কেমন হয় যদি একটা ঘড়ি আমাদের রেগুলার হেলথ আপডেট দেয় এবং কখন কতটুকু ওয়ার্কআউট করতে হবে , কতটুকু ঘুমাতে হবে ,কত ক্যালরি বার্ন হল ইত্যাদি যদি এক মিনিটেই জানা ???
সে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্যেই আজকের লেখা……।।
কেন আপনি সেইরকম একটা ঘড়ি ব্যবহার করবেন?
সেইরকম ঘড়িগুলোকে বলা হয় স্মার্টওয়াচ মানে এটি শুধু টাইম আর ডেট দেখিয়েই ক্ষান্ত হবে না , আরো অনেক ফিচারে ঠাসা একটি জিনিস দিয়ে আপনাকে মুগ্ধ করে রাখবে।
চলুন তাহলে জানা যাক কি জন্যে আপনি একটি স্মার্টওয়াচ কিনবেন?
১…ফিটনেস আপডেটঃ

কিভাবে?
এটি ব্যবহার করে আপনি যেমন সময় জানতে পারবেন তেমনিভাবে নিজের হেলথ আপডেট রাখতে পারবেন, এখানে হার্টরেট সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে যা রেগুলার আপনার প্রয়োজনে আপনার হার্টরেট মেজার করে আপনাকে করনীয় বলে দিবে।। স্টেপ কাউন্টার আছে যা আপনি দৈনিক কত পথ হাটলেন তার হিসাব রাখবে এবং সে অনুযায়ী আপনি আপনার জন্যে একটি হেলথচার্ট বানাতে পারবেন।। হাটার ও ওয়ার্কআউটের ফলে আপনার দেহের কত ক্যালরি বার্ণ হল তাও দেখতে পাবেন। মোট কথা আপনি এটি ব্যবহারে আগের থেকে অনেক স্বাস্থ্য সচেতন হতে পারবেন এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় গুলো তখন একটি সুদূরপ্রসারী ফলাফল নিয়ে আসতে সক্ষম হবে। কত পথ অতিক্রম করলেন তাও দেখা যাবে এর ডিসপ্লেতে।
২…ফাইন্ড ফোন অপশনঃ
ফোন সাইলেন্ট মোডে রেখে দিয়েছিলেন, অন্য ফোন দিয়ে কল দিচ্ছেন , রিং হচ্ছে না, খুজেও পাওয়া যাচ্ছেনা, পড়ে গেলেন বিপদে। এখন?????
Bluetooth দিয়ে ফোনের সাথে স্মার্টওয়াচটি পেয়ার করা থাকলে কখনো যদি ফোন খুজে না পান তাহলে জিপিএস সাহায্যে খুব সহজেই খুজে পাবেন ফোনটিকে।
ফাইন্ড ডিভাইস নামের অপশন টির দ্বারা এটি করা যায়, তবে জিপিএস সবসময় অন রাখা লাগবে।
ধরা যাক ফোনটি আপনার হাতে, ডিভাইসটি আপনার পরিবারের কারো হাতে, কোথাও ঘুরতে গিয়ে আপনি তাকে ভিড়ে হারিয়ে ফেললেন, এখন তাকে কই খুজবেন?
মাথায় হাত…
চিন্তা নেই ফোনের দ্বারাই আপনি তাকে খুজে পাবেন যদি তার হাতে থাকা ওয়াচের জিপিএস অন করা থাকে, লোকেশন ট্র্যাক করে আপনি তাকে খুব সহজেই খুঁজে পেতে পারেন।
ফাইন্ড ডিভাইস থেকে ফাইন্ড পার্সন ও করা যায় তাহলে…
কিন্তু ওয়ান ডিভাইস ওয়ান ফোন হওয়ার কারণে মাল্টিপল ওয়াচ পেয়ার করা পসিবল না।।
৩…স্লিপ সাইকেল, অ্যালার্ম সেটিংঃ
কত ঘণ্টা ঘুমালেন, তার মধ্যে কতক্ষন গভীর ঘুমে ছিলেন , কতক্ষন হাল্কা ঘুমে ছিলেন সব মনিটর করবে এই স্মার্টওয়াচটি যদি আপনি ঘুমের আগে এই ওয়াচটি পড়ে ঘুমাতে যান তাহলে শুধুমাত্র এই ফিচারটি উপভোগ করতে পারবেন।
অ্যালার্ম এর বিষয়টা হল এমন ফোনে অ্যালার্ম দিয়ে রেখেছেন কিন্তু অ্যালার্ম বাজলো বুঝতেই পারলেন না ফলস্বরূপ কাজে,স্কুল,কলেজে যেতে লেট করে ফেললেন।
কিন্তু আপনার কাছে যদি এই স্মার্টওয়াচ টা থাকে তাহলে চিন্তামুক্ত থাকতে পারেন।
অ্যালার্ম সেট করে দিয়ে স্মার্টওয়াচ পড়ে ঘুমাবেন , সময় হলে এটি ভাইব্রেট করবে হাতে কিছুক্ষন পর পর। ফলে আপনি জেগে উঠবেন ।
মোবাইলের অ্যালার্ম এর তুলনায় অনেকগুনে বেশী কার্যকরী এটি।

