বরফযুগে পৃথিবী (পর্ব ০২)- বরফযুগের ইতিহাস

গত পর্বে উল্লেখ করেছিলাম যে, বরফযুগ হচ্ছে একটি দীর্ঘ সময়কাল যেখানে পুরো পৃথিবী বরফের চাদরে ঢেকে থাকে এবং ছিল। আর এই বরফযুগ প্রায় হাজার বছর ধরে চলতে থাকে (প্রায় ১১,০০০ বছর)। এই সম্পূর্ণ সময়কাল ব্যাপি শীতকালের পাশাপাশি গ্রীষ্মকালীন চক্র চলতেই থাকে। বিজ্ঞানীরা যেসকল তথ্য এখন পর্যন্ত উপস্থাপন করেছেন, সেই তথ্যগুলোর মতে এক একটি বরফযুগ কিছু বিরতির মধ্য দিয়ে চলাচল করে। যেমন কয়েক শত বছর ধরে যদি শীত বেশি পড়লে পরের বছরগুলোতে একটু বেশিই গরম অনুভূত হয়। এটা অনেকটাই ঋতু চক্রের মতো, শুধু শত বছর পর পর পরিবর্তিত হয়। চলুন, ইতিহাস থেকে কিছু জেনে নেওয়া যাক।

বরফযুগের আবিষ্কার

আজকের এই পৃথিবী সম্পর্কে আমরা যা কিছুই জানি সবই কারো না কারোর আবিষ্কারের ফল। বিজ্ঞানীরা সব সময় নতুন কিছু আবিষ্কারের নেশায় মগ্ন থাকেন। সেই আবিষ্কার গুলো কিছু প্রশ্ন থেকে এসেছে, ‘কেন?’ এবং ‘কিভাবে?’। সেই থেকে আমরা জানতে পেরেছি পৃথিবী ৪.৬ বিলিয়ন বছর পূর্বে তৈরি হয়েছিল, কন্টিনেন্টগুলো ৩.২ বিলিয়ন বছর আগ থেকে তৈরি হওয়া শুরু হয়েছিল, এমন আরো অনেক কিছুই জানতে পেরেছি।

চিত্রঃ কার্ল ফ্রেড্ররিচ

‘বরফযুগ’, কথাটি সর্বপ্রথম উপস্থাপন করেন বিজ্ঞানী কার্ল ফ্রেডরিচ জিম্পার ১৮৩৭ খ্রিষ্টাব্দে। তিনি একজন জার্মান উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ছিলেন। মাথায় প্রশ্ন ঘুরপাক খেতেই পারে, একজন উদ্ভিদ বিজ্ঞানী কিভাবে বরফযুগের ধারণা দেন? ঘটনাটা ছিলো, তিনি বাভারিয়ান উপত্যকার আলপাইন উচুভূমিতে ‘মস’ (এক প্রকার ছোট উদ্ভিদ) নিয়ে গবেষণা করছিলেন। তার মধ্যে তিনি লক্ষ্য করেন, যে বড় নুড়ি পাথরের উপর মসগুলো জন্ম নিয়েছিল সেগুলো উপর একপ্রকার ঘর্ষণের দাগ পাওয়া যায়। এই প্রকার ঘর্ষণের দাগ শুধু মাত্র বড় কোনো বরফের চাই কিংবা হিমবাহের চলাচলের সময় তৈরি হয়ে থাকে। কিন্তু ঐসময়, সেখানে কোনো প্রকার হিমবাহ বা বরফের চাই পাওয়া যায় নি। তিনি একটি তত্ত্ব উপস্থাপন করেন যে, হিমবাহ তার চলাচলের সময় নুড়ি পাথরগুলোকে তার নিজের অবস্থান থেকে সরিয়ে এখানে এনে ফেলেছিল। তিনি ধরণা করেন, ঐসময় পৃথিবীর তাপমাত্রা খুবই কম ছিলো এবং পানি বরফ আকার ধারণ করে। (তথ্যসূত্রঃ Discovering the Ice Ages. International Reception and Consequences for a Historical Understanding of Climate. -Kruger, Tobias (2013))

