নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে একটা সুস্থ পৃথিবীর কারিগর বললেও কম বলা হবে।
যদিও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, তারপরেও এর গ্রাফ শুরু থেকেই উপরের দিকে উঠতেই আছে। আগামীতে যে পৃথিবীর জ্বালানি চাহিদা মিটাতে নবায়নযোগ্য ই হবে একমাত্র উপায়, সে বিষয়ে আশা করি কারো দ্বিমত নেই, কারণ হিসেবে বলি:
#কয়লা বায়ুদূষণ করে, সেটা আপনি সাব ক্রিটিক্যাল/সুপার ক্রিটিক্যাল/আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল যে প্রযুক্তিই ব্যবহার করেন না কেন-
#পারমাণবিক চুল্লি হয়তবা অনেকদিন সার্ভিসে থাকে, তবুও এর দ্বারা সৃষ্ট বিপদের কথা চিন্তা করলে দেখা যাবে যে, বিশ্বব্যাপী অনেক দেশ ই পারমাণবিক চুল্লির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে-
#এবার প্রাকৃতিক গ্যাস, যা প্রায় শেষের দিকেই বলা যায়, এসব অনবায়নযোগ্য শক্তি একবারেই শেষ করলে যে আমাদের দীর্ঘমেয়াদে ভুগতে হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
উপরের কথা গুলো একটি চিন্তা করলেই বুঝা যায় যে, নবায়নযোগ্য জ্বালানী ব্যতীত মানব সভ্যতার দৌড় কতদূর।
তবে এইযে নবায়নযোগ্য জ্বালানি আছে, তাদের মধ্যেও আবার ভাগ আছে।
যেমন : বায়ুবিদ্যুত কেন্দ্র: বাতাসের ভ্যারিয়েশন এর কারণে এর থেকে কন্সট্যান্ট আউটপুট পাওয়া যায়না, যা গ্রিডের সাথে সংযুক্ত থাকলে গ্রিডের স্ট্যাবিলিটি একটু হলেও নড়িয়ে দেয়, সেই সাথে একেকটা বায়ুকল এর উচ্চতা হতে হয় ১০০-২০০ মিটার যাতে আউটপুট ভালো পাওয়া যায়, যা খরচসাপেক্ষ, আবার ভৌগোলিক কারণে আমি এখন পর্যাপ্ত বাতাস পাচ্ছি, কিন্তু ২/৫ বছর পরে বাতাসের গতি কমে যাচ্ছে, যা প্রভাব ফেলবে।
এর পরে আসে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র:
আসলে এর প্রাথমিক খরচের কারণে অনেক দেশ ই এই ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করে না, আবার সকল দেশে কিন্তু খরস্রোতা নদী ও নেই, যদিওবা কয়েক দেশের আছে, তবুও সীমান্ত+ মালিকানাধীন জটিলতায় সেগুলো আলোর মুখ দেখে না, এছাড়াও বিশাল এলাকার দরকার তো আছেই।
এবার আসি সৌরবিদ্যুৎ এর ব্যাপারে, এই একটাই এখনো নবায়নযোগ্য জ্বালানির দৌড়ে এগিয়ে আছে অন্যদের চেয়ে, এছাড়াও এর পার ইউনিট খরচ ও অনেক সময় কয়লা, ন্যাচারাল গ্যাসের থেকেও কম পড়ে।
যাই হোক অনেক কথাই বলে ফেললাম, আমাদের আজকের টপিক ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় ৫টি সোলার পার্ক নিয়ে।
তো চলুন শুরু করা যাক তাহলে:
প্রথমেই শুরু করবো ৫ নাম্বার টা দিয়ে:
৫. Delingha Solar Park

Source: Brightsource Energy
দেশ: চীন
ক্যাপাসিটি: ১০০০মেগাওয়াট
এরিয়া: স্পেসিফাই করা নেই
খরচ: স্পেসিফাই করা নেই
অবদানঃ মোট উৎপাদন ক্ষমতার ০.০৫%
ভারতের একটি সোলার পার্ক ও ১০০০ মেগাওয়াট ধারণক্ষমতা সম্পন্ন তাই ৫ম স্থানে চীন ও ভারতের একটি একটি করে মোট দুইটি সোলার পার্ক।
Ultra Mega Solar Park

source: walkthroughindia
দেশ: ভারত
ক্যাপাসিটি: ১০০০মেগাওয়াট
এরিয়া: ৫৯৩২ + একর (২৪বর্গকিমি)
খরচ: ৭১৪৩কোটি রুপী
অবদানঃ মোট উৎপাদন ক্ষমতার ০.২৭%
৪. Tengger Desert Solar Park

