মোবাইল রেডিয়েশনঃ কতটুকু সত্য, কতটুকু মিথ্যে?

অহনা (কাল্পনিক) নামকরা কোনো এক কলেজে ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। এই বয়সের আর দশটা ছেলেমেয়ের মতই তার হাতেও আছে একটা স্মার্টফোন। আর বলাই বাহুল্য, ইন্টারনেট এর এই যুগে যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও রয়েছে তার ঝোঁক। সেই সুবাদে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারে কথা বলা হয় বেশ। অহনার কোনো বাজে স্বভাব নেই, কিন্তু সে ফোনে কথা অনেকক্ষণ বলে। যা তার বাবা বা মায়ের একদমই পছন্দ না। যার কারণে বুঝিয়ে বলা আর বকাঝকা দুটোরই মুখোমুখি হতে হয় তাকে। কিন্তু ইদানীং অহনা তার বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে শোনা এক নতুন খবরের পর থেকে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিয়ে বেশ শঙ্কিত। ব্যবহার পুরোপুরি ছাড়তে না পারলেও সে এখন যতটুকু সম্ভব কম কথা বলার চেষ্টা করে। আগে সরাসরি কানে ফোন ঠেকিয়ে কথা বলতো আর এখন ইয়ারফোন ছাড়া কথাই বলেনা। তার উপর ঘুমানোর সময় ফোনের ওয়াইফাই বন্ধ করে বালিশের নীচে তো দূর, আশেপাশে না রেখে বেশ দূরে রাখা ড্রেসিং টেবিলের উপরে রেখে ঘুমোয়!

তবে কারণ কি অহনার হঠাৎ মোবাইল ব্যবহারে সতর্কতার?

কারণ হচ্ছে সে শুনেছে মোবাইল ব্যবহার করলে নাকি প্রতি দশ মিনিট টানা কথা বলায় এক ডিগ্রী করে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে মাথার ভেতরে। এটা নাকি হয় মোবাইল থেকে বের হওয়া খুব শক্তিশালী রেডিয়েশন এর কারণে। কি যেন একটা অদৃশ্য শক্তি বিচ্ছুরিত হয়, তার কারণেই এটা হয়। আর এর জন্যে নাকি মোবাইল বেশিক্ষণ মাথার কাছে রাখলে অনেক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

অহনার জানা সেইসব দুর্ঘটনাগুলো হলঃ 

  •  মোবাইল মাথার কাছাকাছি বেশিক্ষণ থাকলে মোবাইল ব্লাস্ট হয়ে যেতে পারে! সাথে মাথার কি অবস্থা হবে কে জানে?!
  •  মাথার তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে একসময় বেশি তাপমাত্রায় মানুষ স্ট্রোক করতে পারে।
  •  মোবাইল বেশিক্ষণ ব্যবহারে কান অনেক গরম হয়। এই গরম হবার মাত্রা অনেক বেড়ে গেলে কান দিয়ে রক্ত বের হওয়া শুরু করতে পারে।
  •  ব্রেইন টিউমার হতে পারে।
  •  ক্যান্সার হতে পারে।

তো এত এত অভিযোগ শোনার পর, তাও কাছের বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে শোনার পর, নিশ্চয়ই অনেকের মধ্যেই ভয়টা জেঁকে বসা স্বাভাবিক। অহনার বেলায়ও তার ব্যতিক্রম হলো না।

এখন কথা হচ্ছে এই যে মোবাইল রেডিয়েশন, এর এমন ভয়াবহ প্রভাব। আসলে তা কতটুকু সত্যি? আসলে তা কতটুকু ক্ষতিকর বা প্রভাব বিস্তারকারী? ইন্টারনেট আর সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে আমরা যেমন খুব সহজেই অনেক তথ্য পেতে পারি আবার খুব সহজেই মিথ্যে বা বানোয়াট তথ্যের শিকারও আমরা হতে পারি। মোবাইল ফোন রেডিয়েশন এর ভয়ানক ভয়ানক প্রভাব, স্ট্রোক থেকে বাচতে নানারকম উদ্ভট প্রাথমিক চিকিৎসা বা সতর্কতাসহ এমন আজব আজব তথ্যে অভাব নেই আজকালকের সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে। এখন তাহলে দেখে নেয়া যাক, অহনার তার বন্ধুদের কাছ থেকে শোনা মোবাইল ফোনের ভয়াবহ প্রভাব কতটুকু সত্যি!

