১০০০ বছর পরে কেমন হবে মানুষ?

বিবর্তন এই পৃথিবীর এক স্বাভাবিক নিয়ম। প্রতিটি প্রাণী সময়ের সাথে নিজের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করেছে। পরিবেশ প্রতিনিয়ত তার রূপ পাল্টাচ্ছে, তাই টিকে থাকার জন্য পরিবর্তন আবশ্যক। আজকের মানুষ শুরুতে এরকম ছিল না। সময়ের সাথে, পরিবেশের সাথে গা ভাসিয়ে চলতে চলতে আজ দুপায়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যেহেতু মানুষ ১০০০ বছর আগে আজকের অবস্থায় ছিল না, ঠিক তেমনি ১০০০ বছর পরেও এরকম থাকবে না।

উচ্চতা

প্রতিটি মানুষ জেনারেশন টু জেনারেশন সর্বক্ষণই পরিবর্তিত হচ্ছে। সামনে মানুষের অধিকতর লম্বা হওয়ার খুব বড় একটি সম্ভাবনা রয়েছে। গড় উচ্চতা শেষ ১৩০ বছর ধরে নিয়মিত ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৮৮০ সালে আমেরিকান পুরুষদের গড় উচ্চতা ছিল ৫’৭” আর এখন সেটি ৫’১০”।

যান্ত্রিক জীবন

মানবজীবন অনেকটাই যন্ত্র নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। সম্পূর্ণ যান্ত্রিকতার পথে আমাদের জীবন। অতিরিক্ত যান্ত্রিকতার কারণে পঞ্চনেন্দ্রিয়ের সক্ষমতা কমে যাওয়া উচিত। আর এতে অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই সামনে মানুষের শ্রবণ শক্তি, দৃষ্টি শক্তি, স্বাস্থ্যের অবস্থা আরও উন্নত হওয়ার অনেক বড় একটি সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন আজকে এইডস এমন এক রোগ যার পরিণতি মৃত্যু, এর কোন প্রতিষেধক নেই। কিন্তু ১০০০ বছর পরে হতে পারে কারো আর এইডস রোগ হবে না, প্রাকৃতিক ভাবেই শরীরে এর এন্টিবডি তৈরী হবে।

শারীরিক অবস্থা

University of Oregon এর বিশেষজ্ঞরা একধরণের বায়োনিক চোখের উপর কাজ করছেন। আর এই চোখ অন্ধদের দেখতে সাহায্য করবে। নিয়মিতভাবে এই চোখ নিয়ে কাজ চলছে। হয়তোবা অদূর ভবিষ্যতে এই চোখ দিয়ে আমরা এমন সবকিছু দেখতে পাব যা বর্তমানে আমাদের কাছে অদৃশ্যমান। যেমন: ইনফ্রারেড-রে, এক্স-রে ইত্যাদি।

অর্থ্যাৎ এমন এক সময় আসবে যখন শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য আর আর্টিফিশিয়াল হাত-পা বা অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গদের প্রয়োজন হবে না। এক্ষেত্রে পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়ার জন্য মানবদেহের জিন মাইক্রোস্কপিক বা আনুবীক্ষণিক স্তরে বিবর্তিত হবে।

এর উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, অক্সফোর্ড-লেড নামক এক পরীক্ষায় পরিচালকবৃন্দ দক্ষিণ আফ্রিকার এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত কিছু শিশুর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া করেন। এখানে তারা ঐ শিশুদের উন্নত খাদ্য, বাসস্থান সহ সকল সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করেন। এর ফলে ঐ শিশুদের শরীরে এক ধরণের প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে উঠে যা এইচআইভি ভাইরাসের আক্রমণকে এইডসে রূপান্তরিত হতে বাধা দেয়।

আধুনিক জিন এডিটিং পদ্ধতি ক্রিসপারের সাহায্যে আমরা চাইলে জিন ও ডিএনএ কন্ট্রোল করতে পারি। ফলে যেকোন ভাইরাসের প্রতিরোধক যোগ করা বা ভাইরাসের আক্রমণকে রিভার্স করা এখন খুবই সহজ।

মঙ্গলে যাত্রা

মানুষ দ্রুত বিবর্তনবাদের দিকে একধাপ এগিয়ে যাচ্ছে মঙ্গল গ্রহে মানব সভ্যতা বিকাশ করার জন্য নেয়া পদক্ষেপগুলো মাধ্যমে। মঙ্গল গ্রহ পৃথিবীর তুলনায় শতকরা ৬৬ ভাগ কম আলো গ্রহণ করে। তাই হতে পারে সেখানে যাওয়া মানুষগুলো অন্যদের তুলনায় অতিরিক্ত আলো শোষণের এক ক্ষমতা লাভ করবে।

মঙ্গলের মহাকর্ষীয় বল পৃথিবীর তুলনায় অনেক কম। তাই সেখানে জন্ম নেওয়া মানুষ পৃথিবীর যেকোন মানুষের তুলনায় অনেক লম্বা হবে। American Aerospace Engineer, Robert Zurbin এর মতে পৃথিবীর কোন মানুষ মঙ্গলে গেলে দূর্বল মহাকর্ষীয় বলের কারণে আকস্মিকভাবে Human spine বা মানুষের মেরুদন্ড বৃদ্ধি পাবে ও উচ্চতা কয়েক ইঞ্চি বেড়ে যাবে।

মঙ্গল গ্রহে মানবসভ্যতা স্থাপনের মাধ্যমেই ঘটবে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিস্ফোরণ।

সাম্প্রতিক সময়ে বেশ দারুণ একটি বিষয় নিয়ে ইটালি ও চীনের গবেষকরা কাজ করছেন। Head Transplant বা মস্তক প্রতিস্থাপন। গবেষকরা ক্ষুদ্র প্রাণীর উপর এই পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। গবেষকেরা মস্তকের পাশাপাশি চেতনাশক্তিও এক শরীর থেকে আরেক শরীরে প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করছে। যদি তারা সফল হন, তবে তারা মানবদেহে মস্তক ট্রান্সপ্লান্টের মত বড় পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী।

আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্যা ধন্যবাদ।

2 Comments

  1. kamruzzaman Emon

    মানুষের ভবিষ্যত নিয়ে অনেকগুলো ঘটনা চৎকারভাবে আলোচনা করা হয়েছে। লেখককে ধন্যবাদ সম্ভাবনাগুলো ফুটিয়ে তোলার জন্য।

  2. Anonymous

    thank you for the information.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>