সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী জানা গেছে যে, চাঁদ এবং মঙ্গলের পর সূর্যের আশে পাশেও নাসার বিজ্ঞানীরা ঘুরঘুর করছেন। “ফিউচার হোম” খুঁজে পাওয়ার জন্য নাসার বিজ্ঞানীরা ‘চাঁদ-মঙ্গল’ নাহয় করতেই পারেন কিন্তু সূর্যের আশে পাশে তাঁরা আসলে কি করতে চাচ্ছেন? চলুন বিস্তারিত জেনে আসি…….
সূর্য সম্পর্কিত একটি মিশনের বহুল প্রতিক্ষিত তথ্য প্রকাশ করছে নাসা। সূর্যের চারপাশে প্রদক্ষিণ করার জন্য তারা “সান প্রোব প্লাস” নামের একটি স্পেস ক্রাফট পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
স্পেস ক্রাফটটি সাইজে একটি ছোট খাটো গাড়ির সমান। এটিকে ১৪০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা সহ্য করে টিকে থাকার উপযোগী করে তৈরী করা হচ্ছে। এবং শোনা যাচ্ছে যে, আগামী গ্রীষ্মে এ মিশনটি বাস্তবায়িত হবে। এবং মিশনটি বাস্তবায়িত হলে “সান প্রোব প্লাস” নামক স্পেস ক্রাফটটি “সান সারফেস” এর ৪ মাইলের মধ্যে অবস্থান করে সূর্য সম্পর্কিত গবেষণায় নজিরবিহীন অবদান রাখবে।
“এটা এক কথায় অসাধারণ। এটা এমন একটা ব্যাপার যা মানুষ মহাকাশ গবেষণার শুরু থেকেই করে আসতে চাইছে।”— আবেগাপ্লুত ভাবে কথা গুলো বলছিলেন ইম্পেরিয়াল কলেজ অফ লন্ডনের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক প্রফেসর হারবারি।
সত্যিই তাই। মানুষ চাঁদে পা দিয়েছে। নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে। মঙ্গলে যাওয়ার চিন্তাও করছে। কিন্তু সূর্যের বেশিরভাগটা এত দিন শুধু মাত্র তত্ত্ব আর কল্পনার মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিল। “সান প্রোব প্লাস” সূর্য গবেষণায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চলেছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন ১.৫ বিলিওন বাজেটের এই মিশনটি সূর্য সম্পর্কে আমাদের ধারণা বদলে দেবে। “এটি একটি ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ এবং বৈজ্ঞানিকভাবে মনোমুগ্ধকর একটি মিশন” —বলেন প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যাক কমাস। তিনি আরো বলেন “সূর্য সম্পর্কিত ব্যাপারে ইতোপূর্বে মানবজাতির বানানো যেকোন কিছুর চাইতে এটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ”
“সূর্য অবশ্যই প্রচন্ড গরম। এর বাইরের আবহমন্ডল কয়েক লক্ষ ডিগ্রি ক্যালভিন তাপমাত্রায় উত্তপ্ত। এর ফলে এটি স্পেসে এক ধরনের “বুদবুদ” প্রবাহিত করে। আর আমরা এই বুদবুদের মাঝে বাস করি। আমরা ‘হেলিওস্ফিয়ার’ এর মাঝে বাস করি। হেলিওস্ফিয়ার হলো এক ধরণের সৌর বায়ু যা স্পেসে বুদবুদ গুলোকে প্রবাহিত করে। “— কথা গুলো বলেন প্রফেসর হারবারি।
সান প্রোব প্লাসের লক্ষ্য মূলত দুটি। ১. সূর্য কিভাবে সৌর বায়ু উৎপন্ন করে তা বোঝা। এবং ২. সূর্যের ভৌত অবস্থা বোঝা।
“আমরা যখন স্পেস থেকে প্রথম সূর্যের দিকে তাকিয়েছিলাম তখনই অনুভব করেছিলাম সূর্য শুধু মাত্র একটি বিরক্তিকর হলুদ আকৃতি নয়। এটি একটি আকর্ষণীয় একটিভ প্লাজমা অবজেক্ট।” –বলেন হারবারি।
এই মিশনটি শুধু মাত্র সূর্য সম্পর্কিত অভূতপূর্ব তথ্য গুলোই উদঘাটন করবে না, একই সাথে এটি সারা মহাবিশ্বের তারা গুলোর ভৌত পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়ার ওপরও আলোকপাত করবে।
লিখা: তানভীর ইশরাক উৎস