৪…নটিফিকেশন চেকিংঃ
স্মার্টফোনের আসক্তির একটি অন্যতম কারণ হল এই নটিফিকেশন চেকিং।
এই বুঝি কে মেসেজ দিল,আর্জেন্ট কাজের ইনফো আসলো, মেইল পাঠালো কেউ…বারবার ফোন চেক করা মুদ্রাদোষে পরিনত হয়ে যায় ফলে আমাদের পিতামাতা বলেন সারাদিন ফোনেই থাক।
এ থেকে মুক্তি দিতে পারে একটি স্মার্টওয়াচ, কেনোনা সব নটিফিকেশন এর ছোট্ট ডিসপ্লে তে দেখাবে, তখন আপনি প্রয়োরিটি মোতাবেক কাজ করতে পারবেন এবং একটু পর পর ফোনচেক করার প্রবণতাও কমে আসবে, আপনি আপনার কাজেও মনোযোগী হতে পারবেন আগের তুলোনায়।
৫…টাইমার,কাউন্টার সেটিংঃ
ঘড়ি ধরে কাজ করা আমাদের অনেকের ই অভ্যাস…সে কাজে একটি ভালো মাধ্যম হতে পারে এই স্মার্টওয়াচ।
আমি তো পরীক্ষার হলে এতে টাইমার সেট করে পরীক্ষা দেই, ফলে সময় সম্পর্কে ভালো ধারণা থেকে যায় যা অনেক ক্ষেত্রে দরকারী।
৬…কল অ্যালার্ট/ কল রিজেক্টিংঃ
ক্লাসটাইমে কল আসলে কার না বিরক্ত লাগে, তার উপর স্যার বুঝতে পারলে তো হইছেই…
বা এমন হল আপনি একটি কাজে আছেন, আপনার ফোন সাইলেন্ট মুডে খুব জরুরি ফোন আসলো বাসা থেকে, আপনি বুঝতেই পারলেন না, যখন বুঝতে পারলেন ততক্ষনে বিরাট লস হয়ে গেছে অলরেডী।
এসব সমস্যার সমাধান হতে পারে স্মার্টওয়াচ…
কিভাবে?
কল আসলে ডিসপ্লে তে ভেসে উঠবে আপনি সেখান থেকে সোয়াইপ করে কল কেটেও দিতে পারেন কিংবা ফোন বের করে রিসিভ করতে পারেন। আশেপাশের কারো প্রব্লেম হওয়ার সুযোগ ও থাকল না।
৭…অ্যাপের সাথে কানেক্টিভিটিঃ
স্মার্টওয়াচ এর সাথে কম্পাটিবল একটি অ্যাপ ব্যবহার করলে আরো অনেক ফিচার উপভোগ করতে পারবেন।

এবার আসুন একটি স্মার্টওয়াচ কিনতে গেলে কি কি বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিৎঃ
- কিনার আগে দেখুন ওয়াচটি আপনার স্মার্টফোনের সাথে কম্পাটিবল কিনা।
- হার্টরেট সেন্সর ও জিপিএস আছে এমন ওয়াচ দেখুন
- ব্যাটারি লাইফ কতদিনের তা জেনে কিনুন, কত দিন ব্যাকআপ দিবে তা জেনে নিন
- দেখুন ওয়াচের স্ট্র্যাপটি কেমন, আরামদায়ক কিনা, রিপ্লেসমেন্ট/কিনতে সহজলভ্য কিনা
- কম্পাটিবল অ্যাপ সিলেকশন
- ওয়াটাররেজিস্টিভ কিনা(ip rating)
- ডিসপ্লে টাচ স্ক্রিন কিনা
- চার্জিং প্রসেস কেমন ইত্যাদি বিষয় গুলোতে খেয়াল রাখলে একটা বাজেট বেস্ট স্মার্টওয়াচ পাবেন।
তেমন কয়েকটি ওয়াচ এর উদাহরণঃ
- Mi band 3
- Mi band 4
- Honor band 4
- Xiaomi Amazfit – Budget-Friendly with Great Battery Life.
- Huawei Watch 2 – Lightweight. …
- ASUS ZenWatch 3 – Great Build Quality.
- Apple Watch Series 3 – Great for Fitness.
