পৃথিবীর জমজ – প্রক্সিমা সেনটাওরি বি ( প্রক্সিমা পর্ব ৩)

বিগত পর্বের সংক্ষেপন:

পৃথিবীর বাইরে প্রাণের সন্ধান নিয়ে গবেষকরা অনেক ঘাম ঝড়িয়েছেন কিন্তু সঠিকভাবে প্রমাণসাপেক্ষে কোনো গবেষকই বলতে পারেননি পৃথিবীর বাইরে প্রাণ আছে। কিন্তু এবারের গবেষণা এই প্রাণের সন্ধানে লাগায় নতুন হাওয়া।  এবার পৃথিবী কাছাকাছি নয় সোজা ভিন গ্যালাক্সিতেই প্রাণ খুঁজতে শুরু করলেন মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকদল।  এবার তাঁরা খুঁজে পেয়েছেন পৃথিবীর জমজ ভাই – প্রক্সিমা সেনটাওরি বি।

 

এ পর্বের লেখা:

সৌরমন্ডলের হ্যাবিটেবল জোনে তিনটি গ্রহ রয়েছে।  শুক্র,  পৃথিবী আর মঙ্গল।  হ্যাবিটেবল জন্য সৌরমন্ডলে কেন্দ্ররে থাকা নক্ষত্রটির সবচেয়ে কাছের এলাকা। আমাদের সৌরমন্ডলের হ্যাবিটেবল জোনে শুক্র অনেকটাই ভিতরে এবং মঙ্গল ওই জোনের বাইরেরর দিকে পৃথিবীর অবস্থান একদম মাঝে। আর পৃথিবীর এই জমজ ভাইও রয়েছে তার নক্ষত্রের হ্যাবিটেবল জোনে।

 

চাঁদের  একটা পিঠ যেমন পৃথিবীর সামনে থাকে সব সময়, অন্য পিঠটি কোনোদিনও পৃথিবীর মুখ দেখতে পারে না,  ঠিক তেমনই ভিন গ্রহটিরও যে চাঁদ তার একটা  পিঠ থাকে প্রক্সিমা সেনটাওরি বি নাম দেয়া এই গ্রহটির সামনের দিকে।

 

আর প্রাণ না  খুঁজে পাওয়া একটা সঙ্কা হিসেবে গবেষক দল এখানে আছড়ে পরা সৌরঝড়, নানা রকমের বিকিরণ ও মহাজাগতিক রশ্মিকে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন প্রাণের বিকাশ কিছুতেই সম্ভব নয় নানা রকম সৌরঝড়ের দৌলতে।

 

এখানে দিন – রাত বা আহ্নিক গতি বলে কিছু নেই।  যে অক্ষে এটি তার নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরে তা পুরোপুরি গোলাকার হওয়ায় এখানে কোনো ঋতুও নেই।  পৃথিবীর দুই মেরুর সৌরঝরের মোকাবিলা করতে হয়।  পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র শক্তিশালী হওয়ায় তা বিপজ্জনক কণাগুলিকে পৃথিবীর চারদিকে ছড়িয়ে দেয়।  এ ধরনের প্রতিরক্ষা প্রক্সিমা সেনটাওরি বি তে আদৌ আছে কিনা তা নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারেন নি বিজ্ঞানীরা।

 

সম্প্রতি NASA নতুন একটি মহাকাশযান তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন যার মাধ্যমে ২০ বছরেই প্রাণে সন্ধানে পৌঁছে যাওয়া যাবে এ গ্রহে।  লেজারের মাধ্যমে একে আলোর ২০% গতিতে ত্বরান্বিত করা সম্ভব ( ঘন্টায় ১৩৪.১২ মিলিয়ন মাইল)।

এই গতিতে চললে প্রোবটি ২০-২৫ বছরেই পৌছে  যাবে প্রক্সিমা সেনটাওরি বি তে।

সেখান থেকে পৃথিবীতে সিগনাল আসতে সময় লাগবে ৪.৩ বছর।

 

এ প্রজেক্টটির পিছনে খরচ হবে ১০ বিলিয়ন ডলার।  মহাকাশযানটি তৈরিতে লেগে যাবে ২০-৩০ বছরের মত। অর্থাৎ সবচেেয় উন্নত প্রযুক্তির প্রোবটিও প্রস্তুত হতে ও গ্রহটিতে পৌছাতে মোট সময় লাগবে ৫৫ বছরের মত অর্থাৎ ২০৭০ সাল।

 

কী আছে ওখানে?  কল্পনা করতে ভাল লাগে যে হয়তো মিটমিট করে জ্বলতে থাকা ঐ তারকারাজির মধ্যে কোনো একটি গ্রহে বসে কেউ একজন আমাদের সূর্যে দিকে তাকিয়েও ঠিক এভাবেই শিহরিত হচ্ছে।

 

উৎসঃ

http://www.ice.csic.es/personal/iribas/Proxima_b/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>