অপার বিষ্ময়ের আধার হচ্ছে আমাদের এই মহাকাশ। দিনের বেলা সূর্য তার তেজ দিয়ে আলোকিত করে রাখে আমাদের। তার তেজের কারণে মহাকাশের অন্যান্য বস্তু তখন আমাদের চোখে ধরা দেয় না। কিন্তু দিনের আলো যখন মিলিয়ে যায় তখন আকাশ সেজে উঠে অসাধারণ সব মহাজাগতিক বস্তুতে। যেন মেলা বসে তাদের। পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদ, অসংখ্য তারকারাশি , মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির পাশাপাশি আরো একটি বস্তু মাঝে মাঝে খালি চোখে আমাদের কাছে ধরা দেয়। আকাশের দিকে তাকালে হঠাৎ করে কোনো এক আলোকবিন্দুকে টুপ করে নিচের দিকে খসে পড়তে দেখা যায়। এটি হল উল্কা (Meteor)। আঞ্চলিক ভাষায় আমরা এটাকে অনেক সময় “তারা খসা” বলে থাকি। আর আজকের এ আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে উল্কা এবং উল্কাবৃষ্টি নিয়েই।
প্রথমে আসা যাক, উল্কা কী, সে প্রশ্নে।
যে সব বস্তু মহাকাশে ঘুরে বেড়ায়, তাদের বলে মহাজাগতিক বস্তু। এ রকম কোনো মহাজাগতিক বস্তু পৃথিবীর যথেষ্ট কাছে এসে পড়লে, পৃথিবীর মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের প্রভাবে বস্তুটি ভূপৃষ্ঠের দিকে তীব্র বেগে এগোতে থাকে। তখন এর সঙ্গে বায়ুমণ্ডলের কণাগুলোর সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ-ঘর্ষণের ফলে বস্তুটি জ্বলে ওঠে। তখন যে ক্ষণস্থায়ী সরু আলোর রেখা দেখা যায়, সেটা-ই উল্কা। বেশিরভাগ সময় উল্কার আকার এত ছোট হয় যে, এটি ভূ-পৃষ্ঠে আসতে আসতেই জ্বলে ছাই হয়ে যায়। তবে যদি বস্তুটি মোটামুটি বড় আকারের হয়, তখন সেটি পুরোপুরি পুড়ে ছাই হয়ে যায় না। বস্তুটির অবশিষ্টাংশ ভূ-পৃষ্ঠে ভীষণ জোরে আছড়ে পড়ে। এই অবশিষ্টাংশকে বলে উল্কাপিণ্ড।
সে না হয় বোঝা গেলো। কিন্তু প্রশ্ন হলো ঠিক কোন মহাজাগতিক বস্তু আসে এ ভাবে? পৃথিবীর চারপাশে শুক্র বা মঙ্গল গ্রহ পর্যন্ত তেমন কিছুই নেই। অথচ বিজ্ঞানীরা দেখেছেন শক্তিশালী পর্যবেক্ষণ যন্ত্রে প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৫টি উল্কাপাত দেখা যায়। এই মহাজাগতিক বস্তুগুলো আসে কোথা থেকে তাহলে ?