প্রথমত, এক কথায় বলতে গেলে বলতে হবে, “না। এখন পর্যন্ত বহু গবেষণায় কোথাও মোবাইল ফোনের কারণে ক্যান্সার হবার, টিউমার হবার বা মাথা বিস্ফারিত হবার, স্ট্রোক হবার এমন কোনো একটাও গবেষণালব্ধ প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোন যখন থেকে তার যুগান্তকারী যাত্রা শুরু করেছে, তখন থেকেই এর প্রভাব নিয়ে অনেকের মনে এমন অনেক প্রশ্ন উঠেছে আর যার দরুণ সেই শুরু থেকেই মোবাইল ফোনের প্রভাব নিয়ে নানারকম গবেষণা শুরু হয়েছে যা এখন অবধি চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত দুই দশকে করা হয়েছে মোবাইল ফোনের উপর বহু গবেষণা। আপনারা যারা গবেষণার ধাপগুলো সম্পর্কে জানেন তারা হয়তো এটাও জানেন যে গবেষণা করতে গিয়ে পরীক্ষণ পদ্ধতিতে পরীক্ষণের পুনরাবৃত্তি আর সাধারণীকরণ করা হয়। যাতে করা যেন বুঝা যায় যে গবেষণার ব্যাপারে পূর্বানুমানগুলো (Hypothesis) আদতেই সত্যি।

কিন্তু মোবাইল ফোনের প্রভাব নিয়ে বার বার ভিন্ন ভিন্ন গবেষকদের করা ভিন্ন ভিন্ন গবেষণায় এখন অবধি তেমন কোনো ক্ষতিকারক প্রভাব উঠে আসেনি যেমনটা আমরা বরাবরই সোশ্যাল মিডিয়ার খুচরা পেজগুলোতে দেখে আসি।

মনে হয়তো এখনো অনেক প্রশ্ন আছে? তাই এবার আরও গভীরে যাওয়া যাক।

প্রথমে আমাদের জানতে হবে মোবাইল ফোনের শারীরিক প্রভাব বলতে এখানে কীসের প্রভাব বুঝানো হচ্ছে?

