কুকুর কেন কারণ ছাড়া ঘেউ ঘেউ করে?
আপনি হয়তো ভাবছেন কুকুরের কাজই তো ঘেউ ঘেউ করা. না হলে সে কিভাবে প্রভুভক্তির পরিচয় দেবে? যখন সবাই গভীর ঘুমে, তখন রাত জেগে কুকুর পাহারা দেয়। চোর বা কোন দুর্বৃত্ত এলে ঘেউ ঘেউ করে ওঠে। কুকুরের কাজ কুকুর করবে এর আবার কারণ খোঁজার কি আছে। হ্যাঁ এটা ঠিক। কিন্তু এখানে কুকুরের স্বাভাবিক আচরণ এর কথা হচ্ছে না।
ধরুন অ্যাম্বুলেন্স যাচ্ছে। তার সাইরেনের শব্দ শুনে রাস্তার পাশের কুকুরটা ঘেউ ঘেউ করে উঠলো। অথবা বিকট শব্দে ঢাকঢোল পিটিয়ে কোন মিছিল যাচ্ছে। আশে পাশে কুকুর থাকলে ঘেউ ঘেউ করে উঠবে। এর একটা ব্যাখ্যা হতে পারে এই যে, তীব্র শব্দ সহ্য করতে পারে না বলেই হয়তো কুকুর ওরকম করে। কিন্তু একই শব্দের আঘাতে বিড়াল তো অস্থির হয়ে মিউ মিউ করে ওঠে না।
কুকুরের এভাবে ঘেউ ঘেউ করে ওঠার পেছনে একটি কারণ থাকতে পারে তা হল সাইরেনের আওয়াজ শুনে সে হয়তো ভাবে অন্য কোন কুকুর ডাকছে। তাই তার প্রত্যুত্তরে সেও ডেকে ওঠে। এই স্বভাবজাত প্রতিক্রিয়ার ঐতিহাসিক পটভূমি রয়েছে। আদিম যুগে বনেজঙ্গলে কুকুরেরা খাদ্যের সন্ধানে দলবেঁধে ঘুরতো আর শিকার পেলেই ঘেউ ঘেউ করে একে অপরকে সংকেত প্রেরণ করত। বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য এই আচরণগত অভ্যাসটি বংশানুক্রমে বয়ে চলেছে। সাইরেনের শব্দ হুবহু কুকুরের আওয়াজ এর মত না হলেও তার সুরের ওঠানামার কোন একটি পর্যায় কে কুকুর স্বজাতির কাওকে মনে করে ঘেউ ঘেউ করে ওঠে।
অন্যদিকে বিড়াল একা একাই স্বীকার করে। দলবদ্ধ হয়ে থাকে না। তাই সাইরেনের আওয়াজ এ সে নির্বিকার। অনেক সময় দেখা গেছে কয়েকজন বন্ধু বাসার বারান্দায় বসে সমস্বরে গান গাইছে। কেউই পেশাদার শিল্পী না হওয়ার কারনে সুরের ওঠানামায় ছন্দপতন হচ্ছে। এ সময় হয়তো বাসার পোষা কুকুরটা এসে ঘেউ ঘেউ শুরু করল। তার কারণ সে হয়তো ওই বেসুরো গানের কোনো একটা কলিকে স্বজাতির কারো আহ্বান ভেবে তার প্রত্যুত্তরে অনুভূতি ব্যক্ত করা কর্তব্য মনে করেছে!! কুকুরের ঘেউ ঘেউ করা নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। এ ব্যাপারে ডেসমন্ড মরিস নামের একজন ব্রিটিশ প্রাণীদের লেখা why dogs burk শিরোনামের গ্রন্থটিতে প্রশ্নোত্তর আকারে অনেক কিছু জানা যাবে। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো সাম্প্রতিকালে একটি সফটওয়্যার প্রণীত হয়েছে যা দিয়ে কুকুরের ডাকের অর্থ বের করা সম্ভব।
জ্বর হয় কেন?
দিব্বি খাচ্ছেন, ঘুমাচ্ছেন কিন্তু হঠাৎ করেই দেখা গেল সারা শরীর গরম হয়ে গেছে। মাথাটা কেমন যেন টিপটিপ করছে। কখনো কখনো হয়তো শরীরের কোন জায়গায় ব্যথা করছে। কাঁপুনিও হতে পারে। কখনো কখনো বাইরে থাকলে বাসায় এসেই বিছানায় ধপাস। কেউ না বললেও আপনি নিজেই বুঝতে পারলেন যে আপনার জ্বর হয়েছে। থার্মোমিটার দিয়ে মেপে দেখা গেল আপনার শরীরের তাপমাত্রা যেখানে ৯৭ ডিগ্রী ফারেনহাইট থেকে ৯৮ ডিগ্রী ফারেনহাইট থাকার কথা সেটা বেড়ে অনেক উপরে উঠে গেছে।
শরীরের এই তাপ বেড়ে যাওয়ার অর্থই হল আপনার শরীরে পাইরোজেন ( Pyrogen ) উৎপন্ন হয়েছে। পাইরোজেন কে বলা হয় তাপ সহনীয় জীবাণুঘটিত বিষ। ইংরেজিতে একে বলা হয় থার্মোস্ট্যাবল ব্যাকটেরিয়াল টক্সিন ( Thermostable bacterial toxin )। আপনার শরীরের ভেতর যেসব অঙ্গ দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রাখে, পাইরজেন সেগুলো অকেজো করে দেয়। আর এর ফলেই শরীরে জ্বর দেখা দেয়। চিকিৎসকরা এই ধরনের সমস্যাকে পাইরেক্সইয়া ( pyrecxia) বলে। অবশ্য চিকিৎসকরা কি বলেন জানেন? তারা বলেন, জর আসলে কোন রোগ নয়। কোন কারণে দেহে পায়ের ওজন বেড়ে গেলে জ্বর হয়।
মৃত্যুর পর মানুষের কি হয়? বিজ্ঞান এ সম্পর্কে কি বলে?