মানব ক্লোনিং হলো একটি মানুষের জেনেটিক্যালি হুবহু প্রতিকৃতি তৈরি করা।মোটকথা,কৃত্রিমভাবে একটি মানুষ তৈরি করা। মানব ক্লোনিং করা হয় খুবই জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। বিজ্ঞানীদের অনেক দিনের ফল এই হলো ক্লোনিং। পৃথিবীর সর্বপ্রথম সফল ক্লোনিং’য়ের উদাহরণ হলো ভেড়া ‘ডলি’। ডলি নামটি রাখা হয় বিখ্যাত গায়িকা ‘ডলি পারটন’র নাম থেকে। ক্লোন ডলি জন্মগ্রহণ করে ৫ জুলাই ১৯৯৬ সালে এবং তার মৃত্যু ঘটে ১৪ই ফেব্রুয়ারী ২০০৩ সালে।
তার মৃত্যুর কারণ ছিল আর্থ্রাইটিস। তবে, ২৭৬ বার বিফল হবার পর ২৭৭ বারের সময় জন্ম হয় ডলি নামক ক্লোন ভেড়ার। এর মানে ২৭৬ টি ভ্রুণ নষ্ট হয়েছে এই পরীক্ষায়! আর তখনই পৃথিবীর ইতিহাসে নতুন এক যুগান্তকারী বিপ্লবের সূচনা হয়। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৮, কেটে গিয়েছে পায় ২২ বছর। এত বছরে অনেক উন্নতি হয়েছে জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে।
তবে,চাইলেই যে মানব ক্লোনিং করে যে কারো পুনর্জন্ম ঘটানো সম্ভব তা কিন্তু নয়। এক্ষেত্রে অনেক কিছু মাথায় রাখতে হবে। প্রথম ক্লোন ভেড়া জন্মগ্রহণ করার আগে ২৭৬ টি ভ্রুনের মৃত্যু ঘটে। এখন যদি মানব ক্লোনিং করা হয় তবে অবশ্যই কিছু না কিছু অপরিপক্ব শিশু ভ্রুণ মারা যাবে মানবিক দিক দিয়ে কখনো এটাকে সমর্থন করা যায় না। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই ভ্রুণ হত্যা একটি মারাত্মক অপরাধ। তবে,যে কেউ চাইলেই তার নিজের পছন্দসই প্রাণীর ক্লোন করিয়ে নিতে পারে। এক্ষেত্রে, এটি খুবই ব্যয়বহুল।
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, পৃথিবীর নানা দেশে মানব ক্লোনিং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সেন্টার ফর জেনেটিক্স অ্যান্ড সোসাইটির মতে, বিশ্বের ৪৬ টি দেশে ক্লোনিং নিষিদ্ধ, এবং ৩২ টি দেশে রি-প্রোডাক্টিভ ক্লোনিং(মানব ক্লোনিং) সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে, চিকিৎসা ক্ষেত্রে ক্লোনিং এখনো নিষিদ্ধ হয় নি। যুক্তরাষ্টের ১৫ টি রাজ্যে ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে কোনো কিছু জন্মদান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, এবং ৩ টি রাজ্যে সরকারী অর্থায়নে এটি নিষিদ্ধ।
অতীত থেকেই মানুষের নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আগ্রহ বেশী। তাই, স্বাভাবিক ভাবেই মানব ক্লোনিংয়ের প্রতিও বিজ্ঞানীদের একটা আলাদা টান কাজ করবে। কিন্তু,মানব ক্লোনিং করার জন্য যা পরিমাণ অর্থ দরকার এবং বিশাল ল্যাবরেটরি প্রয়োজন, তা একজন বিজ্ঞানীর পক্ষে বহন করা সম্ভব না। তবে,যদি কোনো পাগলাটে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী সকলপ্রকার বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে এ কাজ করতে পারে, তবেই মানব ক্লোনিংয়ের রিসার্চ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব।
কিন্তু, চীন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ক্লোনিং নিষিদ্ধ করে নি। তাই, অনেকেই ভাবছেন বানর ক্লোনিংয়ে সফলতা আসার পর মানব ক্লোনিংয়ের দিকেও চীনে ঝুকেঁ পড়তে পারে। এক্ষেত্রে তারা যদি এটি করে তবে বলাই বাহুল্য, পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশ তাদের কূটনৈতিক ভাবে বর্জন করবে। মানব ক্লোনিং থেকে বিরত রাখার জন্য অন্তত এই চাপই যথেষ্ট। এখানেও কিন্তু থেকে যায়, তারা আদৌ এটিকে নিষিদ্ধ করবে কি না নিয়ে।
তথ্যসূত্র :
১. https://www.google.com/…/afraid-cloning-humans-macaque-monk…
২. https://www.google.com/…/amp.b…/can-you-clone-a-human-2016-7
৩. https://www.google.com/…/afraid-cloning-humans-macaque-monk…