আবিষ্কৃত হলো মাইন্ড রিডিং কম্পিউটার

ধরুন আপনি নিজের ফোনে আপনার পছন্দের একটি গান শুনছেন অথবা কয়েক মিনিট আগে একটি গান শুনেছেন আর আপনার কম্পিউটার বলে দিচ্ছে আপনি কোন গানটি শুনছেন। হয়ত শুনতে কিছুটা সাইন্স ফিকশন মুভির দৃশ্যের মত মনে হতে পারে। তবে আমাদের কল্পনাকৃত মাইন্ড রিডিং যন্ত্রপাতি গুলো এখন বাস্তবতায় রূপ নিতে শুরু করেছে। গবেষকরা ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স মেশিন ব্যবহার করে যেকোন ব্যক্তির মাইন্ড রিড করতে পারবেন এতে করে সেই ব্যক্তিটি কি গান শুনছে তা চট করেই বের হয়ে আসবে চাইলে আপনিও শুনতে পারবেন গানটি এমনটি বলছেন D’Or Institute for Research and Education এর গবেষক গন। ৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি বৈজ্ঞানিক রিপোর্টে বলা হয় মাইন্ড রিডিং প্রযুক্তির উন্নতকরনে তাদের এই গবেষণা নতুন পথ দেখিয়েছে বিজ্ঞানীদের। এর ফলে বিজ্ঞানীদের পক্ষে অডিও কল্পনা অর্থাৎ ব্যক্তির নিজস্ব কথা ও তার ভেতরের বক্তব্য গুলোও বের করে অনা সম্ভব হবে বলে জানানো হয় রিপোর্টটিতে। এবং ক্লিনিকাল ডোমেনে, এটি লক-ইন সিনড্রোম রোগীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য মস্তিষ্ক থেকে কম্পিউটার ইন্টারফেসগুলির সম্পর্ক আরো উন্নত করতে পারে। D’Or Institute for Research and Education করা গবেষণায় প্রায় ৪০ টি বিভিন্ন রকমের গান যেমন ক্লাসিক্যাল,রক,পপ,জাজ ইত্যাদি গান শুনানো হয় জার্মানি, ফিনল্যান্ড এবং ভারত থেকে অংশগ্রহণ করা ৬ জন অংশগ্রহকারীকে। এই ৪০ টি গানের প্রত্যেকটি নোটের স্নায়ুবিক প্রিন্টিং MR মেশিন দ্বারা তাদের মস্তিষ্কে ধরা পরে এবং একটি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে সেই প্রত্যেক গানের নোট গুলিকে মস্তিষ্কের প্যাটার্ন অনুসারে আলাদা করা হয়। বিশেষ করে সংগীতের বিভিন্ন সুর, তাল, লয় ইত্যাদিও রেকর্ড করা হয়। এর পরে গবেষকরা আশা করেছিলেন কম্পিউটার বিপরীত উপায়ে মস্তিষ্কের কার্যকলাপের উপর ভিত্তি করে অংশগ্রহণকারীরা কোন গান গুলো শুনেছিল সেটি শনাক্ত করতে সক্ষম হবে।যেটি আসলে ব্রেইন ডিকোডিং নামে পরিচিত। এতে প্রায় কাছাকাছি দুটি বিকল্পের মধ্যে কম্পিউটার শনাক্তকরণে প্রায় ৮৫% নির্ভুল রিপোর্ট দেয়। এতে গবেষকরা এটি আরো কিছুটা কঠিন করে দেন যেখানে ১০ টি গান থেকে একটি সঠিক গান বেছে নিতে হবে কম্পিউটারকে। সেখানে কম্পিউটার প্রায় ৭৪% নির্ভুল ভাবে গানগুলোকে সনাক্ত করে। এতে ধারনা করা হচ্ছে ভবিষতে কোন লিখিত বা কথিত ভাষা না থাকলেও ব্রেইন ডিকোডিং ও মেশিন লার্নিং এর ক্ষেত্রে যোগাযোগ স্থাপন করা খুব সহজ হবে। এপ্রসঙ্গে ব্রাজিলের ফেডারেল ইউনিভার্সিটি রিও ডি জেনেরিও এর ডি’অর ইনস্টিটিউটের গবেষক এবং পিএইচডি ছাত্র গবেষক সেবাস্তিয়ান হুইফেল বলেন,” এই প্রযুক্তির যথাযথ উন্নতকরন করা হলে এটি বাদ্যযন্ত্রের সুর এবং অামাদের সংগীতময় ভাবনা গুলোকে গানে অনুবাদ করতে সক্ষম হবে।” হুইফের মতে, মস্তিষ্কের ডিডকোডিং গবেষণায় স্নায়ু কার্যকারিতা বোঝার বিকল্পগুলি প্রদান করে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে এটির সাথে যোগাযোগ করে। আর এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে হয়ত অদুর ভবিষতে কথা বলতে না পারা রোগীদের চিকিৎসা করা সম্ভব হবে তেমনি বিভিন্ন অপরাধ কর্ম শনাক্তকরণেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে এটি।

 

[mc4wp_form id=”4170″]

Comments are closed.