নয়নতারা ফুল গাছ প্রথম মাদাগাস্কারে উৎপত্তি লাভ করে।এটি সাধারনত অরনা ম্যানটাল প্ল্যান্ট হিসাবে বাড়িতে লাগাতে দেখা যায়। এটি একটি গুল্মজাতীয় এবং বর্ষজীবী উদ্ভিদ। কখনো কখনো আমরা একে অনেক বছর বেঁচে থাকতেও দেখি।তবে পুরনো হয়ে গেলে আর যত্নে না রাখলে গাছটি শক্ত হয়ে যায়, ফুলও ধরে না। ২/৩ ফুটের বেশি বাড়তে দেখা যায় না। পাতা সাধারন বিপরীত,মসৃণ,আয়তাকার বা ডিম্বাকৃতি হতে দেখা যায়। ফুল পাঁচ পাপড়ি বিশিষ্ট হয়।সাধারনত গোলাপি, হালকা গোলাপি ও সাদা রঙের ফুল দেখা যায়। তবে ফুলে গন্ধ নেই।কাণ্ড কোনাচে ধরণের,রঙ বেগুনি বা সাদা,বারমাসি উদ্ভিদ, বীজের সাহায্যে বংশ বৃদ্ধি করে।
Scientific name: Catharanthus roseus
Family: Apocynaceae
English name: Madagaskar periwinkle
গাছটির পাতা, ফুল ও ডালে বহু মূল্যবান রাসায়নিক উপাদান পাওয়া যায়। এ গাছ থেকে ৭০ টিরও বেশি উপ-ক্ষার পাওয়া গেছে। ভিনক্রিস্টিন ও ভিনব্লাস্টিন নামের উপক্ষার দুটি লিউকেমিয়া রোগে বিশেষ ব্যবহার রয়েছে। ডেলটা-ইহোহিম্বিন নামের এক প্রকার রাসায়নিক পদার্থ পাওয়া যায়।ক্রিমি রোগে, মেধাবৃদ্ধিতে, লিউকোমিয়া, মধুমেহ, রক্ত প্রদরে, রক্তচাপ বৃদ্ধিতে, সন্ধিবাত, বহুমূত্র সহ নানা রোগে এর ব্যবহার রয়েছে।নয়নতারা রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায়। দক্ষিণ আফ্রিকায় নয়নতারা গাছ ডায়াবেটিস এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। বোলতা হুল ফোটালে নয়নতারার পাতার রস ব্যবহার করলে জ্বালা-পোড়া থেমে যায়!নয়নতারা গাছের মূল পেটের টনিক হিসেবে কাজ করে।এর পাতার নির্যাস মেনোরেজিয়া (Menorrhagia) বা অতিরজঃস্রাবের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
নয়নতারার ভেষজ গুণ সপ্তম শতাব্দীতে ব্রিটেনের চিকিৎসা শাস্ত্রে পাওয়া যায়। কল্পচার নামক এক ব্রিটিশ ঔষধ বিশেষজ্ঞ নাক ও মুখ দিয়ে রক্তপাত হলে এই গাছ ব্যবহারের পরামর্শ দিতেন।স্ক্যার্ভি, উদরাময়, গলাব্যথা, টনসিলের প্রদাহ, রক্তশূণ্যতা ইত্যাদিতে এটি খুবই উপকারি।নয়নতারার পাতায় ভিনডোলিন নামক ক্ষার থাকে। এই ক্ষার ডিপথেরিয়া জীবাণুর বিরুদ্ধে সক্রিয়।
এর দ্বারা তৈরিকৃত ঔষধের কারণে বমি বা বমি বমি ভাব, মাথা ব্যথা, রক্ত ঝরা, অবসাদ ইত্যাদি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এটি কিডনী ও স্নায়ুতন্ত্রের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। গর্ভবতী মহিলাদের জন্যও ক্ষতিকর। তাছাড়াও এটি তৃণভোজী প্রাণীদের জন্য বিষাক্ত বলেও জানা যায়।
প্রতিটা জিনিসের ভাল আর মন্দ দুই দিক থাকে।নয়ন তারার ঠিক তেমনি দুই দিক আছে। যখন আমি এই ফুল দেখি তখন মনে হয় চোখের তারার মত করে জল জল করছে। গাছ গুলো সুস্থ থাকুক আর মানুষের উপকারে কাজে লাগুক এই শুভ কামনা করি। মানুষের উচিত এই গাছ গুলোকে প্রিজারভেশন করা।
Leave a Reply