চা এবং কফি, আমাদের নিত্যদিনের জন্য খুবই সাধারণ একটি ব্যাপার। সকালে ঘুমের পর বা কোনো কাজ শুরুর আগে এক কাপ চা বা কফি যেনো আপনাকে বুস্ট করে। এখন এখানে একটি স্নায়ুবিক যুদ্ধ সব সময়ই চলে কফি এবং চা প্রেমীদের মাঝে। তো চলুন ৫ মিনিটের মধ্যে এই যুদ্ধের শেষ টানি।
চাঃ

চা এর উপকারী দিকঃ
চা এর উপকারীতার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এতে থাকা এন্টিওক্সিডেন্ট উপাদান সমুহ। রক্তের ভেসেলগুলোর জমাট বেধে যাওয়া প্রতিরোধ করে থাকে। চা পানকারীদের স্ট্রোক এবং হৃদপিণ্ডের রোগে ভোগার সম্ভাবনা কম থাকে। অনেক স্টাডিতে চা কে বলা হয়ে থাকে, “Brain Booster” । একটি স্টাডিতে দেখা গেছে, যারা দিনে ৩ কাপ চা পান করে, তারা অন্যান্যদের তুলনায় শেষ বয়সে মেমোরি লস এ কম ভুগে থাকে। তাছাড়া নিয়মিত চা পানকারীদের অস্থির ঘনত্ব বৃদ্ধি পায় কারণ চায়ের মধ্যে থাকে আয়রন। ফলে হাড় ক্ষয়ের সম্ভাবনাও কম থাকে।
চা এর অপকারীতাঃ
যেহেতু পরিমানের তুলনায় বেশি আয়রন থাকে তাই আপনার পরিপাক ক্রিয়ায় এটি একটু সমস্যা করে থাকতে পারে। এমনিতে সম পরিমাণ চা এবং কফির ক্ষেত্রে, ৬২% আয়রন থাকে চা এর মধ্যে এবং কফিতে থাকে ৩৫%। চায়ের অপকারীতা তখনি শুরু হয়, যখন আপনি এর সাথে পরিমিত পরিমানের চেয়ে বেশি চিনি মেশানো শুরু করবেন। এছাড়া এতে ক্যাফেইন থাকে যদিও তা কফির তুলনায় কম।
কফিঃ

উপকারীতাঃ
হাভারড এর এক গবেষণা অনুযায়ী, নিয়মিত যারা ৩-৫ কাপ কফি পান করে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাধারণের তুলনায় অনেক বেশি থাকে। বিশেষ করে, টাইপ-২ ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি দেয় কফি। তাছাড়া হৃদপিণ্ডের রোগের ঝুকি থেকেও আপনাকে নিরাপদের রাখতে সক্ষম। তাছাড়া কফি পানের উপকারিতা নিয়ে আরো বিস্তারিত জানতে এই লিংকে যান।
অপকারীতাঃ
চায়ের মতো কফির অপকারীতা শুরু হয় যখন থেকে আপনি অতিরিক্ত চিনি মিশানো শুরু করবেন। তবে কফিতে ক্যাফেইন এর মাত্রা তুলনামুলকভাবে অনেক বেশি। অতিরিক্ত ক্যাফেইন আপনার ঘুমের প্যাটার্নে সমস্যা করতে পারে এবং শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। তবে গর্ভবতী মেয়েদের জন্য কফি পান নির্দিষ্ট করা উচিত। কফির কারণে হাড়ের মধ্যে পরিবর্তন নিয়ে কোনো ফলাফল এখনো পাওয়া যায় নি। কফি আপনার ব্লাড প্রেশার বাড়িয়ে দিতে পারে যেটা চা এর ক্ষেত্রে পুরোপুরি উলটো। কিডনি রোগের আক্রান্তদের কফি থেকে দূরে থাকাটাই বেশ ভালো। কফির সাথে উইপ ক্রিম, সিরাপ ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন। যেহেতু কফি এন্টি অক্সিডেন্ট এর এক বিশাল উৎস, তাই এর সাথে চিনি বা এক্সট্রা ক্যালরি যুক্ত কোনো উপদান মিশ্রিত করা থেকে বিরত থাকুন।
শেষ কথায় আশা যাক !!!
এটা পুরোপুরি আপনার উপর। যদি আপনি ক্যাফেইন জনিত কারণে বেশি সেনসিটিভ হয়ে থাকেন তবে চা ই আপনার জন্য উপকারী। কফি এবং চা উভয় ই উপকারী যতক্ষন না আপনি এর সাথে অতিরিক্ত চিনি যোগ করছেন। আর চা এর ক্ষেত্রে একটি পরামর্শ, তথাকথিত গ্রিন – টি তে ৩ গুন বেশি catechins থাকে, যা এক প্রকার এন্টি অক্সিডেন্ট। তাই রঙ চা নিলে বেশি উপকারী হবে গ্রিন টি। আজকের মতো এখানেই সমাপ্ত করছি।
এই ধরনের আরো আর্টিকেল চাইলে আপনারা কমেন্টে জানান। ধন্যবাদ।
One Comment
অবশেষে এ রাশিয়াতে আবার চালু হলো টেলিগ্রাম। | বিজ্ঞানবর্তিকা
[…] কফি নাকি চা? […]