অনলাইন বিটকয়েন মাইনিং নামক ডিজিটাল প্রতারণা !!!

বিটকয়েন নিয়ে কম বেশি আমরা সবাই শুনেছি। ক্রিপ্টোকারেন্সির মধ্যে একটি হলো বিটকয়েন। তাছাড়াও আছে লাইটকয়েন,ইথিউরিয়াম,বাইটকয়েন ইত্যাদি। আমরা অনেকেই হয়তো শুনে থাকবো বিটকয়েন মাইনিং এর কথা। আলোচনার সুবিধার্থে ক্রিপ্টোকারেন্সি হিসেবে আমরা বিটকয়েন এর কথা চিন্তা করি। বিটকয়েন এর কেন্দ্রীয় কোনো টিম নেই বা নির্দিষ্ট কেউ এর দেখাশুনা করে না। এর ফিজিক্যাল কোনো মুল্য নেই। কিন্তু একে লিকুয়িড মানিতে পরিবর্তন করলে প্রতি বিটকয়েন এর দাম প্রায় ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার সমান হয়।

মাইনিং আসলে কি?

বিটকয়েন এ অনেক ট্রানজেকশন হয়ে থাকে। প্রতিটা ট্রানজেকশন সম্পূর্ণ হওয়া জন্য বিটকয়েনটি কোথা থেকে এসেছে এবং কিভাবে এসেছে এসব তথ্য যাচাই করা হয়। প্রতিটা ট্রানজেকশন এ তৈরি হয় একটি করে ব্লক। সকল ব্লক মিলে হয় ব্লকচেইন। প্রতিটা ব্লক SHA-256 কোড দ্বারা ইনক্রিপ্ট করা থাকে। প্রতিটা ব্লকের সমাধানের জন্য এই ফাইল ডিক্রিপ্ট করতে হয় বিভিন্ন কম্বিনেশন ধারনা করে। যেহেতু কেন্দ্রীয় কোনো দল নেই তাই মাইনারদের কম্পিউটার ব্যবহার করে এই কাজ করা হয়। বিনিময়ে মাইনাররা পায় কিছু রিওয়ার্ড।

মাইনিং স্পিড কিসের উপর নির্ভর করে?

মাইনিং স্পিড এর একক হলো Hash per Second। এর মানে দাঁড়ায় একটি ২৫৬ বিট এর ফাইল ডিক্রিপ্ট করার জন্য কম্পিউটার এক সেকেন্ডে কতোগুলো সংখ্যা ধারণা করতে পারে। H/s যত বেশি ততদ্রুত একটি ব্লক এর সমাধান করা যায়। এর স্পিড নির্ভর করে প্রসেসর আর জিপিউ এর উপর। যেহেতু কম্পিউটার কে ক্রমাগত বিভিন্ন সংখ্যা ধারণা করে চেক করতে হয় যে ডিক্রিপ্ট হয়েছে কিনা তাই খুব সময় সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

অনলাইন মাইনিং

প্রথমেই আপনাকে একটা উদাহরণ দেই। ৬টি GTX 1080 Ti এবং ইন্টেল সেলেরন 8th জেনারেশন সম্পন্ন একটি পিসিতে ২০০০ ওয়াট এর পাওয়ার সাপ্লাই দিয়ে বেঞ্চমার্ক করলে দেখা যায়, দিনে প্রায় ৪৭-৫৫ ডলার এর দাম সম্পন্ন বিটকয়েন মাইন করা যাচ্ছে। এখন একদল অসাধু ব্যবসায়ী আছে, যারা এতো খরচ বহন করতে পারে না। তারা যা করে তা হলো, ক্লাউড বা অনলাইনের মাধ্যমে আপনাকে অনেক বেশি বিটকয়েন দিবে এই লোভ দেখিয়ে আপনার পিসি উনাদের সাথে লিংক করায়। এতে যা হয়, তারা ক্লাউড এর মাধ্যমে আপনার পিসির প্রসেসর ব্যবহার করে আপনার পিসি দিয়ে মাইন করে উনাদের ওয়ালেট এ জমা করে। তারা সব সময় দেখাবে যে, আপনার একটা মিনিমাম পরিমাণ মাইন করতে হবে। এরপর আপনি ওয়ালেট এ বিটকয়েন ট্রান্সফার করতে পারবেন। কিন্তু যখনি বিটকয়েন ওয়িথড্র করার রিকুয়েস্ট দিবেন তখনি তারা বলবে একটা ফি দিতে হবে প্রথমে। পুরো ব্যাপার টা তাদের সাজানো। আমি নিজে কয়েকটা ট্রায় করেছি আপনার দেখানোর জন্য। নিচের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন আমার সিপিউ ইউজেজ  93% পর্যন্ত চলে গেছে। তারা ক্লাউড এর মাধ্যমে আমার পিসি দিয়ে ব্লকচেইন চেক করছে।

 

আপনারা সচেতন থাকুন এসব সাইট থেকে। যা ল্যাপটপ ইউজার তাদের জন্য মারাত্মক রিস্ক। কারণ এর মাইনিং এর জন্য প্রচুর পরিমাণ পাওয়ার দরকার পরে। আপনার ল্যাপটপ এর ব্যাটারির মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। আর ওভারহিট হয়ে প্রসেসর আর জিপিউ ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে। নিচে কিছু স্প্যাম অনলাইন মাইনিং সাইট এর নাম দেওয়া হল। এসব সাইট থেকে ধোকা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। 01crypto.net, 120profit.com , 1dailycoin.com 2fxltd.com ,1thash.com, 5miner.com, 2x.money, 999bitcoins.biz,Multiminer,Minerghost । এরকম আরো অনেক সাইট আছে। তারা কেবল আপনার সিপিউ এর পাওয়ার ব্যবহার করছে, এতে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাদের ঠিকই মাইন করে বিটকয়েন লাভ হচ্ছে।

One Comment

  1. Deep Web এবং Dark Web - ইন্টারনেট দুনিয়ার বিশাল অংশ | বিজ্ঞানবর্তিকা

    […] বেশ কিছু দেশের মত আমাদের দেশে যেমন বিটকয়েন বিনিময়কে অবৈধ করা হয়েছে, তেমনি Dark Web ব্রাউজ করতেও অনুৎসাহিত করা […]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>