
বর্তমানে এমন অবস্থা হয়ে দাড়িয়েছে যে মানুষ ঘুমাতে যাওয়ার আগে তো স্মার্টফোন চেক করেই সাথে ঘুম থেকে উঠেই দাঁত ব্রাশ করার আগেই ফোন চেক করে।
ফোন চেক না করে দিন শুরু করার কথা আজকাল ভাবাই দুষ্কর।
এইযে এই আর্টিকেল টা দেখছি তার জন্যেও স্মার্টফোন দরকার কিন্তু।
দিনরাতের বেশির ভাগ সময় ই ফোনে উপর ঝুকে থাকা হয় কম বেশী সকলেরই।
কিন্তু কেমন হবে যদি আপনার ফোন হ্যাং, ল্যাগ, ফ্রিজিং,টাচ ল্যাটেন্সী ইত্যাদিতে ভোগে ?
মেজাজ এর পারদ চড়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক।
তবে চলুন এমন কিছু ফোন সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক যেগুলো বাজার তো কাপাচ্ছেই ,আপনাকেও কাপাতে সক্ষম হোক সেটা ফিচার অথবা দাম দিয়ে।
প্রযুক্তির নিত্যবদলের সঙ্গে থাকা চাই নতুন স্মার্টফোন। চলতি বছরে নতুন কী কী স্মার্টফোন বাজারে আসছে, তাও তো জানা চাই। জেনে নিন, চলতি বছরে আসবে বা রানিং এমন স্মার্টফোনগুলোর মধ্যে সেরা কয়েকটির বৃত্তান্ত।
গতবছর স্মার্টফোনের রাজ্যে বেজেললেস ডিসপ্লে/ ফুল্ভিউ ডিসপ্লে কিংবা ডিউ ড্রপ/ওয়াটার ড্রপ নচ এর মত নতুন কিছু ডিজাইন ট্রেন্ড এসেছিল। সেই সাথে ডুয়াল/ট্রিপল ক্যামেরায় বোকেহ ইফেক্ট অথবা ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার করার ফিচারটিও খুব হাইপ তৈরি করেছিল। ২০১৯ সালে এসে এই ফিচারগুলোরই একটু উন্নত রূপ দেখা যাচ্ছে ফোনগুলোতে।
হুয়াওয়ে পি৩০ প্রো

২০১৯ এর সেরা ফোন এটি এতে কারো কোন দ্বিমত থাকার কথা না। বিশেষ করে এর ক্যামেরা বিবেচনায়। ৬.৪৭ ইঞ্চি ডিসপ্লের ফোনটি এসেছে বাজারের অন্যতম দ্রুতগতির প্রসেসর হুয়াওয়ের নিজস্ব কিরিন ৭ ন্যানোমিটার ৯৮০ চিপসেট যেখানে ব্যবহার করা হয়েছে ডুয়াল নিউরাল প্রসেসিং ইউনিট।
আইপি ৬৮ রেটিং সম্পন্ন ফ্ল্যাগশিপ ফোন এটি। সাব্জেট কালার ঠিক রেখে ব্যাকগ্রাউন্ড কালার কন্ট্রোল করার মত টেকনিক ব্যবহার করা হয়েছে এতে। ৪০ ওয়াটের সুপারচার্জার ব্যবহার করা হয়েছে এতে সাথে রিভার্স ওয়্যারলেস চার্জিং সুবিধা রেখেছে।
৮ জিবি র্যাম, ৪২০০ মিলিএম্প ব্যাটারি আর ৫১২ জিবি স্টোরেজ নেহাত সাধারণ মনে হলেও এর ক্যামেরাতেই থাকছে চমক। ৪০ মেগাপিক্সেল মেইন সেন্সর, ২০ মেগাপিক্সেল আলট্রাওয়াইড, ৮ মেগাপিক্সেল টেলিফটো আর সাথে ত্রিমাত্রিক একটি ডেপথ সেন্সরও আছে। এর টেলিফটো ক্যামেরাটি ৫ গুন পর্যন্ত লসলেস অপটিক্যাল জুম এবং ৫০ গুন পর্যন্ত ডিজিটাল জুম করতে পারে। সাথে আছে অসাধারণ লো লাইট ছবি তোলার ক্ষমতা। ফোনটি পাওয়া যাচ্ছে ৮৮০ ইউরো থেকে। বিশ্বের সেরা ১০ স্মার্টফোন তালিকার সবার শীর্ষে তাই হুয়াওয়ে পি৩০ প্রো। পি৩০ প্রো স্মার্টফোনে কোয়াড ক্যামেরা সেটআপ রাখা হয়েছে। এতে ১/১.৭ হুয়াওয়ে স্পেকট্রাম সেন্সরযুক্ত ৪০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা ও এফ/১.৬ লেন্স, এফ/২.২ অ্যাপারচারের সেকেন্ডারি ক্যামেরা ২০ মেগাপিক্সেল আলট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ও অ্যাপারচার এফ/ ২.৪ টেলিফটো ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরার পাশাপাশি টাইম অব ফ্লাইট (টিওএফ) ক্যামেরা যুক্ত রয়েছে। এতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত এইচডিআর প্লাস প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে।
স্যামসাং গ্যালাক্সি এস১০ ও এস১০+

