Ganeymede : সৌরজগতের সবচেয়ে বড় এবং ভারী উপগ্রহ

আমাদের এ সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ হচ্ছে বৃহস্পতি, যার রয়েছে ৬৭ টি উপগ্রহ। বৃহস্পতির সবচেয়ে বড় উপগ্রহ টির নাম ‘গ্যানিমেড’। বৃহস্পতির এই উপগ্রহটিই আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে বড় উপগ্রহ। সবচেয়ে বড় গ্রহের সবচেয়ে বড় উপগ্রহ আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে বড় উপগ্রহ।

১৬১০ সালের ৭ ই জানুয়ারি বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলি এটি আবিষ্কার করেন। তাই তার নামানুসারে এই উপগ্রহ টিকে ‘গ্যালিলিয়ান মুন’ ও বলা হয়। গ্যালিলিও এই উপগ্রহটি আবিষ্কার করলেও এর নামকরণ করেন জ্যোতির্বিদ সাইমন মরিস। গ্রিক পুরাণের দেবতা জিউসের প্রেমিকের নামে গ্যানেমিড নামকরণ করা হয়।

গ্যানিমেডই হলো সৌরজগতের একমাত্র উপগ্রহ যার রয়েছে নিজস্ব ‘ম্যাগনেটিক ফিল্ড’ বা ‘চুম্বক ক্ষেত্র’। গ্যানিমেডের ভূ-অভ্যন্তরে প্রচুর পরিমাণে গলিত তপ্ত লোহাও রয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন এই লোহাই গ্যানিমিডের ম্যাগনেটিক ফিল্ডের মূল রহস্য। গ্যানিমেড এর ব্যাস প্রায় ৫,২৬৮ কি.মি। এটি বুধ গ্রহের চেয়েও ৮% বড় কিন্তু ভর অর্ধেকেরও কম। এটির আয়তন আমাদের চাঁদের থেকে ৫ গুণ বেশি। শুধু আয়তনের দিক দিয়েই নয়,ভরের দিক দিয়েও এটি সবচেয়ে বেশী ভর সম্পন্ন একটি উপগ্রহ। চাঁদের চেয়ে গ্যানিমেডের ভর ২.০২ গুণ বেশি এবং টাইটান ( শনির উপগ্রহ) থেকে ১০% বেশি। বলা হয়,উপগ্রহটি যদি বৃহস্পতিকে প্রদক্ষিণ না করত তাহলে এটি একটি গ্রহের মর্যাদা পেত।

সিলিকেট জাতীয় শিলা ও বরফ দিয়ে এই উপগ্রহটি গঠিত। সৌরজগতের বেশির উপগ্রহের মত তার নিজ গ্রহ বৃহস্পতি থেকে এর একদিকই দেখা যায়। গ্যানিমেডের পৃষ্ঠের ২০০ কি.মি নিচে লবণাক্ত পানি থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানী রা। ১৯৯৬ সালে হাবল টেলিস্কোপ ব্যবহার করে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এর বায়ুমণ্ডল খুব পাতলা অক্সিজেন স্তরের সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা। তবে এর পরিমাণ খুব ই কম বলে জীবনধারণ এখানে সম্ভব নয়। গ্যানিমেড বৃহস্পতিকে ৭ দিন ৩ ঘণ্টায় বৃহস্পতিকে একবার প্রদক্ষিণ করে। অন্যান্য সব উপগ্রহের মত এটিও টাইডালি লকড অর্থাৎ বৃহস্পতিকে এটি একদিকে মুখ করে আবর্তন করে। গ্যানিমেডের এক অংশ একেবারে অন্ধকারাচ্ছন্ন। বিজ্ঞানীদের ধারণা এ অংশ টাই বেশি প্রাচীন।

আগামীতে বৃহস্পতির নতুন রহস্য উন্মোচন এবং গ্যানিমিডের নতুন সব তথ্যের খোঁজ পেতে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি ২০২২ সালে বৃহস্পতির উদ্দেশ্যে ‘জুপিটার আইসি মুন এক্সপ্লোরার’ শিরোনামের একটি মহাকাশযাত্রার ঘোষণা ইতোমধ্যেই দিয়েছে। সে সময় গ্যানিমিড সম্পর্কে আমরা আরো নতুন নতুন আরো অনেক তথ্য জানতে পারব।

Comments are closed.