সূর্য অভিযানে রওনা দিলো “পার্কার সোলার প্রোব”

সূর্যকে খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য  সর্বকালের সবচেয়ে দ্রুত গতির মহাকাশযান প্রেরণ করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা। গত রবিবার (১২ আগস্ট) ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল স্পেসস্টেশন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় এটি।

সূর্যের চারদিকে  উজ্জ্বল আভা যুক্ত এলাকা যেটি  ‘করোনা’ নামে পরিচিত, সেখানে গিয়ে ঢুকবে এই স্যাটেলাইট। সেখান থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে  এটি করোনার আবহাওয়া মণ্ডল , বিশেষ করে সৌরঝড় ও সূর্যের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে তথ্য জানাবে।

বলা হচ্ছে এটি  সূর্যের এত কাছে যাবে যা এর আগ পর্যন্ত কোনো যান যায় নি । একে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ ভাবে তাপ সহ্য করার ক্ষমতা দিয়ে । বলা হচ্ছে, ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি তাপ সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে প্রোবের।

প্রোব  হতে চলেছে ৭ বছরের একটি মিশন। এ সময়ের মাঝে  এটি ২৪ বার ভ্রমণ করবে সূর্যকে । করোনাতে পৌঁছানোর জন্য এটার প্রায় তিন মাস লেগে যাবে বলে জানা গেছে। ৬০ লাখ কিলোমিটার দূরত্ব থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করবে প্রোব ।  এটি অত্যন্ত দ্রুতগতি সম্পন্ন।  এ প্রজেক্টে নিযুক্ত  বিজ্ঞানী নিকি ফক্স বলেন,  “এত দ্রুতগতির কোনো কিছু আগে তৈরি হয়নি। সূর্যের চারদিকে এটি প্রতি ঘণ্টায় ৬৯০,০০০ কিমি পর্যন্ত গতিতে ঘুরবে। অর্থাৎ এই গতিতে নিউইয়র্ক থেকে টোকিও যেতে লাগবে এক মিনিটেরও কম সময়।”

এ মিশনটিকে এখন পর্যন্ত হওয়া মহাকাশ মিশনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল। এ মিশনের পেছনে নাসার খরচ হয়েছে  দেড়শ কোটি ডলার।   পৃথিবীর প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য এই মহাকাশযানটি মঙ্গলগ্রহে উৎক্ষেপণ সময়কালীন লঞ্চ এনার্জি থেকে ৫৫ গুণ বেশি লঞ্চ এনার্জি তৈরি করতে হয়েছে।

এতে ম্যাগনেটিক ও ইলেকট্রিক ফিল্ড, প্লাজমা তরঙ্গ এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পার্টিকেল পরিমাপের জন্য বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি বসানো হয়েছে। এছাড়াও  সোলার চালিত এই যানের যন্ত্রপাতি থাকবে ৪.৫ ইঞ্চি পুরু কম্পোজিট কার্বনের আবরণে দিয়ে মোড়া যা সূর্য থেকে পৃথিবীতে আসা রেডিয়েশনের চেয়েও ৫০০ গুণ বেশি রেডিয়েশন প্রতিরোধ করতে পারে । ফলে ভেতরের তাপমাত্রা সবসময় ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ভেতরে থাকবে। যার কারণে এর ভেতরের যন্ত্রপাতি ক্ষতি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে।

সূত্রঃ

এনএইচটি,  স্পেস ডট কম

Comments are closed.