চিত্রঃ লুইস আগাজিজ

কার্ল ফ্রেডরিচ জিম্পার, উনার বন্ধু বিজ্ঞানী লুইস অ্যাগাসিজ ‘র সাথে এই সম্পর্কে কথা বলেন। ১৮৩৬ বা ১৮৩৭ খ্রিষ্টাব্দের শীতের সময়ে, কার্ল ফ্রেডরিচ এবং লুইস অ্যাগাসিজ হিমবাহের একটি তত্ত্ব দাঁড় করান। আর তার মাঝে কার্ল ফ্রেডরিচ ‘বরফযুগ’ কথাটি উল্লেখ করেন এবং হিমবাহের সাথে এর সম্পর্ক সংযুক্ত করেন। ১৮৩৭ খ্রিষ্টাব্দে, লুইস অ্যাগাসিজ নিউচ্যাটেলে অবস্থিত সুইস সোসাইটি নামক প্রতিষ্ঠানের একটি অনুষ্ঠানের সকলের সামনে নিজেদের তত্ত্বটি প্রকাশ করেন। যেহেতু তত্ত্বটি সমসাময়িক সকল ধ্যানধারনার বাইরে ছিলো, প্রায় উপস্থিত সকলেই তা প্রত্যাহার করে। কারণ সকলেই জানেন, পৃথিবী তৈরি হওয়ার পর থেকে শুধু ঠান্ডা হয়েই আসছে। তার মাঝে অন্য কোনো ধরণের পরিবর্তন হওয়া অস্বাভাবিক। (তথ্যসূত্রঃ Discovering the Ice Ages. International Reception and Consequences for a Historical Understanding of Climate. Page 173- Kruger, Tobias (2013))

কিন্তু বিজ্ঞানী লুইস অ্যাগাসিজ নিজেই মাঠে নেমে বিভিন্ন পরীক্ষা করে দেখেন। দি ছারপেন্টিয়ার (হিমবাহ তত্ত্ব নিয়ে কাজ করছিলেন), লুইস অ্যাগাসিজ এর কাজে সহযোগীতা করতে রাজি হয়। অবশেষে লুইস ১৮৬৬ সালে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, পৃথিবীতে বরফযুগ এসেছিলো এবং তা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। তারপর ১৮৭৫ সালে জেমস ক্রল তার প্রকাশিত একটি আর্টিকেলে বরফযুগ সম্পর্কে উল্লেখ করেন। সেখানে তিনি ঐ সময়কার আবহাওয়া এবং ভূতাত্ত্বিক বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

বরফের পাঁচটি প্রধান যুগ

বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর ইতিহাসের পাঁচটি উল্লেখযোগ্য বরফযুগ সম্পর্কে তথ্য উপস্থাপন করেছেন। বরফযুগগুলো হচ্ছে,

  • হুরোনিয়ান বরফযুগ (২.৪-২.১ বিলিয়ন বছর পূর্বে)
  • ক্রায়োজেনিয়ান বরফযুগ (৮৫০-৬৩৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে)
  • অ্যান্ডিন-সাহারান বরফযুগ (৪৬০-৪৩০ মিলিয়ন বছর পূর্বে)
  • কারু বরফযুগ (৩৬০-২৬০ মিলিয়ন বছর পূর্বে)
  • কোয়াটেরনারি বরফযুগ (২.৬ মিলিয়ন বছর থেকে এখন পর্যন্ত চলমান)

গত ১ মিলিয়ন বছরের মধ্যে প্রায় ডজন খানে হিমবাহের সৃষ্টি হয়েছে।

হুরোনিয়ান বরফযুগ (২.৪-২.১ বিলিয়ন বছর পূর্বে)

হুরোনিয়ান বরফযুগ আজ থেকে প্রায় ২.৪ বিলিয়ন বছর পূর্বে সংঘঠিত হয়েছিল প্রোটেরোজোয়িক যুগে। এই বরফযুগের আগমন ঘটে ২.৫ বিলিয়ন বছর পূর্বের বৃষ্টি পাতের পর। তখন পৃথিবীর বায়ু মন্ডল অনেকাংশে তৈরি হয়েছিলো। এই যুগটি শুরু হয়েছিল এমন এক সময়ে যখন পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়তে থাকে। তখন বাতাসে প্রচুর পরিমাণে মিথেন গ্যাস ছিলো। বাতাসে বাড়তে থাকা অক্সিজেন গ্যাস, মিথেনের সাথে বিক্রিয়ায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং পানি তৈরি করতে থাকে। স্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রা কমে আসতে থাকে। আর সেটি হিমবাহের সূচনা করতে থাকে।

