বিশ্বের বৃহত্তম প্রবালপ্রাচীর গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের উপকূল ঘেঁষে কোরাল সাগরে এর অবস্থান। পরিবেশগত পরিবর্তনের জন্য শৈবালের মৃত্যু ঘটছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে প্রবাল প্রাচীরগুলো ধীরে ধীরে বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। ২০১০ সালে সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রবাল প্রাচীরের ব্লিচিং প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।
বিগত ৩০ হাজার বছরে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ পৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধি, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, পলিমাটি বৃদ্ধি এধরনের অনেক প্রতিকূলতার পার করেছে। এর মাঝে এটি পাঁচ বার মৃত্যুর পথে গিয়েও ফিরে এসেছে।
একটি আন্তর্জাতিক গবেষক দল তাদের নতুন এক গবেষণায় অস্ট্রেলিয়ার উত্তর কুইন্সল্যান্ডের ১৬ টি জায়গার প্রবাল-জীবাশ্ম নিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছেন।
এখানে আমরা গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের বিবর্তন সম্পর্কিত তথ্য নথিভুক্ত করেছি। প্রবাল-জীবাশ্ম থেকে ব্যাপক মৃত্তিকাতাত্ত্বিক, জৈবিক এবং ভূ-কালনিরুপণতাত্ত্বিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে গত ৩০ হাজার বছর ধরে আকস্মিক পরিবেশগত পরিবর্তন প্রকাশ পেয়েছে।গবেষক দল
[one_half]
তারা জানতে পেরেছেন ৩০ হাজার এবং ২২ হাজার বছর পূর্বে প্রবালপ্রাচীরগুলো দুইটি ভয়াবহ মৃত্যু আশঙ্কায় পড়েছিল। সে সময় তারা সমুদ্রাভিমুখে গিয়ে রক্ষা পেয়েছিল।
[/one_half][one_half_last]এরপর আরো দুবার তাদের আকস্মিক মৃত্যু হয়, সেগুলো ছিল ১৭ হাজার এবং ১৩ হাজার বছর পূর্বে। এই মৃত্যুর কারণ ছিল আকস্মিক সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি। তখন প্রবাল সমগ্র স্থলাভিমুখে যায়।[/one_half_last]
সর্বশেষ ১০ হাজার বছর পূর্বে অনেক প্রবাল মারা যায়। গবেষকদের মতানুযায়ী এটি একই সাথে ব্যাপক আকারে পানির মান কমে যাওয়া এবং সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে হয়েছে।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং হ্রাস
তথ্য চিত্রটি তৈরি করেছেন জেমস টাটল
প্রবাল প্রাচীর গুলো প্রাকৃতিক বিভিন্ন বাঁধা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে, আমাদের গবেষণা থেকে তাই লক্ষ্য করা যায়। প্রবাল প্রাচীর গুলো এখনো পর্যন্ত বিশদ মাত্রায় তাপমাত্রা পরিবর্তন এবং অম্লীকরণের সম্মুখীন হয়নি, যা তাদের জন্য ভবিষ্যতে একটি চ্যালেঞ্জ হবে।
ভূবিজ্ঞানী জডি ওয়েবস্টার, -ইউনিভার্সিটি অব সিডনী
তবে এখনো পর্যন্ত অনেকগুলো মৃত্যু আশঙ্কা পার করে যাওয়ার মানে এটা নয় যে ভবিষ্যতেও এদের বিনাশ হতে পারে না।
বিগত সময় গুলোতে প্রতি ১০ হাজার কয়েক ডিগ্রি করে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে প্রতি ১০০ বছরে ০.৭ ডিগ্রি করে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছে। এজন্যই তাদের ভবিষ্যত সম্পর্কে বলা এখনো সম্ভব না। এতটা ব্যাপক পরিবর্তনের সম্মুখীন হওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব কিনা তা নিয়ে সকলেই সন্দিহান।
গবেষণা পত্রটি Nature Geosciences-এ প্রকাশিত হয়েছে।
Leave a Reply