সৌরজগতের সবচেয়ে ছোট সদস্য গ্রহাণু। এই গ্রহাণুগুলো পৃথিবী থেকে বেশ দূরে অবস্থান করে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে। এগুলো ছাড়াও মহাশূন্যে অসংখ্য ছোট ছোট বালুকণা আর পাথরের টুকরোর মতো পদার্থ ইতস্তত ছড়িয়ে আছে। সিংহভাগ উল্কাই এসব কণার মাধ্যমে সৃষ্ট। এই কণাগুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে সংঘর্ষে জ্বলে ওঠে। খুব ছোট হওয়ায় এদের কেউ-ই পৃথিবীপৃষ্ঠ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না। প্রতি ১০০ বছরে হয়ত কয়েকটি ছোটখাট টুকরো পৃথিবী পর্যন্ত এসে পৌঁছায়। আর বিশাল খাদ কিংবা ডাইনোসরদের বিলুপ্ত করে দেওয়ার মতো ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টিকারী বিশাল উল্কা আসার সম্ভাবনা হিসেব করলে প্রতি ৩ লক্ষ বছরে একবার! এগুলো হল গ্রহাণু বেল্টের কোনো বিক্ষিপ্ত সদস্যের কাজ। যারা মহাকাশে ঘুরতে ঘুরতে মঙ্গল ও পরে পৃথিবীর আকর্ষণে পথ বদলাতে গিয়ে, শেষমেশ পৃথিবীর মহাকর্ষ বল এড়াতে না পেরে এখানে আছড়ে পড়ে। এছাড়াও ধূমকেতুর অবশিষ্টাংশ থেকে উল্কা সৃষ্টি হয়।
উল্কাপিণ্ড গ্রহাণুর তুলানায় আকারে অনেক ক্ষুদ্র। যখন কোন উল্কা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে তখন এর গতিবেগ সেকেন্ডে প্রায় ২০ কিমি. হয়। অধিকাংশ গ্রহানু গুলো সৌরজগতের মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মধ্যে অবস্থিত একটি উপবৃত্তাকার গ্রহাণু বলয় থেকে আসে। এই গ্রহাণু বলয় ছাড়াও, উল্কা সৌরজগতের অভ্যন্তর অঞ্চল থেকেও উৎপত্তি লাভ করতে পারে। আর এই কারণেই, পৃথিবীতে এমন কিছু উল্কাপিন্ড পাওয়া গেছে যাদের বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এরা চাঁদ বা মঙ্গল গ্রহ থেকে উৎপন্ন হয়েছে । কোন একটি পৃথিবী-বহির্ভূত বস্তু পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে যখন ঢোকে তখন বস্তুটির চাপ, তাপমাত্রা, উপাদান, ভর প্রভৃতি পরিবর্তিত হয়। এছাড়াও বায়ুমণ্ডলীয় উপাদানের সঙ্গে বস্তুর সংঘর্ষ ঘটে ও রাসায়নিক বিক্রিয়া সম্পাদিত হয়। ফলে বস্তুর অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে উল্কার বহিঃপৃষ্ঠ পুড়িয়ে দেয়। এসময়ে এ্যারোডাইনামিক্স তাপের কারনে উজ্জ্বল আলোক ছটার সৃষ্টি হয় আর আমরা উল্কাপাত দেখতে পাই।
ভূ পৃষ্ঠে পতিত হওয়ার পর উল্কাকে বলা হয় উল্কাপিন্ড। ৩ ধরনের উল্কাপিন্ড দেখা যায়। সে গুলো হলোঃ
১। Stony meteorites:-
পাথর সমৃদ্ধ উল্কাপিন্ড যা খনিজ সিলিকেট দ্বারা গঠিত। অধিকাংশ উল্কাই এই শ্রেণিভুক্ত। পৃথিবীপৃষ্ঠে পাওয়া মোট উল্কার প্রায় ৮৬% এই দলের অন্তর্গত।
২। Iron meteorites:–
