টানা দুই বছর বন্ধ থাকার পর রাশিয়াতে আবার চালু হলো জনপ্রিয় চ্যাট বা মেসেজিং app টেলিগ্রাম। গত দুই বছর আগে ২০১৮ এর এপ্রিল এ রাশিয়া তে নিষেধাজ্ঞায় পড়ে টেলিগ্রাম। তার কারণ টেলিগ্রাম তাদের ব্যবহারকারীর মেসেজ এনক্রিপশন কি রাশিয়ার সরকার এর সাথে শেয়ার করতে চায়নি।
ঘটনাটি শুরু হয় ২০১৮ তে যখন রাশিয়ার সরকার বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন এর অনুসন্ধান শুরু করে এবং অনেক সংগঠন এর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় টেলিগ্রাম app এ। জঙ্গি সংঘটন গুলি টেলিগ্রাম এর মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম চালাতো এবং অনুসন্ধানের পরিপ্রেক্ষিতে যখন টেলিগ্রামের অস্তিত্ব দেখা যায় তখনই রাশিয়ার কাউন্টার ট্যারোরিজম ইউনিট টেলিগ্রামের সিইও পাভেলের সাথে যোগাযোগ করে। তারা টেলিগ্রামের বার্তা এনক্রিপশন কি চায় যাতে করে জঙ্গিদের বার্তা ডিক্রিপ্ট করা যায় এবং তাদের বিভিন্ন তথ্য জানতে পারে। কিন্তু টেলিগ্রাম সিইও সরাসরি না বলে দেয়। টেলিগ্রাম তাদের এনক্রিপশন কি কোন ভাবেই শেয়ার করবে না বলে জানিয়ে দেয়। এবং ব্যাপারটি কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। টেলিগ্রাম কে নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেয়া হলে টেলিগ্রাম এর সিইও বলে ” Privacy is not for sale, and human rights should not be compromised out of fear and greed ” ( গোপনীয়তা বিক্রয়ের জন্য নয়, এবং ভয় এবং লোভের কারণে মানবাধিকারের সাথে আপোষ করা উচিত নয়)। যার ফলাফল হিসেবে রাশিয়ার আদালত এপ্রিলেই টেলিগ্রাম কে নিষেধাজ্ঞার আওতায় নিয়ে আসে।
যদি টেলিগ্রাম তাদের এনক্রিপশন কি রাশিয়ার সরকারের সাথে শেয়ার করতো তাহলে তারা সকল টেলিগ্রাম ব্যবহার কারীর বার্তা সহকারে সকল তথ্য উপলব্ধি করদে পারতো যা ব্যবহারকারীর গোপনীয়তার উপর আক্রমণের মতই। কিন্তু ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন ভাবে টেলিগ্রাম চালাতে থাকে আর তখনই রাশিয়ার সরকার প্রায় ১৫.৮ মিলিয়ন আইপি Block করে দেয় গুগল ক্লাউড এবং আ্যমাজন এর। তাছাড়া তার পাশাপাশি সকল ভিপিএন ও ইন্টারনেট এনোনিমাইজার ও বন্ধ করে দেয় যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা টেলিগ্রাম সুবিধা গ্রহণ করছিলো।
বড় ধরনের সমস্যা শুরু হয় যখন রাশিয়ার ব্যবসায়ীমহলে এর প্রভাব পড়তে থাকে, গুগল ক্লাউড ও আ্যমাজনের ১৫.৮ মিলিওন আইপি বন্ধের কারণে ব্যবসায়ী জনিত বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে শুরু করে ব্যবসায়ীরা এতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছিল অর্থনৈতিক ব্যবস্থা।
এমাসের শুরুতে টেলিগ্রাম সিইও পাভেল জানায় যে রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ টেলিগ্রামের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নিয়েছে। তিনি আরো জানান, টেলিগ্রাম তাদের নিরাপত্তা ও তথ্য বিশ্লেষণ ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনেছে এখন তারা চরমপন্থি কোন কার্যক্রম চলছে কিনা তা শনাক্ত করতে পারবে এবং তা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। করোনা কালীন এইসময়ে যখন এইসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম একটি বড় ধরনের ভূমিকা পালন করছে ঠিক তখনই টেলিগ্রাম এর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নিয়ে একটি গুরুত্বসম্পন্ন কাজ করলো রাশিয়ার সরকার।
তথ্যসূত্রঃ thenextweb, the verge