মানসিক অবকাশ প্রয়োজন? সমুদ্রতীর আপনার জন্য সেরা অপশন

ইঙ্গিতে তার শিখায় সাগর-

অন্তর হোক রত্ন-আকর;

নদীর কাছে শিক্ষা পেলাম

আপন বেগে চলতে।

 

 

কখনো কি এই প্রশ্ন আপনার মনে জেগেছে, কক্সবাজার, কুয়াকাটা বা নিঝুমদ্বীপে পর্যটক কেন এতো বেশী আসে? অন্যভাবে বলা যায়, সাগরের তীরেই কেন মানুষ বেশী ঘুরতে যায়?

তবে শুধু শখের বসে ঘুরাঘুরির জন্যই নয়,  সাগরের তীর মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যেও বেশ উপকারী। সেজন্যই এসব জায়গায় পর্যটক তুলনামূলক বেশী।  আর আজকে আলোচনা করব এর পেছনের কারণগুলো নিয়ে।

সমুদ্রতীরে কেন যাবো?

শুধুমাত্র পানি দর্শন আপনাকে সুখী ও স্বাস্থ্যবান করতে যথেষ্ট। না, এটা আমার কথা নয়, এটি বলেছে  European Centre for Environment and Human Health। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, সাগর, নদী, ঝর্ণা প্রভৃত স্থানে মানুষ বেশী স্বাস্থ্যকর অনুভব করে এবং যতবেশী পানি থাকে, ফলাফল তত বেশী পজিটিভ হয়। অর্থ্যাৎ, যেই স্থানে বেশী পানি থাকে, পর্যটকগণ সেখানে বেশী যাতায়ত করেন, কারণ তা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে বেশী প্রভাব ফেলে। মূলত এই গবেষণাটি ছিল পুর্বের-  “মানুষের স্বাস্থ্যের উপর সবুজ রং বা প্রকৃতির প্রভাব” নিয়ে করা গবেষণার আপডেট ভার্সন, যেখানে নতুনভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর পানির প্রভাব যুক্ত করা হয়। এবং এতে দেখা যায়, সবুজ রং বা প্রাকৃতিক দৃশ্যের চেয়ে নীল সাগরকে মানুষ বেশী প্রাধান্য দিচ্ছে।

সাধারণত ছবিতে পানি বা বিচের ছবি দেখেলেও আমাদের মধ্যে অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে। তাহলে সরাসরি যদি সেসব দৃশ্য দেখা যায়, কেমন লাগবে?

আপনি হয়ত ভেবে নিয়েছেন সেটা নিশ্চয়  আরো ভালো হবে? হ্যা, গবেষণাও ওকই কথা বলছে।

নিউজিল্যান্ডের সী বীচে এরকম একটি গবেষণা করা হয়েছিলো যেখানে পানির আয়তনের সাথে মানুষের মানসিক আনন্দের সম্পর্ক খোজা হয়েছে। যার ফল অনুযায়ী দেখা যায়, যত বেশী পানিওয়ালা বীচ, সেখানে মানুষের আনন্দটা বেশী। এছাড়া সমুদ্রের নানা প্রাণী এই ভালোলাগাকে বাড়ীয়ে দিবে আরো কয়েকগুণ।

এছাড়া আবাসস্থল হিসেবে জলরাশীর পাশে বিশাল নীল আকাশকে মানুষ বেশী প্রাধান্য দিয়ে থাকে। যার ফলে এসব বীচ অঞ্চলে দখলবাজ আবাসন ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেশী।

তবে সবকচিছু ছাড়িয়ে যে ব্যপারটা মূখ্য, তাহল মানসিক প্রশান্তি, যা সমুদ্র তীর আপনাকে সবচেয়ে বেশী ভালভাবে দিতে পারে।

তাই যদি চান মানসিক শান্তি, সমুদ্র তীরের জলরাশী আপনার বিশ্বস্ত সঙ্গী। তাইতো প্রেমিক মনও গেয়ে উঠে—

সাগরের তীর থেকে মিষ্টি কিছু হাওয়া এনে

তোমার কপালে ছোঁয়াবো গো

ভাবি মনে মনে

অবকাশ যাপনে সমুদ্রতীর, ডাক্তারের মতামতঃ

তো, পানি আপনাকে মানসিক প্রশান্তি দেয়, কিন্তু এটা কি জানেন পানি একইসাথে স্বাস্থ্যকরও?

সবুজ বন আর নীল জলরাশীর তুলনায় ২০১৫ সালের এক রিসার্চে দেখা যায়, শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও জলরাশী দর্শন মানুষকে বেশী সুবিধা দেয়।

এটাও সত্য যে মানসিক স্বাস্থ্য মানুষের জীবনে একটা বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। এজন্য আপনার চারপাশের পরিবেশ আপনার দৈনন্দিন জীবনে সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলে। আপনার বাসার আশপাশের পরিবেশ যদি সুন্দর হয়, তাহলে আপনার কর্মক্ষেত্রেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং আপনি বেশী কাজ করতে পারবেন।

সেইসাথে মানসিক অবকাশ হিসেবেও যদি একটি ভালো জায়গায় যাওয়া যায়, সেটাও আপনার পবর্তী জীবনে বড় প্রভাব রাখতে পারে। আর সে স্থান যদি হয় কোন সমুদ্রতীর- কক্সবাজার, কুয়াকাটা, সেন্ট মার্টিন, নিঝুমদ্বীপ তাহলেতো সোনায় সোহাগা!

তাই, বেশী বেশী সমুদ্র ভ্রমণ করুন, নিজে সুস্থ্য থাকুন, আশপাশের পরিবেশ সুস্থ্য রাখুন ।

2 Comments

  1. kamruzzaman Emon

    সাগর আমার অনেক প্রিয়। কিন্তু তার থেকে বেশি ভালো লাগে পাহাড় আর পাহাড়ি নদি। কক্সবাজার এর চাইতে বান্দরবানের পাহাড় ঘেরা সাঙ্গু নদির তীর আমার বেশি প্রিয় 😀

    যাই হোক, চমৎকার একটা বিষয় নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ।

    • Muhammod Mahdi Hasan Saikot

      আপ্নাকেও ধন্যবাদ। সাথেই থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>