লোহা সমৃদ্ধ উল্কাপিন্ড যা লোহা-নিকেল দ্বারা গঠিত। পৃথিবীপৃষ্ঠে পাওয়া মোট উল্কার প্রায় ৬% এই দলের অন্তর্গত।
৩। Stony-Iron meteorites:-
পাথর-লোহা সমৃদ্ধ উল্কাপিন্ড যা বিভিন্ন ধরনের ধাতব পদার্থ ও পাথর দ্বারা গঠিত। বাকি ৮% এই দলের অন্তর্গত।
পৃথিবীতে পতিত হওয়া সবচেয়ে বড় উল্কাপিণ্ড ঃ
এই পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে, পৃথিবীতে পতিত হওয়া সবচেয়ে বড় উল্কাপিন্ডটির নাম হোবা (Hoba)। এটি নামিবিয়াতে পতিত হয়েছিল। নামিবিয়ার একজন কৃষক ১৯২০ সালের দিকে জমি চাষ করতে গিয়ে এটি প্রথমে দেখেন। বিজ্ঞানীদের মতে, এটি প্রায় ৮০০০০ বছর আগে পৃথিবীতে পতিত হয়েছিল।
যেই খামারের জমিতে এটি আবিষ্কৃত হয় সেই খামারটির নাম হোবা । সেই খামারের নামানুসারেই এর নামকরণ করা হয়। হোবা মূলত আয়রণ বা লোহা দিয়ে গঠিত। এর ভরের ৮৪% আয়রণ, ১৬% নিকেল এবং খুবই অল্প পরিমাণে কিছু কোবাল্ট এবং অন্যান্য ধাতু রয়েছে।
এর ওজন প্রায় ৬০ টন এর মত। এটি দৈর্ঘ্যে ৯ ফুট, এবং প্রস্থেও ৯ ফুট। ধারণা করা হয় এটি পতিত হবার সময় এর ওজন ছিল ৬৬ টনের ও বেশি। মাটির নিচে ঢাকা পড়ে যাওয়ায় জারণ বিক্রিয়ায় কিছু ধাতু ক্ষয় হয়ে এটি প্রায় ৬ টন কমে গেছে।
এর অধিক ভরের কারণে এটি যেখানে পতিত হয়েছিল এখনো সেখানেই আছে। নামিবিয়ার সরকার উক্ত জায়গাটিকে জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ ঘোষণা করেছে। প্রতিবছর অনেক পর্যটক নামিবিয়া যান হোবা দর্শন করতে।
একটি বড় আকারের উল্কা পৃথিবীপৃষ্ঠের উপর যখন পড়ে, তখন একটি বেশ বড়সড় জ্বালামুখ পৃথিবীপৃষ্ঠের উপর তৈরি হয়। আজ যদি আমরা পিছন ফিরে তাকাই, তখন দেখতে পাই যে, অতীতে উল্কাপাতের সময় পৃথিবীপৃষ্ঠের সঙ্গে সঙ্ঘাতে অনেক জ্বালামুখ সৃষ্টি হয়েছে, যার সঙ্গে পৃথিবী থেকে ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার ঘটনাকেও কোন কোন ভাবে দায়ী বলে ভাবা হয়।
উল্কাবৃষ্টি ( Meteor shower):
এ তো গেল উল্কাদের কথা। এখন আসা যাক উল্কাবৃষ্টির গল্পে। প্রতি বছরই কিছু নির্দিষ্ট দিনে আকাশে উল্কার পরিমাণ বেশ বেড়ে যায়। ঘণ্টায় ৩০-৪০ টা উল্কাও দেখা যায়। একেই বলে উল্কাবৃষ্টি।
এই অসংখ্য উল্কা আকাশের একেকটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকেই আসে। এই জায়গাগুলিকে বলে বিকিরণ বিন্দু বা ‘radiant’। এ থেকে মনে হতেই পারে, এগুলো নিশ্চয়ই একই মাতৃবস্তু থেকে আসছে; আসলেও তাই। এর জন্য প্রায়ই দায়ি থাকে ধূমকেতু। ধূমকেতুর শেষে যে লেজ থাকে, সেটা মূলত বরফকণাপূর্ণ গ্যাসীয় পদার্থে তৈরি। ধূমকেতু যখন সূর্যের খুব কাছে চলে যায়, এই লেজের কিছু অংশ বলা যেতে পারে খসে যায়। এই অবশিষ্টাংশ এদের কক্ষপথের আশেপাশে ছড়িয়ে থাকে। চলার পথে পৃথিবীর কাছে চলে আসলে, কাছাকাছি অঞ্চলের টুকরোগুলো উল্কা হয়ে পৃথিবীর দিকে ঝাঁক বেঁধে ছুটে আসে। এভাবেই উল্কাবৃষ্টির সৃষ্টি হয়।
