
সম্প্রতি ফিনিশ, নওরেজিয়ান এবং সুইডিশ তেজস্ক্রিয়তা ও পারমাণবিক নিরাপত্তা সংস্থা জানায় যে তাঁরা এই মাসে স্বল্প পরিমাণে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের সন্ধান পেয়েছেন কয়েকটি অঞ্চলে। সেগুলো হলো ফিনল্যান্ডের একটা অংশ, দক্ষিণ স্ক্যান্ডিনাভিয়া এবং আর্কটিক অঞ্চল। ২৮ শে জুন রবিবার নাগাদ বিখ্যাত অনলাইন কমিউনিটি Disclose.tv টুইট করে যে, সুইডেন থেকে বাল্টিক সাগরের কাছাকাছি কিছু তেজস্ক্রিয় কণার অস্তিত্ব ডিটেক্টরে ধরা পড়ে, যা ছিল স্বাভাবিকের চাইতে কিছুটা বেশি।
স্টকহোম মনিটরিং স্টেশন জানায়, সেখানে ৩ টি আইসোটোপ সিজিয়াম- ১৩৪, সিজিয়াম ১৩৭ এবং রুথেনিয়াম ১০৩ পাওয়া যায়। এই আইসোটোপ গুলো পারমাণবিক ফিশনের সাথে যুক্ত এবং মাত্রা সাধারণ থেকে বেশি। হঠাৎ করে উত্তর ইউরোপের অঞ্চলগুলোতে বেড়ে যাওয়ার এই তেজস্ক্রিয়তার কারণ হতে পারে রাশিয়ান কোনো পারমাণবিক চুল্লিতে “সিস্টেম মালফাংশন“। যদিও রাশিয়ান সংস্থা গুলো জানাচ্ছে তাদের সবকিছুই সঠিকভাবে চলছে এবং উক্ত ঘটনার সাথে কোনো চুল্লি সংশ্লিষ্ট নয়। যদিও বলা হয় এই তেজস্ক্রিয়তার বৃদ্ধি মানব স্বাস্থ্য অথবা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয় সুতরাং আমাদের এটা নিয়ে এমন চিন্তার কোনো কারণ নেই যে চেরোনোবিলের মতো কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যাবে। কিন্তু তবুও কেন এমনটা হচ্ছে সেই কারণ এখনও অস্পষ্ট।

২৬শে জুন শুক্রবার, নেদারল্যান্ডের জাতীয় স্বাস্থ্য ও পরিবেশ গবেষণা সংস্থা The Independent কে জানায়, বিভিন্ন হিসাব এটাই দেখাচ্ছে যে রেডিও আইসোটোপগুলো পশ্চিম রাশিয়ার দিক হতে আসছে। তাঁরা আরো বলে যে এই তেজস্ক্রিয়তা কোনো প্রাকৃতিক নয়, মানবসৃষ্ট। কণাগুলোর গাঠনিক ধরন ইঙ্গিত দেয় যে, তা কোনো পারমাণবিক চুল্লির যান্ত্রিক ত্রুটি থেকে সৃষ্টি হয়েছে। তবে ঠিক কোন জায়গাটা থেকে এরকম বিকিরিত কণা গুলো আসছে তা এখনও নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না হিসাব নিকাশের সীমাবদ্ধতা থাকার জন্য।
তবে রাশিয়া বরাবরই অভিযোগটিকে নাকোচ করে দিচ্ছে। রোসেনেরোগোটাম এর একটি পারমাণবিক প্ল্যান্ট অপারেটর রাশিয়ান সংবাদ সংস্থা TASS কে জানায় যে উত্তর- পশ্চিমাঞ্চলীয় কোনো রাশিয়ান পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে কোনো ধরণের যান্ত্রিক সমস্যা বা ঐ ধরনের কোনো কিছুর রিপোর্ট আসেনি।
আরো জানান যে, সম্পুর্ণ জুন মাস ধরে ঐ অঞ্চলের দুটি পারমাণবিক প্ল্যান্টের তেজস্ক্রিয় বিকিরণের কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। সেগুলো সঠিকভাবেই কাজ করছে এবং তেজস্ক্রিয়তা বাহিরে ছড়িয়ে পড়ছে এমন কোনো তথ্য কেউ সেখান থেকে রিপোর্ট করেনি। সংবাদমাধ্যমটি জানায় যে, সেন্ট পিটার্সবার্গের লেনিনগ্রাদ প্ল্যান্ট এবং উত্তরের কোলা প্ল্যান্ট সঠিকভাবেই কাজ করছে এবং তাঁদের বিকিরণ মাত্রা স্বাভাবিকই রয়েছে।গত সপ্তাহে এ নিয়ে সুইডিশ সংস্থা জানায় এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছেনা যে কোন জায়গাটা হতে এই তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ আসছে বা কোন স্থানের মেঘে এই কণা গুলো জমা হয়ে আছে। এই বিষয়ে আন্দাজ বা ধারণার উপর কোনো সিদ্ধান্ত নেয়াটা ঠিক হবেনা বলে জানায়।

রাশিয়া হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম সেরা পারমাণবিক চুল্লি প্রস্তুতকারী দেশ। বর্তমানে ১০ টি চুল্লি চলমান আছে এবং আরো বেশ কয়েকটি নির্মাণাধীন। তাছাড়াও দেশটির পারমাণবিক সংস্থা, পৃথিবীর অন্যান্য দেশ সমূহ যেমন ইরাক, তুরস্ক এবং ভারতে চুল্লি তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

তথ্যসূত্রঃ unilad, TASS, Swedish Radiation Safety Authority