রং কেন এতো রং! পর্ব-২

রংয়ের আপাত একটি উৎসের কথা আমরা জানতে পেরেছি। সেটি হচ্ছে দৃশ্যমান আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ভাগ হয়ে এক একটি দৈর্ঘ্যের জন্যে একেক রকম রং এর উৎপত্তি দেখা যায়। অর্থাৎ বলা যায় আলোক শক্তি তথা সূর্য রংয়ের আপাত একটি উৎস।

যে কোনো বস্তু হতে যদি আলো না এসে আমাদের চোখে না পড়ে তাহলে কিন্তু আমরা দেখতে পাব না, আর এই কারণেই আমরা অন্ধকারে একদম দেখতে পাই না।

রেটিনায় দুটি সংবেদী কোষ আছে- রড এবং কোণ। রেটিনার কোণ কোষ রঙ বুঝতে সাহায্য করে আর রডস্ কম আলোতে দেখতে সাহায্য করে। এই রড এবং কোণ কোষ আলোর ফোটনকে ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালে পরিণত করে, এরপর তা অপটিক নার্ভের মধ্য দিয়ে আমাদের মস্তিষ্কে পৌঁছে দেয়। মস্তিষ্কে এই ইলক্ট্রিক্যাল সিগন্যাল ইন্টারপ্রিটেড হয়ে উল্টো ইমেজ হয়ে যায় এবং সেটাই আমরা দেখি। আর এই প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত দ্রুত ঘটে, যা আমরা বুঝতেই পারি না।

এখন প্রশ্ন হলো, সূর্য এ আলো তৈরী করে কিভাবে?
সূর্যের মূল উপাদান হলো হাইড্রোজেন গ্যাস। সূর্যর প্রায় ৭৩ ভাগ হাইড্রোজেন গ্যাসে ভর্তি এবং ২৫ ভাগ হিলিয়ামে ভরা। আর বাকি ২ ভাগে রয়েছে অক্সিজেন, নিয়ন, কার্বন এবং আয়রন। সূর্যের মধ্যে প্রতিনিয়ত চলছে এক ভয়াবহ রকমের ঐক্য প্রক্রিয়া (অর্থাৎ H-গুলো প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে, তারা সবাই He হয়ে যাবে) তথা বিক্রিয়া। হাইড্রোজেন থেকে হিলিয়াম তৈরির প্রক্রিয়া। আলহামদুলিল্লাহ। এখানে একটি দারুণ ব্যাপার ঘটে। ধরুন, এক কিলোগ্রাম হাইড্রোজেনের নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়ায় প্রায় ৯৯২ গ্রামের মতো হিলিয়াম তৈরি হচ্ছে। তাহলে বাকি আটগ্রাম গেলো কই?

আসলে লাকড়ি জ্বালাবার পর কিন্তু ছাই আর লাকড়ির ভর ডিফারেন্ট হয়ে যায়। বিনিময়ে আমরা আগুন পাই। মানে তাপ এবং আলো। সূর্য ও বাকি আট গ্রাম দিয়ে আলো ও তাপ উৎপন্ন করছে। আপাতত এখানে এ টুক জানলেই হবে।আর সে আলো মহাকাশের কয়েকটি স্তর পেরিয়ে আমাদের সুজলা-সুফলা বসুন্ধরায় এসে অবতীর্ণ হচ্ছে।

‘এ রং যদি… এক রং হয়, তবে কেমন হতো, তুমি বলোতো…’ ‘না…না…তুমি বলো…’

সত্যিই তো? পৃথিবীতে আমরা যত রং দেখি, তার সব যদি হতো সবুজ! তাহলে কি হতো?এ ব্যাপারটা অনুধাবন করতে নিকষকালো অন্ধকার কোন রুমে, চোখ মেলে দেয়ালে চেয়ে থাকলেই চলবে…।সব কালো আর কালো। দেয়াল বলতে কিছু নেই। নেই কোন আসবাবপত্র! তবে শুধুমাত্র হাত বাড়ালেই এসবের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়।
আদত পৃথিবীটা আকৃতি এবং রংয়ের (Shape & Colour) ক্রমাগত রূপান্তরিত (Variation) একটি অবস্থা! শেফ সমূহ কিন্তু জ্যামিতি বইয়ের বৃত্ত, আয়তাকার, বর্গের মতো নয়, বরং ত্রি-মাত্রিক। আর সে কারণেই প্রতিটি বস্তুকে আমরা আলাদা করে দেখতে পাই। নইলে সম্মুখের মানুষটিকে দেখতাম আর্টপেপারে আঁকা কোন চিত্রের মতো।

(….চলবে)

Comments are closed.