যে নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে উল্কাবৃষ্টি হয়, সেগুলো থাকে একেকটি তারামণ্ডলের মধ্যে। তাই অবস্থান শনাক্তকরণ সহজ করতে একেকটি উল্কাবৃষ্টি যে তারামণ্ডলের পটভূমিতে হয়, সেই তারামণ্ডলের নামানুসারে উল্কাবৃষ্টির নামকরণ করা হয়। তবে তারামণ্ডলের নামের শেষে সাধারণত ids অথবা nids যোগ করা হয়। অনেক সময় তারামণ্ডলের নামের শেষের দু-একটা বর্ণও বাদ দেয়া হয়। যেমন, আগস্টের ১২ তারিখে যে উল্কাবৃষ্টি দেখা যায়, তার নাম ‘পারসেইডস’ (perseids)। এই উল্কাবৃষ্টির নামকরণ করা হয়েছে পারসিয়াস তারামণ্ডল থেকে। উল্কাবৃষ্টিটি হয়েছিল ‘সুইফট টাটল’ নামক ধূমকেতুর অবশিষ্টাংশ থেকে। আবার অক্টোবর মাসের ২০ তারিখে দেখা যায় ‘ওরায়নিডস’ (orionids) নামক উল্কাবৃষ্টি। এটির নামকরণ করা হয়েছিল কালপুরুষ তারামণ্ডল (orion) থেকে। উল্কাবৃষ্টিটি হয়েছিল হ্যালির ধূমকেতুর অবশিষ্টাংশ থেকে। এই দিনগুলিতে, বা তার একদিন আগে-পরের দিনগুলোতে রাতের আকাশে প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৩০-৪০টা উল্কা চোখে পড়ে। যদি কমও দেখা যায়, তবু অন্তত ৫-১০টা উল্কা চোখে পড়বেই। ভাগ্য ভালো হলে একসঙ্গে কয়েকটাও দেখা যেতে পারে। তবে ঢাকার মতো আলো-দূষণময় শহরগুলিতে অবশ্য এ নিয়ম খাটে না। এই ধরনের শহরে এত উল্কা দেখা যায় না।
উল্কাপাতের মৌসুমে গড়ে উত্তর গোলার্ধের লোকজন প্রতি ঘন্টায় ১০ টি উল্কাপাত আর দক্ষিন গোলার্ধের লোকজন প্রতি ঘন্টায় ৩০ টি উল্কাপাত দেখতে পারে। বিষুবরেখার নিকট এলাকার লোকজন গোধুলীর সময় দেখতে পারে। বিষুবরেখার নিকটবর্তী এলাকার লোকজন সূর্যোদয়ের ৩ ঘন্টা আগেই উল্কাবৃষ্টি দেখতে পারে। উল্কাবৃষ্টি দেখার সবচেয়ে ভাল সময় হলো সন্ধ্যা ও ভোররাত।
নিচে কিছু নিয়মিত উল্কাপাতের নাম ও সময়ের তালিকা দেওয়া হলোঃ
১। কোয়াড্রানটিডস্ (Quadrantids): জানুয়ারি মাসে ৩-৪ তারিখে বুটিস (Bootes) নক্ষত্র মণ্ডলে এই উল্কা বৃষ্টি দেখা যায়। তখন প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৪০টির বেশি বড় এবং উজ্জল ধূমকেতু দেখা যায়। এই উল্কা পিণ্ডগুলো সেকেন্ডে ২৫.৫ মাইল বেগে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে। এর মধ্যে কিছু উল্কা এতটাই উজ্জ্বল থাকে যে এগুলো নিভে যাওয়ার পরও অনেকক্ষণ পর্যন্ত আলোর রেখা আকাশে দেখা যায়।