চিত্রঃ হুরোনিয়ান বরফযুগে পৃথিবী অবস্থা

আর্থার ফিলেমন কোলম্যান ১৯০৭ সালে সর্বপ্রথম হুরোনিয়ান যুগের কথা উল্লেখ করেন। তিনি “লেক হুরোন” ‘র ভূতাত্ত্বিক ক্রিয়াকলাপের বিশ্লেষণের মাধ্যমে এটি প্রকাশ করেন। তিনি এতে কিছু গঠন প্রকৃতি লক্ষ্য করেন যেখানে দুই ধরণের পলললের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এই পললগুলোকে ‘নন-গ্লেসিয়াল ডিপোজিট” বলা হয়। এই পললল্গুলো এখানে প্রায় ২.৫-২.২ বিলিয়ন বছর পূর্বে জমা হয়। (তথ্যসূত্রঃ  তাছাড়া হিমবাহের চলাচলের মাধ্যমে কিছু পলল বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। আবার গোগান্ডা গঠনের সময় এগুলো সেখানে জমা হয়েছিল। তাছাড়া যেসকল জায়গায় হুরোনিয়ান সময়ের পলল পাওয়া গিয়েছে সেগুলো হচ্ছে, মিশিগান (২.১ বিলিয়ন বছর), ব্ল্যাক হিলস ( ২.৬-১.৪ বিলিয়ন বছর), কানাডার উত্তর অংশে, গ্রিকোয়াটাওন বেসিন (২.৩ বিলিয়ন বছর), ভারত (১.৮ বিলিয়ন বছর), আস্ট্রেলিয়া (২.৫-২.০ বিলিয়ন বছর)। (তথ্যসূত্রঃ Huronian Glaciation. Encyclopedia of Astrobiology- Andrey (2014))

এই বরফযুগের কারণে অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছিল বলে বিজ্ঞানীদের অভিমত। হুরোনিয়ান বরফযুগের পূর্বে যেসকল প্রাণীর আবির্ভাব ঘটেছিল, তারা অক্সিজেন ছাড়া বাঁচতে পারতো। কিন্তু বরফযুগের পরবর্তি সময়ে প্রানীগুলো অক্সিজেনের সাথে মানিয়ে নেয়। তার মাঝেই আবির্ভাব ঘটে সায়ানোব্যাক্টেরিয়ার। তারপর থেকেই মূলত সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়তে থাকে। কিন্তু এতে সমস্যা হয়েছিলো, গ্রিন হাউজ গ্যাস কমতে থাকে আর পৃথিবীর তাপমাত্রাও কমতে থাকে। যার ফলে পুরো পৃথিবী বরফের তলায় চাপা পড়ে যায়। (তথ্যসূত্রঃ “The Paleoproterozoic snowball Earth: A climate disaster triggered by the evolution of oxygenic photosynthesis”- Kopp, Robert (14 June 2005))

ক্রায়োজেনিয়ান বরফযুগ (৭২০-৬৩৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে)

ক্রায়োজেনিয়ান একটি ভূতাত্ত্বিক সময়কাল। এই সময়কালের উপর ভিত্তি করে এই বরফযুগটি দুই ভাগে বিভক্ত। স্টারসিয়ান এবং মারিনোয়ান হিমবাহ কাল। এই যুগ সম্পর্কে সর্বপ্রথম ধারণা দেয় ‘ইন্টারন্যাশানাল কমিশন অন স্ট্র্যাটিগ্রাফি’ ১৯৯০ সালে। ক্রায়োজেনিয়ান যুগ মূলত পাথরের কার্বন ডেটিং এর মাধ্যমে সময়কাল নির্ধারন করা হয়েছিল, যা ছিল ৮৫০ মিলিয়ন থেকে ৬৩৫ মিলিয়ন বছর। কিন্তু পরবর্তিতে ২০১৫ সালে তা পরিবর্তিত হয়ে ৭২০ মিলিয়ন বছর করা হয়।

