে একটি লজিক্যাল উত্তর দেওয়ার মতো রসদ আমাদের আছে। এই প্রশ্নের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে দুটি উত্তরই লজিক্যাল। কেউ চাইলেই দুটিকেই সঠিকভাবে প্রমাণ করতে পারবে।
সঠিক উত্তর কি??
রোমান দার্শনিক প্লুটার্কের কাছে এই প্রশ্নের লিখিত প্রমাণ পাওয়া যায়। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে এই প্রশ্নের জন্ম তারও অনেক আগে। তবে এই প্রশ্ন শুধুমাত্র মুরগি নয়, ডিম থেকে জন্ম নেওয়া সকল জীবের উপর প্রযোজ্য। সেসময়কার মানুষ বিশ্বাস করতো মহাবিশ্ব সবসময়ই একইরকম। এর যে একটি শুরু আছে এবং শেষও আছে, সে বিষয়ে তারা অবহিত ছিলেন না। বিবর্তনবাদ নিয়েও তাদের কোন ধারণা ছিলো না। প্রাণীকুল যে সময়ের সাথে সাথে স্বভাব,আচরণ,আকারে পরিবর্তিত হয় এটাও তাদের অজানা ছিলো। যদি তারা এগুলো জানতেন তবে এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে হয়তোবা খুব একটা সন্দিহান হতেন না।
আমাদেরর মহাবিশ্ব সবসময় একরকম নয়। এখন যে অবস্থায় আছে, আগে সে অবস্থায় ছিলো না। আরো একটি সত্য হচ্ছে বিবর্তনবাদ।প্রাণিজগতের সবটাই পরিবর্তনশীল। আমরা জানি যে মুরগি ও ডিমের আবির্ভাবের পূর্বে একটি সময় ছিলো। আর এটাই বাস্তবতা। যদি এক কথায় উত্তর দিতে চাই তবে উত্তরটি হচ্ছে ডিম।
আগে ডিম পরে মুরগি।
কিভাবে ডিম আগে??
মুরগির জাতটির আগমন সরাসরি ঘটেনি। এখানেও রয়েছে বিবর্তনবাদ। আমরা জানি যে পিতার সাথে পুত্রের ডিএনএর সম্পূর্ণ মিল থাকে। কিছুটা মাইনর চেঞ্জ থাকে যাকে বাদ দিলেও চলে। কিন্তু ৫০০ বা ১০০০ বছরে কিন্তু বেশ ভালো পরিবর্তন ঘটবে। এভাবেই কোন এক পাখির আগমন যা অনেকটা মুরগির মতো কিন্তু মুরগি না। সেই পাখিটি ডিম পারে এবং তাঁ দিয়ে বাচ্চা বের করে। আর এভাবেই ইতিহাসে নতুন একটি জাতের আগমন ঘটে। বিবর্তন রেখা এখানে মুরগির মতো দেখতে ও ডিম থেকে বের হয়ে আসে মুরগিটির মাঝে অবস্থান করছে। এ বিষয়টাকে আপনি যেভাবেই ব্যাখ্যা করুন না কেনো সময়ের বিচারে ডিমই এগিয়ে থাকবে।
অর্থ্যাৎ, প্রথম মুরগির ডিম মুরগি হতে আসেনি, এসেছে অন্য কোন একটি পাখি হতে।
মুদ্রার অপর পিঠ
উপর্যুক্ত ব্যাখ্যা থেকে অনেকেই একমত হবেন যে ডিম আগে। কিন্তু অনেকেই হবেন না। এটাই স্বাভাবিক। অনেকেই বলবেন মুরগিই আগে। এটা আসলে নির্ভর করে আপনি লজিকটাকে কিভাবে দেখছেন। Warwick and Sheffield universities এর গবেষকরা বলেছেন মুরগির ডিমের গঠন একটি নির্দিষ্ট প্রোটিনের উপর নির্ভর করে। যেটা শুধুমাত্র একটি মুরগির ওভারিতেই পাওয়া সম্ভব। তাই এর উপর ভিত্তি করে আপনি বলতেই পারেন যে ডিম যেখান থেকেই আসুক না কেনো তাকে কোন না কোন মুরগির অংশ হতে হবে। কারণ ডিম প্রোটিনের উপর নির্ভর করছে।
কিন্তু আপনি যদি মুরগি ও তার ডিম নিয়ে ইন জেনারেল কনসেপ্টে চিন্তা করেন তাহলে নিঃসন্দেহে ডিমই বিজয়ী হবে।
Leave a Reply