দ্য গ্রেট ব্লু হোল – নামটি যারা প্রথম বার শুনলেন, তাদের একটু খটকা লাগতেই পারে। আরে এটা আবার কি ?? খুব রহস্যময় কিছু ? ? নিশ্চয়ই ব্ল্যাক হোল এর মত কিছু একটা। আপনি যা ভাবছেন,সেরকম কিছুই না। এটি আমাদের পৃথিবীতেই অবস্থিত এবং ডুব সাঁতারের জন্য খুবই জনপ্রিয় একটি স্থান। চলুন তবে দ্য গ্রেট ব্লু হোল সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে আসি।
গ্রেট ব্লু হোল বেলিজ উপকূলে অবস্থিত একটি সমুদ্র-গর্ভস্থ গর্ত। এটি মূলত একটি বিশাল কেভ নেটওয়ার্ক এর প্রবেশদ্বার। বেলিজের বেরিয়ার রিফ রিজার্ভ সিস্টেমে অবস্থিত । এটি বেলিজ সিটি থেকে প্রায় ৬০ মাইল দূরে উপকূলবর্তী প্রবাল প্রাচীরের কেন্দ্রে অবস্থিত। বেলিজ এর প্রবাল প্রাচীর গুলো ১৯৯৬ সালে UNESCO ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃতি পায়। বেলিজের সাতটি বিখ্যাত প্রবাল প্রাচীরের মধ্যে লাইটহাউজ প্রাচীরটির কেন্দ্রে এটি অবস্থিত।
ব্লু হোলের পানি বেশ নীল,যার কারণে সমুদ্রের সবুজাভ পানি থেকে এটিকে সহজেই আলাদা করা যায়। এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র গর্ত ধরা হয়। এর আকৃতি বৃত্তাকার, ব্যাসার্ধ ৩০০ মি. ( ৯৮৪ ফুট) এবং ১২৪ মিটার (৪০৭ ফুট) গভীর।
ধারণা করা হয়,৬৫ হাজার বছর আগে পৃথিবীতে যখন বরফ শেষ বারের মত রাজত্ব করেছে, তখন পৃথিবীর সব পানি জমে জড়ো হয়েছিল মেরু অঞ্চলে। সমুদ্রপৃষ্ঠও তাই তখন ছিল এখনকার চেয়ে অনেক নিচুতে। বেলিজে তখন সমুদ্রপৃষ্ঠ ছিল এখনকার চেয়ে আরো ১৫০ মিটার নিচুতে। তখন ক্যালসিয়াম কার্বনেট জাতীয় পদার্থ জমে তৈরি হয় পাথর। আর সেই পাথর দিয়ে সৃষ্টি হয় কেভের বিশাল কাঠামো। কিন্তু বরফ যখন আবার গলতে শুরু করে,সাগরের পানির উচ্চতাও বাড়তে শুরু করল। তখন পানির নিচে ডুবে যায় সেই কাঠামো। আজ থেকে প্রায় ১৫ হাজার বছর আগে পুরো কেভ নেটওয়ার্ক ই পানির নিচে ডুবে যায়। আর তখন ই কয়েক জায়গার পাথর ভেঙে সৃষ্টি হয় এই ব্লু হোল।
বিজ্ঞানী দের মতে,এই ব্লু হোল পৃথিবীতে অদ্বিতীয়। এটি ২০১২ সালে ডিসকভারি চ্যানেলের বিশ্বের সবচেয়ে অভূতপূর্ব জায়গা তালিকায় প্রথম স্থান দখল করে নেয়। সামুদ্রিক প্রবাল এবং জলজ উদ্ভিদ দ্বারা সন্নিবেশিত এই হোলটির জীববৈচিত্র্য জগদ্বিখ্যাত।
চাইলে আপনিও সেখানে যেতে পারেন আপনার পরিবার বা বন্ধু বান্ধব দের নিয়ে ডুব সাঁতারের জন্য।
1. https://belize.com/belize-blue-hole/
2.https://en.m.wikipedia.org/wiki/Great_Blue_Hole