দেশ: চীন
ক্যাপাসিটি: ১৫৪৭মেগাওয়াট
এরিয়া: ৪৩ বর্গকিমি
খরচ: unspecified
অবদানঃ মোট উৎপাদন ক্ষমতার ০.০৭৮%
৩. Golmud Desert Solar Park

দেশ: চীন
এরিয়া: ১০৬২৫+ একর (৪৩ বর্গকিমি)
ক্যাপাসিটি: ১৮০০ মেগাওয়াট
খরচ: unspecified
অবদানঃ মোট উৎপাদন ক্ষমতার ০.০৯%
আরো জানতে:
২. Shakti Sthala Solar Power Project

দেশ: ভারত
ক্যাপাসিটি: ২০৫০ মেগাওয়াট
এরিয়া: ১৩০০০+ একর(৫৩বর্গকিমি)
খরচ: ১৪৮০০ কোটি রুপী
অবদানঃ মোট উৎপাদন ক্ষমতার ০.৫৪%
এই সম্পর্কে আরো জানতে ক্লিক করুন
১. Bhadla Solar Park:

দেশ: ভারত
ক্যাপাসিটি: ২২৪৫ মেগাওয়াট
এরিয়া: ১০০০০ একর (৪০বর্গকিমি)
খরচ: ১৪০০০কোটি রুপী
অবদানঃ মোট উৎপাদন ক্ষমতার ০.৬%
এই প্লান্টের ট্যারিফ হল ২.৪৪রুপি/কিলোওয়াটঘন্টা, যা অন্য সব সোর্সের তুলনায় বেশ কম
চালু হয়েছে: ২০ মার্চ, ২০২০
গড় তাপমাত্রা: ৪৬-৪৮° সেলসিয়াস
ট্যারিফ: ২.৪৪রুপি/ইউনিট
৪ ধাপে সম্পন্ন করা হয়েছে কাজটি
বাংলাদেশের কিছু সোলার প্লান্ট নিয়ে জানাচ্ছি
কাপ্তাই সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পঃ
কাপ্তাই এ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশের ৭.৪ মেগাওয়াটের একটি সোলার প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে এবং বর্তমানে রানিং।
টোটাল পাওয়ার: ৭.৪ মেগাওয়াট
প্যানেল সংখ্যা: ২৪,০১২টি
এরিয়া: ২৩ একর
খরচ: ১১০ কোটি টাকা
পার ইউনিট কস্ট: ৫.৪৮টাকা
প্যানেলের মেয়াদ: ২৫ বছর
ইনভার্টার সংখ্যা: ২৪০টি
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান : চীনের জেডটিই
মূল প্রতিষ্ঠান : বিপিডিবি
সরবরাহ হচ্ছে গ্রিডে ১৩২কেভি লাইনের মাধ্যমে
এছাড়াও
Largest Solar Power plant In BD:
দেশঃ বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের যৌথ উদ্যোগে
খরচঃ প্রায় আটশত কোটি টাকা
জায়গাঃ ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলাধীন সুতিয়াখালীতে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে
এরিয়াঃ ১৭৪একর জায়গাজুড়ে
ক্যাপাসিটিঃ দেশের সর্ববৃহৎ ৫০ মেগাওয়াট সৌর
কাজের অগ্রগতিঃ বিদ্যুৎ প্রকল্পের ৮৫% কাজ প্রায় শেষ হওয়ার পথে।
এখানে উৎপাদিত ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে ময়মনসিংহ শহরের কেওয়াটখালীস্থ জাতীয় গ্রিডে।
One Comment
মরূভূমিতে সোলার প্যানেলঃ সম্ভাবনা ও সীমাবদ্ধতা | বিজ্ঞানবর্তিকা
[…] […]