প্রভাবটা হচ্ছে মোবাইল থেকে উৎপন্ন তরঙ্গের প্রভাব।
না, শব্দতরঙ্গ নয়, রেডিও তরঙ্গের প্রভাব
আর সকল সাধারণ তারবিহীন প্রযুক্তির মত মোবাইলও যোগাযোগের জন্যে তরঙ্গ ব্যবহার করে থাকে যে তরঙ্গকে বলা হয় Radio Frequency । Radio Frequency Energy (RF Energy) হল একধরণের Electromagnetic Radiation বা তড়িৎ-চৌম্বকীয় বিকিরণ। এই বিকিরণ বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করা প্রতিটা ডিভাইস থেকেই বলতে গেলে নিঃসৃত হয়। এই EMR আবার দুই ধরণের হয়, একটি Ionizing যার মধ্যে এক্স রে, র‍্যাডন, মহাজাগতিক রশ্নি বা কসমিক রে ইত্যাদি পড়ে। এরা হল উচ্চকম্পাঙ্কের শক্তি বা High Frequency Energy । আর অপরটা হল Non – Ionizing EMR । এগুলো আবার খুবই কম ফ্রিকোয়েন্সির বা কম্পাঙ্কের হয়ে থাকে। আর মোবাইল ফোন হল সেইসব ডিভাইসগুলোর একটি যা এই স্বল্প কম্পাঙ্কের (Low Frequency) বিকিরণ ছেড়ে থাকে। উল্লেখ্য যে উচ্চ কম্পাঙ্কে প্রতি সেকেন্ডে তরঙ্গের সংখ্যা /হার্জ বেশি কিন্তু তরঙ্গদৈর্ঘ্য (Wavelength) কম হয়। আবার স্বল্প কম্পাঙ্কে প্রতি সেকেন্ডে তরঙ্গ সংখ্যা/হার্জ কম কিন্তু তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি হয়।
প্রতিটা রেডিও-ফ্রিকোয়েন্সিই হল একেকটা তড়িৎচৌম্বকীয় (Electromagnetic) শক্তি। আর যেহেতু এটি তড়িৎচৌম্বকীয় শক্তি তাই অন্য সব EM শক্তির মতই এটার প্রাণীদেহে মিলিয়ে যাবার এবং প্রাণীদেহের একে শুষে (Absorb) নেয়ার প্রবণতা থাকে। ঠিক যেমন মাইক্রোওয়েভ ওভেনের মাইক্রোওয়েভ খাদ্য-স্থিত জলীয় অংশে পৌঁছানোর কারণে তা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বা বলা যায় তাপমাত্রার বৃদ্ধি ঘটে। আর এ কারণেই মানুষের মাথায় ক্রমে ক্রমে ধারণা এসেছে মোবাইল থেকে বিকিরিত রেডিও কম্পাঙ্কের বিকিরণ মানুষের উপর খুব ভয়ানক কোনো প্রভাব ফেলতে পারে। হতে পারে ব্রেইন টিউমার বা ক্যান্সারও! ধারণাগুলো বিকশিত হয়ে এই দুই দশকে এগিয়েছে বহুদূর!

কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে এখন পর্যন্ত চালানো গবেষণাগুলোতে মোবাইলের সিম নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি, ওয়াইফাই এর ফ্রিকোয়েন্সি (সবগুলোই রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি) কোনোটারোই এমন কোনো প্রভাব পাওয়া যায়নি। তবে উচ্চমাত্রার Ionize Radio Frequency আমাদের দেহে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। যার মাঝে রয়েছে এক্স রে। এই ব্যাপারটা বহু আগে থেকেই পরিচিত বিধায় এটাও একটা কারণ হতে পারে মোবাইল ফোনের ব্যাপারে এমন ধারণা মানুষের মনে জাগার। কিন্তু মোবাইল থেকে নিঃসৃত RF হচ্ছে নিম্নকম্পাঙ্কের এবং Non – Ionizing, নাই বা এর কোনো তেমন প্রভাবও পাওয়া গেল এখন অবধি।
প্রতিটা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি প্রাণীদেহ শুষে নেয়ার হিসেবটা করা হয় Watt Per Kilogram Tissue হিসেবে। মোবাইল ব্যবহারে তুঙ্গে অন্যতম দেশ অস্ট্রেলিয়ার Australian Radiation Protection and Nuclear Safety Agency (ARPANSA) নির্ধারিত এই শোষণ এর বর্তমানে সর্বোচ্চসীমা হল ২ ওয়াট প্রতি কেজি। এবং মজার ব্যাপার হল ফোন নির্মাতা কোম্পানীগুলো তাদের ফোন থেকে নিঃসৃত কম্পাঙ্কের এ মাত্রার ব্যাপারটা অনেকক্ষেত্রে ম্যানুয়াল এ উল্লেখ করে দিয়েই থাকে বর্তমানে। দ্বিতীয়ত আগেকার মোবাইলগুলোর ফ্রিকোয়েন্সি হার যতটুকু থাকতো তার তুলনায় এখনকার মোবাইলগুলোতে এবিষয়ে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে। উল্লেখ্য সংস্থা APRANSA এর মতে বর্তমানের স্মার্টফোনগুলোতে যতটুকু Watt Per Kilogram ক্ষমতা থাকে, তা বেধে দেয়া সর্বোচ্চসীমার চাইতে শতভাগ কম!

