“বৃষ্টি” শব্দটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত। সাধারণ ভাবে বলতে গেলে, ভূপৃষ্ঠে থাকা পানি একটি চক্রের মাধ্যমে মেঘ হয়ে তারপর আবার তা বৃষ্টি আকারে ভূপৃষ্ঠে আপতিত হয়। কিন্তু চিন্তা করুন, যে প্রায় ৪০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কি পানি পুণরায় তরলে পরিণত হতে পারবে? আজ্ঞে হ্যাঁ, আমি সূর্যের কথা বলছি। এটা কখনো সম্ভব না যে সূর্যের বৃষ্টিতে পানি থাকবে। তাহলে কি হতে পারে?
প্লাজমা বৃষ্টি আবার কি?
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, সূর্য হলো এক বিরাট আকৃতির বল, যার ভেতর অনবরত ফিউশন বিক্রিয়া হচ্ছে হাইড্রোজেন পরমাণুগুলোর মধ্যে। যার ফলে তৈরি হচ্ছে অত্যাধিক তাপশক্তি ও হিলিয়াম। এই তাপশক্তি আশে পাশে থাকা গ্যাস গুলোকে প্লাজমা গ্যাসে পরিণত করে। প্লাজমা হলো আয়নিত অবথায় থাকা মুক্ত গ্যাস যার তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে। এখন যেহেতু আয়নিত সে কারণে সূর্যের ম্যাগনেটিক পোল এর কারণে প্লাজমা গ্যাসের উপর বেশ প্রভাব পড়ে। আয়নিত ও গ্যাসীয় এবং উচ্চ তাপমাত্রার কারণে তাদের ঘনত্ব খুবই কম থাকে। যার ফলে এদের অবস্থান হয় সূর্যের পৃষ্ঠ থেকে অনেক উপরে।
ম্যাগনেটিক ফিল্ডের কারণে এদের চলার পথ কিচুটা উপরের ছবির মতো হয়ে থাকে। দেখে মনে হয় যেনো রোলার কোস্টারের লাইন এটা। আমাদের কথিত সেই বৃষ্টি ঠিক এখান থেকেই আসে।
তাহলে বৃষ্টি কিভাবে হলো?
ম্যাগনেটিক লুপে থাকা এই প্লাজমার অবস্থান সূর্য পৃষ্ঠ থেকে অনেক অনেক উপরে। তাই তাপমাত্রাও বেশ কম থাকে তুলনামুলক ভাবে। এই প্লাজমা গ্যাস এ শুধু হাইড্রোজেন না, থাকে বেশ কিছু আকরিক এর প্লাজমা অবস্থা। তাপমাত্রা ঠান্ডা হলে পুনরায় সূর্যের পৃষ্ঠে আপতিত হয় এরা। যাকে একভাবে বৃষ্টি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে।
নাসা এর গবেষক Emily Mason সর্ব প্রথম এটি লক্ষ্য করেন। তার সিমুলেশন মোতাবেক, সূর্যের অভ্যন্তরে কয়েক মিলিয়ন ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকলেও এই ম্যাগনেটিক লুপ এর তাপমাত্রা কয়েক হাজার ডিগ্রি মাত্র। আমাদের তথা কথিত এই বৃষ্টি ফিউশন বিক্রিয়ায় আরো এন্ট্রপির পরিবর্তন করে থাকে।
সূর্য নিয়ে নাসা আরো তথ্য দিবে। কারণ গত বছর নাসা সোলার প্রোব পাঠিয়েছে। যাকে তৈরি করা হয়েছে কেবল মাত্র সূর্য সম্পর্কিত তথ্য ও রহস্য ভেদ করার জন্য।
তথ্যসুত্রঃ curiosity