চশমা বাড়াবে রঙ পর্যবেক্ষণের ক্ষমতা!!!!

বিজ্ঞান প্রতিনিয়তই আমাদের তাক লাগিয়ে দেবার জন্য, হাজির হচ্ছে নতুন নতুন সব আবিষ্কার নিয়ে। আর এর মধ্যে আরও একটি সংযোজন হচ্ছে এক বিশেষ চশমা

মানুষকে সবচেয়ে বুদ্ধিমান বা সৃষ্টির সেরা জীব বলা হয়ে থাকে। কিন্তু বিশেষ কিছু দিকে অন্যান্য অনেক প্রাণী মানুষের চেয়ে ঢের এগিয়ে।

রঙ পার্থক্যকরণের দিকে থেকে মানুষ অবশ্যই প্রাণী জগতের বিশেষ কিছু না। একজন সাধারণ মানুষ মোটামুটিভাবে প্রায় ১ মিলিয়ন বা ১০ লক্ষ ধরণের রঙ শনাক্ত করতে পারে। প্রাথমিকভাবে এটিকে অনেক বড় একটি সংখ্যা বলে মনে হতে পারে। আবার আপনার এই ক্ষমতা রয়েছে বলে আপনি কিছুটা অবাকও হতে পারেন। কিন্তু গবেষকেরা এমন এক চশমার উদ্ভাবন করেছেন যা এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করবে। এই চশমা পড়ে আপনি চাইলে নিজেকে Super Human হিসেবেও দাবী করতে পারেন।

University of Wisconsin-Madison এর গবেষকেরা এক জোড়া চশমা তৈরী করেন যা আপনার রঙ শনাক্ত বা পর্যবেক্ষণের ক্ষমতা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেবে। এক কথায় আপনার চোখ যে কয়টি রঙ শনাক্তকরণে সক্ষম, এই চশমা সেই সংখ্যাটি বাড়িয়ে দেবে। এই চশমা কোন একটি নির্দিষ্ট রঙের খুব কাছাকাছি দুইটি শেডের পার্থক্য একদম স্পষ্টভাবে দেখতে সাহায্য করে। নীল রঙের দুটি শেডের পার্থ্যক্য বোঝা সবচেয়ে কঠিন। অধিকাংশ মানুষই ভালোভাবে বুঝতে পারেন না। কিন্তু এই চশমায় সেটি স্পষ্টভাবে বোঝা যাবে।

রঙ চেনার জন্য আমাদের চোখে রয়েছে কোণ কোষ। মানুষে তিনটি আকারের কোণ কোষ পাওয়া যায়। খাঁটো,লম্বা ও মাঝারি আকারের। এটি আমাদের Trichromatic Vision দেয়। Tri বলতে এখানে তিন বোঝানো হয়েছে। এই তিন বলতে নীল,সবুজ ও লাল রঙকে বোঝানো হয়। এই চশমাকে আপাতত UW-Madison glass বলা হচ্ছে। এর কার্যকারিতা দেখে এটা মনে হতেই পারে যে “চশমাটি হয়তো নতুন কোন ধরণের কোণ কোষ আমাদের চোখে সংযোজন করছে।” তিনটি মৌলিক রঙের মধ্যে শুধুমাত্র নীল রঙের সকল প্রোপার্টি এতে সংযুক্ত করা হয়েছে। তবে গবেষকেরা দ্রুতই সবুজ ও লাল রঙ নিয়ে কাজ করার কথা ভাবছেন।

তবে এখনই একে Tetrachromat Glass বলা যাবে না। তবে Tetrachromat এর দিকে একটি পদক্ষেপ অবশ্যই। তবে প্রাকৃতিক ভাবে কি মানুষের মাঝে চতুর্থ টাইপ কোণ কোষ থাকা সম্ভব?? উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ সম্ভব। তবে এ ধরণের মানুষের সংখ্যা খুবই কম। এরা প্রায় ১০০ মিলিয়ন বা ১ কোটি রঙ পার্থক্যসূচক ভাবে শনাক্ত করতে পারে। অপরদিকে সাধারণ মানুষদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা মাত্র ১০ লক্ষ।

তবে এই চশমার কাজ কি শুধুই রঙ শনাক্ত করা?? এর কি আর ব্যবহার নেই?

থিসিস পেপার অনুযায়ী বা তাত্ত্বিকভাবে বলা যায় ছদ্মবেশ শনাক্তকরণ, নকল শনাক্তকরণ, ডেটা ভিজুয়ালাইজেশন ইত্যাদি ক্ষেত্রে এই চশমা ব্যবহার করা যাবে।

এই চশমার ক্ষেত্রে ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় যে, চোখ নামক মানবদেহের এই সংবেদী অঙ্গের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে এটি সামনে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে।

আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্যা ধন্যবাদ।

মো: আবিদুল ইসলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>