মোবাইল ফোন রেডিয়েশনের প্রভাব সম্পর্কে বলতে গিয়ে University of Wollongong এর প্রফেসর এবং Australian Centre of Electromagnetic Bioeffects Research এর পরিচালক Rodney Croft বলেন,

“আমরা কি ফোন ধরে কথা বলার মাধ্যমে আমাদের মাথাটাকেই মাইক্রোয়েভিং করছি? করছি বটে খুব সামান্য, কিন্তু উদ্বিগ্ন হবার মত নয়।” Rodney Croft

 

ক্রোফট ও উনার সহকর্মীদের করা গবেষণা থেকে দেখা গেল, ফোন কানে ধরে রাখার কারণে মস্তিষ্কের ধুসর বহিরাবরণ Cortex এর তাপমাত্রা বাড়ে বটে, তবে তা ০.১ডিগ্রীর মত। যা শরীরের তাপমাত্রায় প্রভাব বিস্তারকারী নুন্যতম মাত্রার চাইতে শতভাগ কম!

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “আমরা তাপ পরিচালনক্রিয়ায় সামান্য পরিবর্তন পেয়েছি। এমনকি এই সামান্য পরিবর্তনেও রক্তসঞ্চালন খানিক বাড়িয়ে শরীর তা নিয়ন্ত্রনে রাখে৷ সুতরাং এতে করে শেষতক আর আপনার দেহ উত্তপ্ত হয়ে থাকবেনা।”

এছাড়াও ২০০৮ সালে তাদের করা নোকিয়ার 2G ফোনগুলোর উপর আরেক গবেষণায় দেখা গেল মোবাইল ব্যবহারে মস্তিষ্কে উৎপন্ন আলফা তরঙ্গের হার ৫% বেড়ে যায়। স্বাভাবিকভাবে চোখ বুজে থাকলে এই হার খোলা রাখা অবস্থার দ্বিগুণও হতে পারে। সুতরাং সে হিসেবে ৫% প্রসেসর ক্রফট এর মতে অনেক কম।

উল্লেখ্য যে অস্ট্রেলিয়ায় মোবাইল ব্যবহারের সংখ্যা সেখানকার জনসংখ্যার চাইতে অনেক বেশি এবং মজার ব্যাপার হল ১৯৮২ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য জরীপে ক্যান্সারের হার মোবাইল ব্যবহারের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়েনি।

এছাড়া মোবাইল রেডিয়েশন থেকে ক্যান্সার হবার ঝুঁকির ব্যাপারে আরও একটা জিনিষ যা মাথায় রাখা দরকার তা হল মোবাইলের রেডিও ওয়েভ Non – Ionizing । যেসব শক্তি পদার্থের একেবারে পারমাণবিক গঠনে ঢুকে তার ইলেকট্রন ও অন্যান্য কণার উপর প্রভাব ফেলতে পারে সেগুলো Ionizing । কিন্তু মোবাইল ফোনের RF Low হওয়াতে তা মোটেও Ionizing নয়। দুটোর ধরণই সম্পূর্ণ ভিন্ন।

মোবাইল বা সেলফোনের উপর করা অধ্যয়নগুলো দুধরণের হয়। Case Control Study আর Cohort Study । একটিতে (CCS) টিউমারে আক্রান্ত দল ও সুস্থ দলের উপর তুলনামূলক অধ্যয়ন ও গবেষণা করা হয়। অপরটিতে (Cohort) একদল সুস্থ মানুষের সাথে তাদের তুলনামূলক অধ্যয়ন করা হয় যারা নিয়মিত ফোন ব্যবহার করে বা করেনা।

এরমধ্যে সবচে বড় অধ্যয়নটি ছিল Interphone Study যা একটি CC Study ছিল, যাতে মোট ১৩ টি দেশ থেকে গবেষকরা যোগদান করেন। কিন্তু এই অধ্যয়নটিতেও শেষপর্যন্ত দেখা গেল গড়ে অতিমাত্রায় মোবাইল ব্যবহারে মস্তিষ্কে ক্যান্সার বা ক্যান্সার উৎপন্ন-কারী টিউমার Glioma’র কোনো যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।

