আলো ব্যবহৃত হবে পরবর্তী প্রজন্মের ডাটা-স্টোরেজের জন্য।

অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সাউথ অস্ট্রেলিয়া, ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডিলেড এবং ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস এর গবেষকদের যৌথ গবেষণায় এমন মহৎ ও শক্তি-সাশ্রয়ী উপায়ে ডাটা-স্টোরেজের পদ্ধতি বের করেছেন।

সমাজের ক্রমবর্ধমান তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে বিদ্যমান প্রযুক্তি যেমনঃ হার্ড ড্রাইভ, সলিডস্টেট স্টোরেজ গুলোর খুব তাড়াতাড়িই ধারণ ক্ষমতা শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই প্রজেক্টের প্রধান ড.নিক রেইজেন এর ভাষায়,

” আমরা এমন যুগে প্রবেশ করেছি যেখানে শত টেরাবাইট (১০০০ জিবি) এমনকি পেটাবাইট (১মিলিয়ন জিবি) ধারণ ক্ষমতার ডাটা-স্টোরেজ ব্যবস্থা দরকার। আর এর জন্য সবচেয়ে বিশ্বস্ত প্রযুক্তি হতে পারে অপটিক্যাল ডাটা-স্টোরেজ প্রযুক্তি।”

 

ড.রেইজেন এবং ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডিলেডের পিএইচডি ( PhD) শিক্ষার্থী জুয়ানহো প্যান ন্যানো, ক্রিস্টালের আলো নির্গমন বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে একটি প্রযুক্তি উন্নয়ন করেছেন যা খুব সাশ্রয়ী উপায়ে সুইচ অন-অফ করতে পারে যা একপ্রকার ডিজিটাল তথ্য। গবেষকরা এখানে ইলেকট্রনের ইলেকট্রনিক অবস্থান পরিবর্তন করতে লেজার রশ্মি এবং ক্রিস্টালের ফ্লোরোসেন্স বৈশিষ্ট্য কাজে লাগিয়েছেন।
তারা দেখিয়েছেন এই ফ্লোরোসেন্ট ন্যানো-ক্রিস্টাল প্রথাগত ম্যাগনেটিক,সলিড-স্টেট এবং ব্লু-রে ডিস্ক এর বিশ্বস্ত বিকল্প হতে পারে। তারা ক্রিস্টালে রিরাইটেবল(rewritable) ডাটা স্টোর করে দেখিয়েছেন যা মানুষের দৃষ্টি সীমার চেয়ে শতগুণ ছোট।

Scientist Xuanzhao Pan and Dr. Nick Riesen demonstrating a novel optical data storage platform.
Credit: Elizaveta Klantsataya

এই ডাটা স্টোরিং এর সবচেয়ে মজার দিক হলো এখানে স্বাধীন ভাবে কয়েক বিট ডাটা স্টোর করা যায় এবং অন্যান্য অপটিক্যাল ডাটা স্টোরিং এর মতো তা মুছে আবার নতুন করে স্টোর করা যায়।
এই মাল্টিলেভেল ডাটা স্টরিং পদ্ধতিতে একটি সিঙ্গেল ক্রিস্টালে কয়েক বিট ডাটা স্টোর করা যায় যা বেশি ঘনত্বে ডাটা স্টোরিং এর ব্যবস্থা করে। এই প্রযুক্তিতে খুবই কম ক্ষমতার লেজার ব্যবহার করে ডাটা স্টোর করা যায় যার ফলে এটি শক্তি সাশ্রয়ী এবং ব্যবহারকারীদের জন্যও সাশ্রয়ী হবে।
এই কম শক্তির প্রয়োজনীয়তা এটিকে ইন্টিগ্রেটেড ইলেকট্রনিক সার্কিটে অপটিক্যাল ডাটা স্টোরেজের জন্য আদর্শ করে তুলেছে।
এই প্রযুক্তির ত্রিমাত্রিক ( 3D) ডাটা স্টোরেজের উন্নতির মাধ্যমে কতটা ডিজিটাল ডাটা স্টোর করা যায় তার সীমানা বৃদ্ধি করার ক্ষমতাও রয়েছে।
প্রফেসর হেইক এভেনডর্ফ-হেইডেফ্রেইম বলেন,

” আমাদের মনে হয় এই ডাটা স্টোরেজ ফ্ল্যাটফর্মকে ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তিতে বৃদ্ধি করা সম্ভব যেখানে ন্যানো-ক্রিস্টালকে গ্লাস অথবা পলিমারের সাথে এমবেডেড হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এই প্রজেক্টের সুদূরপ্রসারী ব্যবহার হতেপারে নতুন পদার্থের ট্রান্সডিসিপ্লিনারি গবেষনার মাধ্যমে।”

 

ড. রেইজেন বলেন,

” অপটিক্যাল ডাটা স্টোরেজের মাধ্যমে একটি ছোট ডাটা কিউবে প্রায় পেটাবাইট পর্যন্ত ডাটা স্টোর করা সম্ভব। বলাবাহুল্য যে একজন মানুষের ব্রেইন প্রায় ২.৫ পেটাবাইট ডাটা ধারণ করতে পারে বলে ধারনা করা হয়। ডাটা স্টোরেজ সংকট মোকাবেলায় এটি একটি বড় সমাধান হতে পারে।”

 

সুত্রঃ সাইন্স ডেইলি।
জার্নালঃ অপটিক্স এক্সপ্রেস।

 

Comments are closed.