চিত্রঃ ক্রায়োজেনিয়ান বরফযুগে পৃথিবী

ক্রায়োজেনিয়ান মূলত দুইটি হিমবাহ কালে বিভক্ত। একটি হচ্ছে স্টারসিয়ান হিমবাহ অপরটি হচ্ছে মারিনোয়ান হিমবাহ। স্টারসিয়ান হিমবাহ স্থায়ী হয় ৭২০-৬৬০ মিলিয়ন বছর এবং মারিনোয়ান হিমবাহ ৬৩৫ মিলিয়ন বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। একটা তত্ত্ব গঠিত হয়েছিলো সমুদ্রের উপর যাকে বলা হতো “স্নোবল আর্থ”। এটি এই বরফযুগে সংঘঠিত হয়েছিলো বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। (তথ্যসূত্রঃ Geodynamic controls on glaciation in Earth history, in Earth’s Glacial Record. -Cambridge University)

অ্যামিবার (আরসেল্লিনিডা) ফসিল পাওয়া যায় ক্রায়জেনিয়ান সময়ে। স্পোঞ্জের সবচেয়ে পুরনো প্রজাতির এই যিগেই পাওয়া যেত। তাছাড়া কিছু কিছু বিজ্ঞানীদের মতামত অনুযায়ী, জলজ উদ্ভিদ যেমন সবুজ শেওলা, লোহিত শেওলা পাওয়া যেত। এছাড়াঅ কিছু ডাইনফ্লাজিলেটস, অ্যামিবার ফসিল পাওয়া যায়। এই বরফযুগের শেষের দিকে মহাসমুদ্রে ব্যাক্টেরিয়ার পরিমাণ কমতে থাকে। (তথ্যসূত্রঃ Possible animal-body fossils in pre-Marinoan limestones from South Australia”. Nature GeoscienceFrederik J. (17 August 2010))

অ্যান্ডিন-সাহারান বরফযুগ (৪৬০-৪৩০ মিলিয়ন বছর পূর্বে)

অ্যান্ডিন-সাহারান বরফযুগ ৪৬০ থেকে ৪৩০ মিলিয়ন বছরের মাঝে সংঘঠিত হয়। এই সময়কাল নির্ধারিত হয় অর্ডোভিসিয়ান এবং সিলুরিয়ান যুগ। ৪৪০ মিলিয়ন বছর পূর্বের একটি হিমবাহের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। যার মতে এটি পশ্চিম আফ্রিকার সাহারায় অবস্থিত। তাছাড়া এর প্রমাণ পাওয়া যায় মরক্কো, মধ্য-পশ্চিম সৌদি আরাবিয়া, এবং মেরুর অক্ষাংশগুলোতে। অর্ডোভিসিয়ানের শেষ থেকে সিলুরিয়ানের প্রথমাংশ পর্যন্ত সময়ের মাঝে হিমবাহটি উত্তর আফ্রিকা থেকে দক্ষিণ আমেরিকায় স্থানান্তরিত হয়েছিল। (তথ্যসূত্রঃ Metastability of the Chafee-Infante equation with small heavy-tailed Lévy Noise.- Högele, M. A. (2011))

চিত্রঃ আন্ডিন-সাহারান বরফযুগ

এই বরফযুগটি আফ্রিকা এবং পূর্ব ব্রাজিলের সবটুকু জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ছিলো। বর্তমানে যেখানে আমাজন জঙ্গল অবস্থিত, ঠিক সেই জায়গাটিই এক সময়ে বরফের চাদরে ঢেকে ছিলো। এই বরফযুগটি মূলত ক্রায়োজেনিয়ান এর প্রভাবে সংঘঠিত হয়েছিল বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। এই সময় কালের মধ্যেই আরেকটি বরফযুগের সৃষ্টি হয়েছিল যা ক্যারু বরফযুগ নামে পরিচিত।

কারু বরফযুগ (৩৬০-২৬০ মিলিয়ন বছর পূর্বে)