ডেনমার্কে করা Danish Study নামের আরেক অধ্যয়নে ৩৮,০০০ ফোন সাবস্ক্রাইবারদের বিলিং তথ্য ঘেটে তাদের টকটাইমের সাথে ব্রেইন টিউমার আর ক্যান্সারের যোগসাজশ খুঁজতে গিয়ে এক্ষেত্রেও তেমন কোনো যোগসূত্রই পাওয়া যায়নি। তাও গবেষণাটি ছিল ১৩ বছরের বিলিং তথ্যের উপর!

৭ থেকে ১৯ বছরের শিশুদের উপর করা CEFALO Study নামক আরেকটি আন্তর্জাতিক CCS এ দেখা গেল তাদের উপর মোবাইল ফোন ব্যবহারের আলাদা কোনো ক্যান্সার ঝুঁকি ধরা পড়েনি।

এছাড়াও NCI এর করা ১৯৯২ – ২০০৬ এর Surveillance, Epidemiology, and End Results (SEER) নামক অধ্যয়নেও সেলফোন ব্যবহারে টিউমার ঝুঁকি বৃদ্ধির কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও Interphone Study এর যাচাই এ সুইডিশ পোল এর রিপোর্ট আর আমেরিকান যাচাই এর রিপোর্ট একরকম না হওয়াতে তা অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়।

মোদ্দা কথা হল, একাধিক গবেষণা থেকে অন্তত এখন পর্যন্ত মানবমস্তিষ্কের উপর সেলফোনের টিউমার বা ক্যান্সার উৎপন্নে সক্ষম কোনো প্রভাব প্রমাণিত হয়নি। এ কথাটি হয়তোবা অনেকের কাছেই অগ্রহণযোগ্য মনে হতে পারে, কিন্তু আদতে এটাই সত্যি। অন্তত এখন পর্যন্ত এমন কোনো যোগসাজশ পাওয়া যায়নি!

তাহলে কি যত ইচ্ছে ফোনে কথা বলা যাবে ঘন্টার পর ঘন্টা?

আরে ভাই থামুন। গবেষণায় প্রমাণ হয়নি, তাই বলে কিন্তু প্রতিদিন টানা ঘন্টার পর ঘন্টা কানে ফোন ঠেকিয়ে বা ফোনে আটকে থাকারো মানে হয়না।
কেননা তা শারিরীকভাবে যদি আপনার ক্ষতি নাও করে, তবু আপনার দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। শুধু আপনার একার না, দুপক্ষের বেলাতেই কথাটা সত্য। ফোন আছে, কথা বলুন। কিন্তু টানা দুই ঘন্টা, তিন ঘন্টা, চার ঘন্টা কথা বলাটা আপনার আর আপনার প্রিয় মানুষটার দুইজনের জন্যেই ক্ষতিকর। কালেভদ্রে যদি বেশি কথা বলা হয়ে যায় তা ভিন্ন ব্যাপার। কিন্তু প্রতিদিন এমন ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলাটা কিন্তু উভয়েরই সময়, কাজ আর পড়াশোনার ক্ষতি করছে। অথচ একই কাজ আপনি দিনে ভাগ করে করতে পারবেন। তবে তাই বলে আবার রাতজাগাকে নিরাপদ মনে করবেন না।
ভাই, কি দরকার নিজ হাতে নিজের জীবনটাকে ঝুঁকি ফেলে ভবিষ্যৎটা অনিশ্চিত করার?

সুতরাং ফোনে পরিমিত মাত্রায় কথা বলুন, ভাল থাকুন, নিজের, পরিবারের আর কাছের মানুষটার খেয়াল রাখুন।
আর হ্যা, বিজ্ঞানবর্তিকার সাথে থাকুন।

আবারো কথা হবে হয়তো অন্য কোনো বিষয় নিয়ে।
আজকের মত আমাদের আলোচনা তবে এখানেই শেষ করছি৷

Comments are closed.