বিশ্বের সেরা ১০ স্মার্টফোন তালিকায় স্যামসাং গ্যালাক্সি এস সিরিজ থাকা অত্যাবশ্যক! স্যামসাং এর এই লেটেস্ট ফ্ল্যাগশিপগুলো দেখতে খুবই চমৎকার। বিশেষ করে এদের ডিসপ্লেতে থাকা লেজার কাট ক্যামেরা হোল গুলো। স্ন্যাপড্রাগন ৮৫৫, ৮ জিবি র্যাম, ৫১২ জিবি স্টোরেজ আর সাথে থাকছে ৬.১ ইঞ্চির ডায়নামিক এমোলেড ডিসপ্লে। ১২, ১২ ও ১৬ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল ক্যামেরা আর সাথে ১০ মেগাপিক্সেলের একটি সেলফি ক্যামেরাও আছে ফোনটিতে। এর ডিসপ্লেতে আল্ট্রাসনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরও আছে।
ফোনটির ব্যাটারি ক্যাপাসিটি ৩৪০০ মিলিএম্প এর। অন্যদিকে এটারই একটু বড় ভার্সন এস১০+ এ থাকছে ৬.৪ ইঞ্চির কিউএইচডি প্লাস ডিসপ্লে, ডুয়াল সেলফই ক্যামেরা, ১২ জিবি র্যাম আর ১ টেরাবাইট স্টোরেজ। এর ব্যাটারিটিও অপেক্ষাকৃত বড় ৪১০০ মিলিএম্প এর। ফোনগুলোর দাম শুরু ৯৯৯ ডলার থেকে
বিশ্বের সেরা ৭ স্মার্টফোন তালিকায় আছে শাওমির লেটেস্ট ফ্ল্যাগশিপ মি ৯।

ফোনটিতে সিস্টেম অন চিপ হিসেবে আছে কোয়ালকম এর লেটেস্ট ফ্ল্যাগশিপ স্ন্যাপড্রাগন ৮৫৫। ৮ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্ট এ পাওয়া যাচ্ছে ফোনটি। ইন ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর এর সাথে ৬.৪ ইঞ্চির এমোলেড প্যানেল পাচ্ছেন ফোনটিতে। থাকছে ছোট্ট একটি ওয়াটারড্রপ নচ।
এর পিছনে যথাক্রমে ৪৮, ১৬ ও ১২ মেগাপিক্সেলের তিনটি ক্যামেরা ও সেলফির জন্য সামনে একটি ২০ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা রয়েছে। এর ৩৩০০ মিলিএম্প এর ব্যাটারিটি ২০ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সমর্থন করে। মি ৯ ট্রান্সপারেন্ট এডিশন নামে এটার আরেকটা ভার্সন আছে যার ব্যাক প্যানেল স্বচ্ছ কাঁচে তৈরী। এর দাম শুরু ৩০০০ চাইনিজ ইউয়ান থেকে।
সনি এক্সপেরিয়া ১

এটি সনির নতুন ফ্ল্যাগশিপ লাইনআপ এর প্রথম ফোন। বিশ্বের সেরা ১০ স্মার্টফোন তালিকায় এটিও স্থান পাবে। এটি একটি মিডিয়া ডিভাইস বলা যায়। ৬.৫ ইঞ্চির সিনেমাটিক রেশিও এর ফোরকে ওলেড ডিসপ্লে আছে ফোনটিতে। স্নাপড্রাগন ৮৫৫ চিপসেটের সাথে এতে থাকছে ৬ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজ। এর পিছনে ৩ টি ১২ মেগাপিক্সেলের সেন্সর আছে যেগুলোর ধরন যথাক্রমে নরমাল, ওয়াইড এঙ্গেল ও টেলিফটো। ৩৩০০ মিলিএম্প ব্যাটারি থাকা ফোনটির দাম শুরু ৮০০ ইউএস ডলার থেকে।
আপকামিং ১+সেভেন প্রোঃ