কারু বরফযুগ, যা পুরতন প্যালিউজোইক বরফঘর নামেও পরিচিত। এটি সংঘঠিত হয়েছিল ৩৬০ থেকে ২৬০ মিলিয়ন বছরের মধ্যে। এটি পৃথিবীর ইতিহাসের ২য় বৃহত্তম বরফযুগ বা হিমবাহকাল। এটির নামকরণ “টিললাইট” উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছিলো, যা সাউথ আফ্রিকার কারু বেসিনে পাওয়া গিয়েছিলো ১৯ শতকের দিকে। ভূতাত্ত্বিক ক্রিয়াকলাপের কারণে লাওরেশিয়া, গোন্ডয়ানা, আন্টার্কটিক ‘র সাথে সংযুক্ত ছিলো। ঐসময়ে রিক মহাসমুদ্র এবং ইপেটাস মহাসমুদ্রে উষ্ণ বায়ু প্রবাহ কমে যায়। একই ঘটনার পুনরাবৃত হয়েছিল প্যান্থালাসা মহাসমুদ্রে, যা ধীরে ধীরে পৃথিবীর তাপমাত্রা কমাতে থাকে। আল্পাইন পর্বতের হিমবাহ বাড়তে থাকে এবং তা সম্পূর্ন গোন্ডুওয়ানায় ছড়িয়ে পড়ে।

মোটামুটি ২ টি হিমবাহ এখন পর্যন্ত সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। দুটি হচ্ছে,

  • মিসিসিপিয়ান উপযুগের (সম্পূর্ণ সময়ের খন্ড ভাগ) সময়ে বরফের চাদর দক্ষিণ আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমারিকায় পাওয়া যায় যা ছিল ৩৫৮-৩১৮ মিলিয়ন বছর পূর্বের।
  • পেন্নিসাল্বানিয়ান উপযুগের সময়ে বরফের চাদর আস্ট্রেলিয়া এবং ভারত পর্যন্ত বিস্তৃত ছিলো।
চিত্রঃ কারো বরফযুগ

এই বরফযুগে অক্সিজেনের পরিমাণ ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত উঠে আসে। আর কার্বন-ডাই-অক্সাইড এর পরিমাণ ৩০০ পিপিএম এর নেমে আসে। এই ক্ষেত্রে অনেকজন অনেক ধরণের মতামত দিয়েছেন। তুলনামূলকভাবে যেটা গ্রহণ করা যায়, গ্রীণহাউজ গ্যাসের পরিমাণ হ্রাস পাওয়া। আবার এই বরফযুদ শেষ হয়েছিলো গ্রীণহাউজ গ্যাসের জন্যই। (তথ্যসূত্রঃ Geology of Ethiopia: A Review and Geomorphological Perspectives & History.com)

চিত্রঃ প্যালিওজোয়িক যুগে হিমবাহের চলাচলের নিদর্শন

পুরতন প্যালিউজোয়িক বরফঘর, ঐসমযয়ে অক্সিজেনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ক্রমবর্ধমান অক্সিজেনের জন্য  গাছপালা এবং প্রাণীর বিবর্তনে বড় প্রভাব ফেলেছিল। অক্সিজেনের এরূপ উচ্চ ঘনমাত্রার কারনে উদ্ভিদ এবং প্রাণী দেহে মেটাবলিক কার্যকলাপ বেড়ে যায়। এর ফলে বড় বড় প্রাণী এবং উদ্ভিদের আবির্ভাব হতে থাকে এই পৃথিবীতে। এই যুগের শেষে পৃথিবীতে সবুজায়ন বৃদ্ধী পায়। গাছপালায় ফুলের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এই বরফযুগেই সাইক্লোথার্মস সামুদ্রিক পরিবেশে জমা হয়েছিলো। (তথ্যসূত্রঃ  Geodynamic controls on glaciation in Earth history, in Earth’s Glacial Record by Cambridge)

বাকি বরফযুগ নিয়ে পরবর্তি পর্বে ফিরে আসবো ইনশাআল্লাহ। সেখানে আপনারা জানতে পারবেন বর্তমান পৃথিবীর বায়ুমন্ডল এবং জলবায়ুর রহস্য।

Comments are closed.