বৃহস্পতির নতুন দশটি উপগ্রহ আবিষ্কার

ওয়াশিংটন ডিসির কার্নেগী ইন্সটিটিউশন ফর সাইন্সের জ্যোতির্বিদ স্কট শেফার্ড এবং তার সহকর্মীরা গত ১৭ জুলাই এমন আবিষ্কারের ঘোষণা দেন । শেফার্ডের দল সাধারণত সৌরজগতের প্লুটো থেকে দূরবর্তী বস্তু পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। মাঝেমধ্যে তারা সৌরজগতের গ্রহগুলোর উপগ্রহ ও পর্যবেক্ষণ করেন।গত বছর তারা দুইটি অতিরিক্ত জোভিয়ান মুনের ( বৃহস্পতির উপগ্রহ ) সন্ধান করেছিলেন। বিজ্ঞানীরা সচরাচর দেখা যায় না এমন বড় গ্রহ খোঁজেন যা সাধারণত “প্ল্যানেট নাইন” নামে পরিচিত। বৃহস্পতি ও আকাশের একই অঞ্চলে অবস্থিত,তাই তারা এই উপগ্রহগুলোর খোঁজ পান।
গবেষকরা সৌরজগতে কতগুলো বস্তু শনাক্ত করেন এবং সেগুলোর কক্ষপথ হিসাব করেন, তারা দেখেন বস্তুগুলো তাদের পিছনের তারকার তুলনায় নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করছে। গবেষক দলটি চিলির Cerro Tololo Inter-American Observatory এর Blanco 4-metre টেলিস্কোপ ব্যবহার করে ছবিগুলো ধারণ করেন এবং বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করেন।

নতুন আবিষ্কৃত উপগ্রহগুলোর সবগুলোই ছোট আকৃতির এবং ১-৩ কিমি ব্যাসের। এদের ৭টিই বৃহস্পতি থেকে ২০মিলিয়ন দূরের কক্ষপথে থেকে গ্রহটিকে তার ঘূর্ণন গতির বিপরীত দিক থেকে প্রদক্ষিণ করছে। যা তাদেরকে রেট্রগ্রেড চাঁদের (retrograde moons) কাতারে ফেলেছে। ৮ম চাঁদটি ভিন্ন কারণ সেটি আগের ৭টির মত একি দূরত্বে হলেও তার গতির দিক বিপরীত অর্থাৎ বৃহস্পতির ঘূর্ণন গতির একই দিকে। বৃহস্পতির উপগ্রহের নাম সাধারণত মিথলজির দেবতা জুপিটার এর সাথে সম্পর্কিত কোন দেবতার নামে করা হয়, শেফার্ড এই চাঁদটির নাম জুপিটারের বংশধর রোমান স্বাস্থের দেবী Valetudo এর নামে প্রস্তাব করেছেন। ৯ম এবং ১০ম উপগ্রহ দুইটি বৃহস্পতির কাছাকাছি কক্ষপথে বৃহস্পতির গতির একই দিকে প্রদক্ষিণ করছে।

                                    ছবিটি, ব্যাকগ্রাউন্ড তারকার তুলনায় যোভিয়ান মুনদের নড়াচড়া দেখাচ্ছে। ক্রেডিটঃনাসা।

নতুন উপগ্রহগুলোর সবগুলি বৃহস্পতির সাথে একই সময়ে সৃষ্টি হয়েছিল,এগুলো গ্রহটির চারপাশে ঘূর্ণায়মান ধুলির মেঘে আচ্ছাদিত হয়ে আছে। এদের অস্তিত্ব এটাই নির্দেশ করে যে বৃহস্পতির সাথে মহাজাগতিক পাথরের সংঘর্ষের ফলে যে মহাজাগতিক জঞ্জালের সৃষ্টি হয়েছিল বৃহস্পতির চারপাশে এগুলো তারই অবশিষ্টাংশ। জ্যোতির্বিদেরা যদি এই সংঘর্ষের ইতিহাস বের করতে পারেন তাহলে তারা সংঘর্ষের ফলে বৃহস্পতির যে উপগ্রহগুলো সৃষ্টি হয়েছিল সেগুলোর আকারও নির্ধারণ করতে পারবেন। মেরিল্যান্ড ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিদ ডগলাস হামিল্টন বলেন ,” এটিই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন যা এই ১০টি চাঁদকে ইন্টারেস্টিং করে তুলেছে।“ শেফার্ড মনে করেন বৃহস্পতির এখনো অনাবিষ্কৃত উপগ্রহ থাকতে পারে যা সূর্যের আলোর উজ্জ্বলের কারণে বিজ্ঞানীদের টেলিস্কোপে ধরা পড়ছে না।

বৃহস্পতির সাথে উপগ্রহের সংখ্যার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে শনি তার ৬২টি উপগ্রহ নিয়ে ।
সুত্রঃ nature journal 17 july 2018.

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>