আজকের দিনে সবচাইতে জনপ্রিয় কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম হলো উইন্ডোজ। উইন্ডোজ তার অবস্থান থেকে ব্যাবহারকারীদের বেশ ভালোই সেবা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু উইন্ডোজ বা ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম গুলো ব্যাবহারকারী এবং ডেভেলপারদের যা ইচ্ছা তা করার অনুমতি প্রদান করে না। আপনি উইন্ডোজ মেশিনের অ্যাডমিন হয়েও অনেক ফাইল মডিফাই করতে পারবেন না। আপনি যদি একজন গেমার হোন বা সাধারন কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করেন তবে উইন্ডোজ আপনার কাছে উত্তম একটি অপারেটিং সিস্টেম। কিন্তু আপনি যদি ডেভেলপার হোন তবে উইন্ডোজে আপনি সর্বাধিক স্বাধীনতা পাওয়া থেকে ব্যর্থ হবেন। কারন এটি একটি ক্লোজড অপারেটিং সিস্টেম।
কিন্তু অপর দিকে লিনাক্স সম্পূর্ণ ফ্রী একটি কার্নেল। যেখানে বহুত ডিস্ট্রো রয়েছে এই কার্নেলের সাথে কাজ করার জন্য। এবং এর সাথে আপনি যা ইচ্ছা তা করতে পারবেন। প্রায় সকল কম্পিউটিং পরিবেশের জন্যই আলদা ডিস্ট্রো রয়েছে। যেমন ডেক্সটপ কম্পিউটিং এর জন্য উন্মুক্ত বা মিন্ট রয়েছে, মোবাইলের জন্য রয়েছে অ্যান্ড্রয়েড এমনকি লিনাক্স ভার্সন সুপার কম্পিউটারেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
লিনাক্স সর্বদা ফোকাস করে থাকে নিরাপত্তা এবং শক্তিশালী হওয়ার উপর। কিন্তু অপরদিকে উইন্ডোজ সর্বদা ফোকাস করে ব্যবহারকারীর সুবিধার উপর। এই জন্য অধিকাংশ সার্ভার এবং হাই টেক নিরাপত্তা ব্যাবস্থায় সর্বদা লিনাক্সকে কাজে নেওয়া হয় এবং এটি জটিল কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য মারাত্মকভাবে জনপ্রিয়।
ভাবছেন লিনাক্স কেন এত জনপ্রিয়!
লিনাক্স এর জনপ্রিয়তার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে এটি ওপেন সোর্স অর্থাৎ আপনি আপনার প্রয়োজন মত এর যে কোন অংশকে মডিফাই করতে পারবেন।ব্যবসা এবং অন্যান্য গোপনীয়তা রক্ষার জন্য লিনাক্স অনেক বেশি নিরাপদ। র্যানসমওয়্যার এর আক্রমণে কিছুদিন পূর্বে উইন্ডোজ ডিভাইস গুলো আক্রান্ত হলেও লিনাক্স ব্যবহারকারী রা কিন্তু বেচে গিয়েছিলেন কেননা লিনাক্স এ ভাইরাস আক্রমণ ঘটে থাকে না।এই জন্য ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানে লিনাক্স এর ব্যবহার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
এবার আসুন এমন কিছু বড় প্রতিষ্ঠানের নাম জেনে নেওয়া যাক যারা লিনাক্স ব্যবহার করছে।
[১] গুগল:এই তালিকায় প্রথমেই রয়েছে টেক জায়ান্ট গুগল এর নাম।লিনাক্স এর একটি জনপ্রিয় ডিস্ট্রো কে কাস্টমাইজ করে গুগল এর নাম দিয়েছে গুবুন্টু।গুবুন্টু র মাধ্যমেই গুগল এখন তাদের সকল সেবা প্রদান করে থাকে।
[২] টুইটার: জনপ্রিয় মাইক্রো ব্লগিং সাইট টুইটার ও তাদের সকল কার্যক্রম লিনাক্স দ্বারা পরিচালনা করছে।
[৩] উইকিপিডিয়া :অনলাইনের সবচেয়ে জনপ্রিয় এনসাইক্লোপিডিয়া (উইকিপিডিয়া) ২০০৮ সাল থেকেই উবুন্টু ব্যবহার করে আসছে।তবে কিছুক্ষেত্রে লিনাক্সের জনপ্রিয় ডিস্ট্রো রেড হ্যাট ও ব্যবহার করছে উইকিপিডিয়া। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উবুন্টুই ব্যবহার করছে।
[৪] আমাজন: অনলাইন শপিং এর সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম আমাজন.কম ২০০২ সালের পর থেকে তাদের কম্পিউটারে লিনাক্স ব্যবহার শুরু করে।লিনাক্স ব্যবহারের সুফল তারা ২ বছরেই পায়।শুধুমাত্র ২০০৪ সালেই আমাজন.কম ১৭ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করে লিনাক্স ব্যবহারের মাধ্যমে।বর্তমানে আমাজন এর সকল কম্পিউটারেই লিনাক্স ব্যবহৃত হচ্ছে।
[৫]ফেসবুক: জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও লিনাক্স প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছে।
[৬] USA প্রতিরক্ষাদপ্তর : লিনাক্স কে যেভাবে খুশি সেভাবেই চালানো যায় বলে ইউএসএ প্রতিরক্ষাদপ্তর এটি ব্যবহার করছে।লিনাক্স.কম থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে লিনাক্স এর জনপ্রিয় ডিস্ট্রো রেড হ্যাট এর ব্যবহারকারী র একটি বড় অংশই ইউএসএ প্রতিরক্ষাদপ্তর। একটি ছোট ত্রুটির কারণে অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে সেইজন্য তথ্যের সুরক্ষা এবং গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্যই তারা রেড হ্যাট ব্যবহার করে।
আজ এ পর্যন্তই। লিনাক্স ব্যবহারকারী নিয়ে পরে বিস্তারিত আর্টিকেল লেখা হবে।
তথ্যসূত্র :Techhub