হতাশা কাটাতে ঘুম

সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং বিংহামটন বিশ্ববিদ্যালয় করা দুটি পৃথক পৃথক গবেষণায় দেখানো হয় রাতে কমপক্ষে ৮ ঘন্টার কম ঘুম দুশ্চিন্তা বা হতাশার মত নেতিবাচক চিন্তাভাবনার জন্য দায়ী। গবেষকরা জানান “যে সকল ব্যক্তিরা রাতে নির্দেশিত ৮ ঘন্টার কম ঘুমান তারাই দুশ্চিন্তা বা হতাশায় বেশী ভোগেন।”

প্রফেসর মেরেডিথ কোলিস এবং ড. জেকব নটা মধ্যপন্থী থেকে উচ্চ স্তরের পুনরাবৃত্তিমূলক নেতিবাচক চিন্তাশীল ব্যক্তিদের মধ্যে ঘুমের সময় এবং সময়কাল নির্ধারণ করেছেন।

পঞ্চাশ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের উপর বিভিন্ন ছবি প্রদর্শন করে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে বলা হয় এতে তাদের আবেগের বহিঃপ্রকাশ ও দৃষ্টি ভঙ্গির উপর গবেষকরা নজর রাখেন।

এতে গবেষকরা দেখেন যারা নিয়মিত ঘুমান তাদের চিন্তা বা মনোযোগ গুলো বরাবরই নেতিবাচক না হয়ে ইতিবাচক হয়।

যার ফলে অনিদ্রা বা অপ্রত্যাশিত ঘুম মানুষের চিন্তা গুলোকে ঘিরে ফেলে এবং অস্বাভাবিক  নেতিবাচকতায় ভরিয়ে ফেলে।  আর পরবর্তীতে তা প্রাত্যহিক জীবনে প্রভাব বিস্তার করে বলে তারা ধারনা করেন।

প্রফেসর কোলস বলেন, ” গবেষণায় আমরা দেখেছি যে এই মানুষের তাদের মনের মধ্যে কিছু চিন্তাভাবনা লুকিয়ে রাখার প্রবণতা রয়েছে। এবং তাদের জন্য নেতিবাচক উদ্দীপনা দিয়ে তাদের বিচ্ছিন্ন করা কঠিন হয়ে  উঠে যা আমরা তাদের প্রকাশ ভঙ্গিতে লক্ষ্য করেছি। “

“এই নেতিবাচক চিন্তাগুলি বিভিন্ন ধরনের মানসিক ব্যাধি যেমন দুশ্চিন্তা,হতাশা বা বিষণ্নতার জন্য অনেকাংশেই দায়ি।”

“আমরা সময়ের সাথে উপলব্ধি করেছিলাম যে  – এই পুনরাবৃত্তিমূলক নেতিবাচক চিন্তা বিভিন্ন  উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং অন্যান্য অনেকগুলি বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত।”

“পরবর্তীতে আমরা ঘুমাবার বাধাগুলি এবং তাদের মৌলিক প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব বিস্তারের উপায়গুলির উপর গবেষণা করছি যা এইসব নেতিবাচক চিন্তাকে উপেক্ষা করে সাহায্য করে।”

প্রফেসর কোলিস এবং ড. নোটার এই আবিষ্কারটি  ঘুমের সময়কাল কীভাবে মনোবৈজ্ঞানিক রোগের উন্নয়ন বা রক্ষণাবেক্ষণে অবদান রাখতে পারে তা মূল্যায়ন করছে।

যদি তাদের তত্ত্ব সঠিক হয়, তাহলে তাদের গবেষণায় মাধ্যমে  মনোবৈজ্ঞানিকগণ রোগীর ঘুমের চক্রগুলি স্বাস্থ্যকর সময়ের মধ্যে স্থানান্তরের মাধ্যমে মনোযোগ এবং বিষণ্নতার সঙ্গে তাদের আচরণজনিত পরিবর্তন  করতে পারবেন। অথবা যে কেউ চাইলেও নিয়মিত স্বাস্থ্যকর ঘুমের মাধ্যমে তাদের হতাশা কাটাতে সমর্থ হবেন।

তথ্যসুত্রঃ Journal of Behavior Therapy and Experimental Psychiatry 58: 114-122; doi: 10.1016/j.jbtep.2017.10.003

Comments are closed.