স্নাপড্রাগন ৮৫৫ চিপসেটের সাথে পপআপ মেকানিক্যাল ক্যামেরা নিয়ে আসছে ।
মোবাইল ফোনে উন্নত মানের ক্যামেরার জন্য ওয়ানপ্লাস স্মার্টফোনের সুনাম আছে। আর তারই ধারাবাহিকতায় আরও ভালো পারফরম্যান্স দিতে বাজারে আসছে ওয়ান প্লাস ৭ এবং ৭ প্রো মডেলের দুটি ফোন।
ওয়ান প্লাসের এটিই প্রথম ত্রিপল ক্যামেরা সেট আপের স্মার্টফোন। আর এতে সেলফি ক্যামেরায় থাকছে ট্রেন্ডি পপআপ সেলফি ক্যামেরা।
ডিসপ্লেঃ ওএলইডি ডিসপ্লের ওয়ান প্লাস পাওয়া যাবে স্টাইলিশ কার্ভ বডিতে। তবে ৬.৬৭ ইঞ্চির ৭প্রো-তে থাকছে সুপার অপটিক ডিসপ্লে। আর নচবিহীন লার্জ ভিউর ডিসপ্লেতে থাকছে ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার।
হার্ডওয়্যারঃএর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে থাকছে সবচেয়ে দ্রুতগতির ৮৫৫ স্ন্যাপড্রাগন প্রসেসর। হেব্বি ইউজারদের চাপ সামলাতে ৮জিবি র্যামের সাথে থাকছে ২৫৬জিবির লার্জ ইন্টারনাল মেমোরি।
সফটওয়্যারঃঅ্যান্ড্রয়েড ভার্সন ৯পাই অপারেটিং সিস্টেমের সাথে যুক্ত থাকছে ওয়ানপ্লাসের নিজস্ব ৯.৫ অক্সিজেন অপারেটিং সিস্টেম।
ক্যামেরাঃ ওয়ানপ্লাস ৭ প্রো’র ত্রিপল ক্যামেরা সেট আপে থাকছে ৪৫ মেগাপিক্সেলের প্রাইমারি লেন্স, সাথে ১৬ এবং ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা লেন্স। ফোনটিতে সনির’র আইএমএক্স ৫৮৬ প্রাইমারি সেন্সর ব্যবহার করা হবে।
গুগল পিক্সেল ৩ এক্সএল

খুব বেশী কিছু বলার নেই একে নিয়ে…সাধারন লুকের মধ্যে অসাধারন কিছু ধারণ করানোই বুঝি গুগলের কাজ।
গুগলের কম্পিউটেশনাল ফটোগ্রাফির বদৌলতে পিক্সেল ফোনগুলো গ্রাহকদের পছন্দের শীর্ষে থাকে। তাই বিশ্বের সেরা স্মার্টফোন তালিকায় এটি থাকবেই। গুগলের লেটেস্ট ফ্ল্যাগশিপ পিক্সেল ৩ এক্সএল বরাবরের মতোই চমৎকার ছবি তুলে।
আইফোন ১০এস ও ১০এস ম্যাক্স

আইফোন বাজারের অন্য ফ্ল্যাগশিপ ফোনের মত ফিচারে ঠাসা ফোন না বের করলেও আগের বছর রিলিজ হওয়া আইফোন টেন থেকে প্রসেসর বাদে খুব বেশি কোনো উন্নয়ন না থাকা সত্বেও ফিচার ও চাকচিক্য দিয়ে অন্য যে কোনো স্মার্টফোন থেকে এটি এগিয়ে আছে। ফলে বিশ্বের সেরা ১০ স্মার্টফোন তালিকায় এটাকে রাখতেই হবে! ৫.৮ ইঞ্চি সাইজের অ্যাপলের বিখ্যাত সুপার রেটিনা ডিসপ্লে নিয়ে এসেছে আইফোন টেনএস, যা একই সাথে এইচডিআর ও থ্রিডি টাচ সাপোর্টেড। এর সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হচ্ছে এ১২ বায়োনিক চিপ যা লেটেস্ট এন্ড্রয়েড ফ্ল্যাগশিপ গুলোতে ব্যবহৃত স্ন্যাপড্রাগন ৮৪৫ চিপ থেকে বেশি শক্তিশালী।
৪ জিবি র্যাম ও ৫১২ জিবি পর্যন্ত স্টোরেজ অপশন আছে আইফোন টেনএস এ। সাথে প্রথমবারের মত কোন অ্যাপল ফোনে ডুয়াল সিম ক্যাপাবিলিটিও নিয়ে আসছে এটি। স্টেইনলেস স্টিল ফ্রেম ও গ্লাস-ফিনিশ বডির পিছনের দিকে রয়েছে ডুয়াল ক্যামেরা সেটআপ। পাশাপাশি এটি আইপি ৬৮ রেটেড পানিরোধী বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন। রয়েছে আগের আইফোনগুলো থেকে অধিক ব্যাটারি ক্যাপাসিটি। সাথে ওয়্যারলেস চার্জিং তো আছেই। অন্যদিকে একই স্পেসিফিকেশন নিয়ে আসা টেনএস ম্যাক্স এর ব্যাটারি ক্যাপাসিটি একটু বেশি আর ডিসপ্লে সাইজ বাড়িয়ে ৬.৫ ইঞ্চি করা হয়েছে। সাথে ফেস আইডি রিকগনিশন তো আছেই।
কয়েকটি হালের ফ্ল্যাগশিপ ফোনের আলাপ আজকে এই পর্যন্তই।
নেক্সট এ বাজেট ফোনের তালিকা নিয়ে আসছি।
ততদিন সাথেই থাকুন বিজ্ঞানবর্তিকার