২। পাই পাপিডস (Pi Puppids): এই উল্কাপাত এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখের দিকে দেখা যায়। তবে এটি নিয়মিতভাবে প্রতি বৎসরই দেখা যায় না। এর উৎস হলো 26P/Grigg-Skjellerup নামক ধূমকেতু।
৩। আরিয়েটিড্স্ (Arietids): মে মাসের ২২ থেকে জুলাই মাসের ২ তারিখের ভিতরে দেখা যায়। এর উৎসস্থান গ্রহাণু 1566 Icarus।
৪। জুন বুটিস (June Bootids): জুন মাসের ২৬ তারিখ থেকে জুলাই মাসের ২ তারিখের ভিতরে এই উল্কাবৃষ্টি হয়। পৃথিবী যখন Comet Pons-Winnecke নামক ধূমকেতুর কক্ষপথে প্রবেশ করে, তখন এই উল্কাপাত ঘটে।
৫। লাইরিডস্ (Lyrids): এপ্রিল মাসের ১৬ থেকে ২৬ তারিখের মধ্যে দেখা যায়। এই উল্কাপাত বীণা নক্ষত্রমণ্ডলের (Lyra) উজ্জ্বলতম নক্ষত্র Alpha Lyrae (অভিজিৎ) বরাবর দেখা যায়। এই উল্কার উৎস হিসেবে ধরা হয় C/1861 G1 Thatcher নামক ধূমকেতুকে।
৬। ইটা কুম্ভ (Eta Aquarids): এপ্রিল মাসের ২১ থেকে মে মাসের ২০ তারিখের ভিতরে দেখা যায়। এর উৎস হ্যালির ধূমকেতু (Halley’s Comet)
৭। দক্ষিণাঞ্চলীয় ডেল্টা কুম্ভ (Southern Delta Aquariids): জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ আগষ্টের প্রথম সপ্তাহের ভিতরে এই উল্কাপাত ঘটে। 96P/Machholz, Marsden এবং Kracht ধূমকেতুসমূহের এলাকা থেকে এই উল্কাপাত ঘটে।
৮। আলফা মকর (Alpha Capricornids): ১৫ জুলাই থেকে ১০ আগষ্ট পর্যন্ত এই উল্কাপাত হয়। ১৮৭১ খ্রিষ্টাব্দে এই উল্কাপাত আবিষ্কার করেছিলেন হাঙ্গেরিয়ান জ্যোতির্বিজ্ঞানী Miklos von Konkoly। এর উৎস নামক 169P/NEAT ধূমকেতু।
৯। পারসিড্স (Perseids): জুলাই মাসের ২৩ তারিখ থেকে আগষ্ট মাসের ২০ তারিখের ভিতরে এই উল্কাপাত হয়। এর উৎস 109P/Swift-Tuttle নামক ধূমকেতু।
১০।কাপ্পা সিগনিড্স (Kappa Cygnids): জুলাই মাসের ৩ তারিখ থেকে ১৫ই আগষ্ট পর্যন্ত এই উল্কাপাত হয়। 2008 ED69 নামক গ্রহ এই উল্কাপাতের উৎস। উল্লেখ্য এটি সিগন্যাস নক্ষত্র মণ্ডলের কাপ্পা সিগনি ((κ Cyg) নামক নক্ষত্রের একটি ক্ষুদ্রাকার গ্রহ।
১১।অরিগিড্স্ (Aurigids): সেপ্টেম্বর মাসের দিকে এই উল্কাপাত ঘটে। Kiess (C/1911 N1) নামক ধূমকেতু থেকে এই উল্কাপাতের উৎস।
বেশীরভাগ উল্কাই আকাশেই পুড়ে ছাই হয়ে যায়। কিন্তু কিছু উল্কাপিণ্ড পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ে। প্রতি বছরই পৃথিবীতে উল্কাপাত হয়ে থাকে। বিজ্ঞানীদের মতে প্রতি বছর প্রায় ১৫০০ মেট্রিক টন উল্কাপিণ্ড পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে। ভূপৃষ্ঠ যে সকল উল্কাপণ্ডের অবশেষ পাওয়া যায়, তাদের বেশিরভাগের রঙ থাকে কালো। প্রচণ্ড উত্তাপে এদের বহির্ভাগ পুড়ে যাওয়ার কারণে এগুলোর রঙ কালো হয়।