অন্ধ মানুষ কি স্বপ্ন দেখে?
স্বপ্ন মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় রহস্য। এখনো পর্যন্ত কেউ জানতে পারল না কিভাবে এবং কোথা থেকে এসব গল্পগুলো আমাদের ঘুমের মাঝে স্বপ্ন আকারে চলে আসে। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল যে বিভিন্ন ধরনের মানুষ বিভিন্ন ধরনের স্বপ্ন দেখে। সেই কারণেই হয়তো আপনাদের মনে এই প্রশ্নটি আসতেই পারে যে অন্ধ মানুষেরাও কি স্বপ্ন দেখে? দেখলেই বা কেমন স্বপ্ন দেখে?
স্বপ্ন আমাদের অভিজ্ঞতা এবং আবেগের স্মৃতি। অন্ধ মানুষের স্বপ্ন দেখার পদ্ধতি কল্পনা করা জটিল হলেও শুধু এইটুকু জেনে রাখুন তারা তাদের ঘ্রাণশক্তি, টেস্ট, অনুভূতি ইত্যাদি দিয়ে স্বপ্ন দেখে যা তাদের visual দেখার অভাবটার কিছুটা হলেও পূরণ করে। অবিশ্বাস্য হলেও এভাবেই একটি অন্ধ মানুষ স্বপ্ন দেখে। জন্মগত দৃষ্টি সম্পন্ন মানুষ দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে। তবে তিনিও visual স্বপ্ন নাও দেখতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তিনি শুধুমাত্র তার অনুভূতি শক্তিটাকে কাজে লাগাতে পারেন। স্বপ্ন দেখার সময় আমরা পুরনো স্মৃতিকে মনে করার চেষ্টা করি। আর একজন অন্ধ মানুষ পুরনো মিউজিক বা সাউন্ড কে মনে করে যা কিনা তার জন্য meaningful হয়। অর্থাৎ সাউন্ড বা মিউজিকের সাথে তাদের বাস্তবটা কল্পিত হয় যা আমাদেরকে অবাক করলেও তাদের কাছে খুবই সহজ।
কি হবে যদি আপনি আপনার নিঃশ্বাস কে দীর্ঘ সময় ধরে রাখেন?
স্কুলের Biology বইয়ে আমরা সবাই পড়েছি যে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া আমাদের দেহের এমন একটি প্রক্রিয়া যেটা অবচেতনভাবে ঘটতে থাকে। সহজভাবে বলতে গেলে কাউকে কখনো নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস নেয়া বোঝাতে হয় না। মানুষ জন্মানোর পরে তা নিজে থেকে শিখে যায়। মানুষের মধ্যেই এরকম আরো অনেক ধরনের প্রতিফলন দেখা যায়। যেমন মুখের থেকে লালা স্রোত বেরিয়ে আসা কিংবা গরম বা ঠাণ্ডা অনুভব করা ইত্যাদি ইত্যাদি…!!
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় আপনি সবসময় গরম ইস্ত্রি থেকে আপনার হাত বা দেহের অন্য কোনো অঙ্গ কে দূরে রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু যদি কৌতূহল হয়ে কিংবা ভুল করে অবচেতন মনে হাত দিয়ে ফেলেন তাহলে কি হবে? নিশ্চয়ই আর আলাদাভাবে বলতে হবে না যে তখন কি হবে। তেমনি যদি আপনি কিছুক্ষণের জন্য শ্বাস নিতে না পারেন তাহলে বুঝবেন যে সেটা কতটা ভয়ংকর। আবার যদি আপনি আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস কে কন্ট্রোল করতে চান তাহলে এরকম ভয়ানক অনুভূতি হবে।
যদি আপনি নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা বোধ করেন তাহলে আপনার পছন্দের টিভি শো বা খেলা দেখতে পারেন। আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি যে আপনার শরীরের শ্বাস-প্রশ্বাস আবার আগের মত স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এর কারন, আমাদের মস্তিষ্ক আমাদের দেহের সবকিছুকে একসাথে কন্ট্রোল করতে পারলেও সবকিছুকে একরকমভাবে কন্ট্রোল করতে পারেনা। আমাদের মস্তিষ্ক তখন টি.ভি দেখাটাকেই বেশি গুরুত্তপূর্ণ মনে করবে। কারন, আপনি তখন টি.ভি দেখাটাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করবেন। তাই, নিঃশ্বাস নেয়ার বেপারটায় মস্তিস্কের পুরোপুরি নজর থাকবেনা।
প্রতিদিন আমাদের শরীরের সকল ধরনের ক্রিয়া প্রক্রিয়ার জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তাহলে যদি আপনারা কেউ নিঃশ্বাস অনেকক্ষণ ধরে বন্ধ রাখতে চান তাহলে তাদেরকে পানির গভীরে সাঁতার কাটার অভ্যাস করতে হবে। তাছাড়া নিজের হাত দিয়ে অনেকক্ষণ ধরে নিঃশ্বাস বন্ধ করে রাখলে অসুবিধা হতে পারে। যেমন অনেকক্ষণ ধরে অক্সিজেন গ্রহণ না করলে আমাদের মস্তিষ্ক হঠাৎ করেই কাজ করা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিবে। ফলে আপনি আপনার নিজের উপর থেকে নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবেন, এমনকি অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন।
কিন্তু আবার অক্সিজেন গ্রহণ করলে আগের অবস্থায় ফিরে আসা যায়। কিন্তু কখনোই হাত দিয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ করার চেষ্টা করবেন না আর যদি করেও থাকেন তাহলে কিন্তু আমি দায়ী থাকবো না।
One Comment
কি হবে যদি। পর্ব-২ | বিজ্ঞানবর্তিকা
[…] পূর্ববর্তী পর্বঃ […]